"অধিকার পৌঁছে দেবো কিন্তু রাজনীতিতে ছাড়বো না"-বাপি ঘোষ

banner

#শ্যামপুকুর:

পুর নির্বাচনের আগে আশেপাশে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের রমরমা, তারই মধ্যে শ্যামপুকুর বিধানসভা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী বাপি ঘোষ এর সাথে মুখোমুখি সাক্ষাতের সুযোগ হয়, সেই সুযোগের মাধ্যমে জানা যায় ওনার রাজনৈতিক জীবনের কাহিনী। 
প্রয়াত জননেতা তারক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে ওনার রাজনীতিতে আসা, তারক বন্দ্যোপাধ্যায় সংস্পর্শ থেকে তিনি অনেক ধরনের কাজ শিখেছেন, করেছেন।
তিনি তিনি প্রথম জীবনে বিজেপি হয়ে কাজ করলেও, এক সময় বিজেপির হয়ে ভোটে জয়ী হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী মমতা ব্যানার্জিকে তিনি একটি চিঠি লেখেন এবং বলেন তিনি মমতা ব্যানার্জির আদর্শ কাজ করতে চান, এবং তারপর তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছেন।
তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করার পর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সমস্ত ছেলেদেরকে নিয়ে একটি পরিবার তৈরি করি যে পরিবার সবসময় জনসাধারণের পাশে থাকে, কাজ করে এবং যারা ভবিষ্যতেও কাজ করে যাবে। দীর্ঘ পাঁচ বছর তিনি মানুষের পাশে ছিলেন এবং কাজ করে গেছেন, শুধুমাত্র জনসাধারণই নয় ঐতিহাসিক মূর্তি থেকে শুরু করে ঐতিহাসিক নির্মাণ গুলিকে নতুন ভাবে সাজিয়েছে যার ফলে বর্তমান সমাজের ছেলেমেয়েরা সেই অতীতকে এবং ইতিহাসকে মাথায় রেখে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যায়। ভবিষ্যতে যাতে বাগবাজারের মায়ের ঘাটকে আরো উন্নত করা যায় তা নিয়ে তিনি ভাবনা চিন্তা করছেন।
গত ৪/৫ বছরে বহু নেতা-নেত্রী থেকে শুরু করে কর্মীদের দলবদল করার প্রসঙ্গ আনা হলে তিনি বলেন, তার অঞ্চলের জনগণ হাসিমুখে তাকে মেনে নিয়েছেন কারণ তিনি শুধুমাত্র কাজ করার জন্য বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান দেন, এবং যথেষ্ট ভালো পরিমাণে কাজও করেছেন, তাই জনগণের মধ্যে আমাকে নিয়ে কোনো ক্ষোভ নেই। আমিন লেনা-দেনা করা দলের মধ্যে থাকতে রাজি নই, আমি নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করতে এসেছি এমনকি জনসাধারণ আমাকে মমতা ব্যানার্জির আদর্শ কাজ করার জন্য বলেছে, তাই আমি যে তার ১৫ দিনের মাথায় ওই দল ছেড়ে চলে এসেছি।
তিনি তার বিরোধীদের সাথে কিভাবে মোকাবিলা করবেন তার প্রত্যুত্তরে তিনি বলেন, "রাজনীতি করছি বিরোধিতা থাকবে, ১০০ টা লোকের মধ্যে ৭০ জন আমার আর ৩০ জন লোক বিরোধীর, বিরোধী থাকবেই এখানে কিছু করার নেই।"
যদি তিনি ভোটে জেতেন তবে কি তিনি মানুষ দেখে তাদের সাহায্য করবেন? এই প্রশ্নে তিনি বলেন "আমি যদি জিতি তখন আমি আর দলের প্রতিনিধি নয়, তখন আমি পৌর প্রতিনিধি, আমি সবার, সব রকম দলের কর্মীরা বা প্রতিনিধিরা নানা রকম সুযোগ-সুবিধা পাবেন, তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করবো না। অধিকার পৌঁছে দেবো কিন্তু রাজনীতিতে ছাড়বো না, বিরোধীদের সেই ৩০ জন লোকের মধ্যে ১০ জন কেও আমার দলে দেখতে চাই। মানুষের অধিকার কেড়ে নেব না সে যে যে দলই করুক না কেন, অধিকার অধিকার এর জায়গায় থাকবে এবং রাজনীতি রাজনীতির জায়গায় থাকবে।
তারপর বিরোধীদের তৃণমূলের ওপর দুর্নীতির অভিযোগের প্রত্যুত্তরে তিনি বলেন, "বিরোধীরা এতবার হাইকোর্টে যাচ্ছে, তারাতো দুর্নীতি নিয়ে হাইকোর্টে যেতে পারে তা যাচ্ছে না কেন? প্রথম প্রশ্ন এটা, আর দ্বিতীয় প্রশ্ন আমি টেবিলে চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি কেউ আমার সামনে বসে আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতি নিয়ে কথা বলুক, সেটা যদি করতে পারে তবে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেবো, এমনকি আমি আমার মাইনের বেশিরভাগ টাকা-পয়সা জনসাধারণের কাজে লাগাই, যেমন - কাউকে ওষুধ কিনে দিই, কাউকে টিউশনের ফি দিয়ে দি, অথবা কারো বিয়েতে টাকাও দি।" 
৭ নম্বর ওয়ার্ডের সংগঠন কেমন, তার প্রত্যুত্তরে তিনি বলেন, উনার একটি নিজস্ব সংগঠন আছে যার নামে "আমার অধিকার  -বাগবাজার" এই সংগঠনটি ১৪ বছর ধরে চলছে, তিনি মূলত থ্যালাসেমিয়া রোগী দের নিয়ে কাজ করেন, তাদের ব্লাড টেস্ট থেকে শুরু করে চিকিৎসা করা এবং ওষুধ দেওয়া পর্যন্ত সবটুকুই তিনি করেন। এমনকি বাগবাজার স্ট্রিটের ওপর তিনি প্রত্যেক বছর থ্যালাসেমিয়া টেস্ট করে ১২ টি করে মেয়ের বিয়ে দেন, যাতে থ্যালাসেমিয়া রোগ টিকে আটকানো যায়।
পাঁচ বছর আগে যে প্রতিশ্রুতি গুলো দিয়ে তিনি ক্ষমতায় এসেছিলেন সেই প্রতিশ্রুতি গুলি কতটা পূরণ করা সম্ভব হয়েছে? তা জিজ্ঞাসা করাতে তিনি বলেন প্রায় ৯৫ শতাংশ কাজ সম্পূর্ণ করা সম্ভব হয়েছে। কাজের শেষ তো হয় না কখনো যে মানুষ কাজ করে তার কখনো কাজের অভাব হয় না, পরবর্তীকালে বস্তিতে জলের কল, পয় প্রণালী ব্যবস্থা, অল্প টাকায় কমিউনিটি হল ভাড়া দেওয়ার ব্যবস্থা, মিনি বারানসী বানানোর ব্যবস্থা ইত্যাদি করার ইচ্ছা আছে।
আলাপচারিতার সবশেষে তিনি বলেন এবারের ভোটে তিনি প্রায় ৩০০০ থেকে ৪০০০ ভোটে জিতবেন এবং সেই জয় নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী।

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Sourav Chattopadhyay

Related News