ওজন বেড়ে যাওয়া এক বড়ো সমস্যা। শরীরের ওজন কমানোর জন্য মানুষ জিমে যায় , বিভিন্ন ওষুধও খেয়ে থাকে। আবার কেউ ডায়েটের নামে না খেয়েও থাকে। এতে সকলেরই ধারণা ওজন কমে যায়। কিন্তু খালি পেতে থাকলে বা কম খেলে শরীরে নানারকম রোগ বাসা বাঁধে। ডায়েটের মধ্যে মেনুতে রাখুন ডিম। অমলেট বা পোচ নয় , সেদ্ধ ডিম ওজন ঝরাতে অনেক সাহায্য করে।
ডিম সত্যিই উপকারী। বহু উপকারীতা রয়েছে ডিমের মধ্যে। তবে ভাজা ডিম খেলে কোনো উপকার নেই। বিশেষ করে যাঁরা ওজন কমাতে চান তাঁদের কাছে সেদ্ধ ডিম উপকারী। এছাড়াও সেদ্ধ ডিম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। জেনে নিন দিনে কটা করে ডিম খাবেন আর ডিমের কী কী গুণাগুণ রয়েছে -
১. উপকারী ফ্যাট :
সেদ্ধ ডিমে রয়েছে উপকারী ফ্যাট। শরীরের পক্ষে এটি অত্যন্ত ভালো। শরীরকে শীতের সময় উষ্ণ রাখে।
২. মজবুত হাড় :
ডিমে রয়েছে ভিটামিন ডি যা হাড়কে শক্তিশালী করে। অন্যদিকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়।
৩. মস্তিষ্ক ও স্বাস্থ্যের উপকারিতা :
ডিমে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড হার্টকে রক্ষা করে। ডিমে থাকা কোলিন নামক উপাদান সেল মেমব্রেন তৈরিতে সাহায্য করে। এছাড়াও মস্তিষ্কে বার্তা পোঁছতে সাহায্য করে এমন অণু তৈরিতেও কার্যকারী ভূমিকা নেয় ডিম।
৪. ওজন ঝরাতে :
ডিমে আছে শরীর গঠনের জন্য জরুরি অ্যামাইনো অ্যাসিড। ডিমে ক্যালোরিও থাকে অত্যন্ত কম। তাই অনেকগুলি ডিম খেলেও ওজন বিশেষ বাড়ে না।
৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা :
শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ডিম দারুণ কার্যকরী। সর্দি-কাশিতে কিংবা জ্বরের জন্য রোজ ডিম খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। কারণ, ডিমে থাকা জিঙ্ক শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তোলে। এছাড়া ডিমে রয়েছে ভিটামিন বি৬, বি১২। এই উপাদানগুলিও দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বৃদ্ধি ঘটাতে সক্ষম।
অনেকেই ভাবেন, ডিম খেলে কোলেস্টেরল বাড়ে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি ডিমে থাকে প্রায় ১৮০ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল। বেশিরভাগ কোলেস্টেরলই থাকে কুসুমে। তাই অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে কুসুম বাদ দিয়ে ডিম খাওয়া যেতে পারে। ডিমের সাদা অংশ খেলে কোনো সমস্যা নেই। পুষ্টিবিদদের মতে, সপ্তাহে দুটি ডিমের কুসুম খাওয়াই যায়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, একজন সুস্থ ব্যক্তি দিনে দুটো ডিম খেতে পারেন। সপ্তাহে খাওয়া যায় ছটি ডিম।
শিশুদের অবশ্যই ডিম খাওয়া দরকার। কারণ , ডিমের সাদা অংশে থাকে প্রচুর প্রোটিন। কুসুমে থাকে ফ্যাট, আয়রন, ভিটামিন। বাচ্চার দৈহিক বিকাশে, হাড় শক্ত করতে ও মেধার বিকাশে যা খুবই দরকারি। ডায়াবেটিসের রোগীও ক্যালোরি ঠিক রেখে ডিম খেতে পারেন। চিকিৎসকরা বলেন, ডিমে থাকে ১৪৩ ক্যালোরি এনার্জি। কার্বোহাইড্রেটের মাত্রা ০.৭২ গ্রাম। প্রোটিন ১২.৫৬ গ্রাম। ফ্যাট ৯.৫১ গ্রাম। ফসফরাস ১৯৮ মিলিগ্রাম। পটাশিয়াম ১৩৮ মিলিগ্রাম। জিঙ্ক ১.২৯ মিলিগ্রাম।
অ্যানিমিয়া আক্রান্ত মানুষদের অবশ্যই একটি করে ডিম খেতে হবে। কারণ ডিমে ভালো মাত্রায় আয়রন থাকে। এছাড়াও ডিমে রয়েছে ফসফরাস। এই উপাদানটি একদিকে যেমন হাড় মজবুত করে, তেমনই আবার দাঁতও মজবুত করতে সাহায্য করে।