মাথায় খুশকির কারণ হিসেবে সাধারণত ধরে নেয়া হয় যে, শুকনা চামড়া। কিন্তু বেশিরভাগ এডাল্ট মানুষের মাথায় খুশকির কারণ এক ধরণের ফাংগাস যা মাথার তেল খায়।
এই ফাংগাসগুলা নর্মাল ফাংগাস। এমন অনেক পরজীবী আমাদের শরীরে থাকে।
মাথায় খুশকির কারণ এই লজিকে দেখলে, কোনভাবে আপনার মাথায় তেল ও পরজীবী ছত্রাকের ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। এই ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে হবে।
সাধারণ এন্টি-ডেন্ড্রাফ শ্যাম্পু মাথার তেল কমিয়ে ফেলে। স্বাভাবিক ভাবেই তাদের লজিক হলো যেহেতু তেল বেড়েছে তাই ফাংগাস বেড়েছে, অতএব তেল কমানোই সমাধান। খুশকি মানেই আপনার চুলের বিপদ। আপনার চুলের সর্বনাশ করাই এদের ধর্ম। খুশকি সকলের কাছেই ভীষণ আতঙ্কের। শুধু মাথার তৈলাক্ত তালুই নয়, যাদের শুষ্ক তালু, তারাও এর শিকার হতে পারেন। শীত কালে খুশকির প্রকোপ বেড়ে যায়। এর অন্যতম কারণ, গরম পানি দিয়ে গোসল এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি দিয়ে মাথা না ধোওয়া।
চুল পড়া, চুলের রুক্ষ হয়ে যাওয়া, ইচি স্ক্যাল্প, স্ক্যাল্প ইনফেকশন এই সব রকম সমস্যা নিয়ে এরা আপনার রাতের ঘুম কেড়ে নেয়।
শীতের সময় ঘরোয়া পদ্ধতিতে কী করে খুশকি দূর করবেন তা জানানো হয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে।
জবা ফুলের পাতা খুব কার্যকর খুশকি নামক ফাঙ্গাসটির গ্রোথ কম করতে।
উপকরণ:
১০-১৫টি জবাফুলের পাতা
পদ্ধতি:
১০-১৫টি জবা ফুলের পাতা বেটে পেস্ট বানিয়ে নিন। এবার পেস্টটি আপনার স্ক্যাল্পে লাগিয়ে ২০-২৫মিনিট অপেক্ষা করুন। পরে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ১দিন কিন্তু যথেষ্ট এই উপাদানটি খুশকি দূর করতে।
মেথি চুলের নানা সমস্যার মত খুশকি দূর করার ক্ষেত্রেও খুবই উপকারী। এতেও অ্যান্টি-ফাঙ্গাল বা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান আছে যা খুব ভালো ভাবেই খুশকি দূর করে।
উপকরণ:
২-৩চামচ মেথি
১-২চামচ নারকেল তেল
পদ্ধতি:
২-৩চামচ মেথি আগের দিন রাতে ভিজিয়ে সকালে মিক্সিতে বেটে পেস্ট বানিয়ে নিন।ওতে ১-২ চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে ভালো করে স্ক্যাল্পে লাগান। ৩০মিনিট মত রেখে প্রথমে জল দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করুন তারপর মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করুন মাথা ধোয়ার জন্য। প্রতি সপ্তাহে একবার করে মেথি প্রয়োগ করুন।
শ্যাম্পু করার আগে চুল ভিজিয়ে নিন এবং অল্প লবণ ঘষুন।
টক দইয়ের সঙ্গে পাতিলেবুর রস ও নিমপাতার রস মিশিয়ে মাথায় মেখে আধ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করুন।
পেঁয়াজের রস, ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে অর্ধেক পাতিলেবুর রস মিশিয়ে মাথায় দিয়ে এক ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করুন।
ভালো অর্গানিক শ্যাম্পু ব্যবহার করা প্রয়োজন। রোজমেরি, সেইজ, জজোবা, টি ট্রি, স্পিংকার্ড এসেনশিয়াল তেল আছে এমন শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত। এটি স্কিন মেটাবলিজম বাড়ায়, এবং স্ট্রং এন্টি ফাংগাল জিনিসও আছে এতে। মাথার তেল উৎপাদনে ভারসাম্য আনে। বাজে কিছু রাসায়নিক মুক্ত।
খুশকির সমস্যা দূর করতে জলপাই তেল বা অলিভ অয়েলের ব্যবহার নানা দেশে খুবই জনপ্রিয়। নিয়মিত জলপাই তেল ব্যবহারে খুশকি কমে। কারণ জলপাই তেল প্রাকৃতিকভাবেই ভালো ময়েশ্চারাইজার এবং ক্লিনজার হিসেবে কাজ করে বা ত্বকের আর্দ্রতা ও পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করে।
হালকা পানিতে মাথা ভিজিয়ে নিয়ে খানিকটা বেকিং সোডা পুরো মাথায় মেখে নিন। ভালো করে ঘষে ঘষে শ্যাম্পু না করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটা মাথার খুলিতে থাকা ছত্রাক দমন করে প্রথমদিকে ত্বককে অতিরিক্ত শুষ্ক করে ফেলতে পারে। কিন্তু অল্পদিনেই ত্বকে স্বাভাবিক তৈলাক্ত অবস্থা ফিরে আসবে। কিন্তু এ সময়ে আপনি খুশকি থেকে মুক্তি পাবেন।