ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের জেরে ব্যাহত পরিষেবা

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

গত আর্থিক বর্ষে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সিতারামান আগেই ঘোষণা করেছিলেন দেশের দুটি রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাঙ্ক বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হবে, বেসরকারিকরণ করা হবে রাষ্ট্রয়াত্ত বিমা সংস্থার। ঘোষণার পরেই মাথাই হাত ব্যাঙ্ক কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের। আমজনতার মনে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে ব্যাঙ্কের ভরাডুবি হলে তাদের পরিশ্রমে জমানো টাকার কি হবে? কিছু দিন আগেই প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন ব্যাঙ্ক দেওলিয়া হলে সাধারণ মানুষের টাকা মার পড়বে না। কিন্তু তাতেও শুরাহা হয় নি। কেন্দ্র সরকারের লক্ষ্য এখন শীতকালীন অধিবেশনের মধ্যেই ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণ বিল পাশ করিয়ে নেওয়া। যদিও সেই বিলে এখনও শিলমোহর পরেনি, এদিকে হাতে আর মাত্র কিছু দিন কারণ এই বছরের মতো ২৩শে ডিসেম্বর শীতকালীন অধিবেশন শেষ। 

ইতিমধ্যেই ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণ বন্ধের দাবিতে মাঠে নেমেছেন ব্যাঙ্ক কর্মীরা। প্রতিবাদে ১৬ এবং ১৭ই ডিসেম্বর ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের ডাক দেয় ব্যাঙ্ক কর্মীদের ইউনিয়ন ইউএফবিইউ। ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের প্রতিবাদে ডাকা ধর্মঘটের একদিন পূর্ণ হয়েছে। প্রথম দিনেই ব্যাহত হয়েছে আর্থিক পরিষেবা, বন্ধ আছে বহু এটিম। গত বুধবার কেন্দ্রীয় সরকারের ডাকা বৈঠকে কোন সমাধান না হওয়াই এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন তারা। সব মিলিয়ে চরম ভোগান্তির মুখে সাধারণ মানুষ। কিছু এটিম চালু থাকলেও তাতে লম্বা লাইন দেখা গেছে। বাদল অধিবেশনেই বিমা সংস্থা বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার বিল পাশ করিয়েছিল কেন্দ্র, আর এবার কেন্দ্রের লক্ষ্য ব্যাঙ্কিং লজ অ্যামেডম্যান্ট বিল পাশ করানো। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া সরাসরি ধর্মঘটে না নামলেও এদিন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন কর্মীরা বলে জানা গেছে। ব্যাঙ্ক কর্মীদের পাশাপাশি বিমা সংস্থার কর্মীরাও বিক্ষোভ দেখিয়েছে বলে দাবি করেছেন, ফেডারেশন অফ জেনারেল ইনশিয়োরেন্স এমপ্লয়িজের সম্পাদক দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাঙ্ক এবং বোমা সংস্থা ছাড়াও বিক্ষোভ দেখিয়েছেন রাষ্ট্রয়াত্ত টেলিকম সংস্থা বিএসএনএল এর কর্মীরাও। ব্যাঙ্কের অফিসার থেকে শুরু করে কর্মীদের অভিযোগ রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাঙ্ক বরাবরই দেশের আর্থিক উন্নতিতে শামিল হয়েছে। সরকারের একের পর এক প্রকল্প গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিয়েছে তারা। দেশের কৃষক থেকে শুরু করে খুদ্র ব্যাবসায়ী প্রত্যেকেই উপকৃত হয়েছে রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাঙ্কের কারণে। মানুষ তাদের ওপর ভরসা করেন, এমনকি রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাঙ্কে তারা নিশ্চিন্তে তাদের সঞ্ছিত অর্থ রাখতে পারেন। সুতরাং রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাঙ্ক বেসরকারি হাতে তুলে দিলে মানুষ অসহায় হয়ে পড়বে। আইবকের সাধারণ সম্পাদক সৌম্য দত্ত জানান, “ সরকার যদি তাদের নিজেদের মতে অনড় থাকেন তাহলে প্রয়োজন হলে দীর্ঘ ধর্মঘটের পথ অবলম্বন করতে পাড়ি আমরা”। অফিসারদের সংগঠন আইবকের দাবি, “এদিন ব্যাঙ্কে টাকা তোলা বা জমা দেওয়ার কাজ বন্ধ ছিল। আর তার সাথে চেক ক্লিয়ারিং সহ যাবতীয় কাজ বন্ধ ছিল”। 

সামনেই বড়দিন নতুন বছর চলছে বিয়ের মরশুম এই পরিস্থিতিতে ভোগান্তির শেষ নেই সাধারণ মানুষের। ২০১৬ সালে রাতারাতি ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নয়ত বাতিলের সিদ্ধান্তেও সমস্যার মুখে পড়েছিল আমজনতা। গোটা দেশের মতো রাজ্যেও সরকারি এবং বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় কয়েক হাজার এটিম এবং ব্যাঙ্কের শাখা বন্ধ ছিল যাতে সাধারণ ভাবেই সমস্যার মুখে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Sagarika Chakraborty

Related News