রাহুল গান্ধীর উপস্থিতিতে কংগ্রেসে যোগ দিলেন কানহাইয়া কুমার। বিহারের বেগুসরাইয়ের ভূমিপুত্র কাস্তে ধানের শিষ ছেড়ে ধরলেন হাত। জেএনইউয়ের ছাত্র আন্দোলনের সময় ২০১৬ সালে প্রথম দেশের মানুষের সামনে উঠে আসেন কানহাইয়া কুমার। উপমহাদেশের বাম কর্মী সমর্থক ও বামপন্থায় বিশ্বাস করা মানুষের কাছে তিনি হয়ে উঠেছিলেন একজন রাজনৈতিক আইকন।
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়, বেগুসরাইয়ে সিপিআইয়ের টিকিটে ভোটে লড়া এখন অতীত। জল্পনার অবসান ঘটিয়ে কংগ্রেসে যোগ দিলেন প্রাক্তন বাম ছাত্রনেতা কানহাইয়া কুমার ও গুজরাটের দলিত নেতা জিগনেশ মেবানি। দিল্লিতে কংগ্রেস কার্যালয়ে রাহুল গান্ধীর উপস্থিতিতে কংগ্রেসে সামিল হলেন দুই নেতা। দেশের সবথেকে প্রাচীন দলটিতে যোগ দিয়ে কানহাইয়া বলেন, সবার মনে একটাই প্রশ্ন কেন কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া ছেড়ে আমি কংগ্রেসে যোগ দিলাম। আমি কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছি, কেননা কংগ্রেস শুধু একটা পার্টি নয়, কংগ্রেস একটা ভাবনা। দেশের সবথেকে প্রাচীন, সবথেকে গণতান্ত্রিক দল হল কংগ্রেস। আমি গণতান্ত্রিক শব্দটায় জোর দিচ্ছি, কারণ আমি একা নই, অনেকেই মনে করেন, দেশ কংগ্রেস ছাড়া বাঁচবে না।
যোগদান অনুষ্টানে কংগ্রেস নেতা সি কে বেনুগোপাল বলেন, 'যে ফ্যাসিস্ট শক্তি এই দেশ শাসন করছে তার বিরুদ্ধে এইসব তরুণ নেতাদের নিয়েই আমরা লড়ব। বাক স্বাধীনতার প্রতীক কানহাইয়া কুমার। ছাত্র নেতা হিসেবে কানহাইয়া মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। এই দুই তরুণ নেতার যোগদান কংগ্রেসকে উত্সাহ দেবে।'
বিহার বিধানসভা নির্বাচনেও তাকে দাপিয়ে প্রচার করতে দেখা যায় মহাজোটের হয়ে।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে সিপিআইয়ে যোগ দেন কানহাইয়া। ছাত্ররাজনীতির আঙ্গন থেকে বেরিয়ে তিনি সিসিআইয়ের টিকিটে লড়াই করেন বেগুসরাই থেকে। কিন্তু বিজেপি প্রার্থী তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের কাছে পরাজিত হন। কানহাইয়ার দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে সমস্যার শুরু হয় বিহার বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই। সূত্রের খবর বিহার সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক রাম নরেশ পাণ্ডের সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে মতবিরোধ তৈরি হচ্ছিল কানহাইয়ার। তাই হয়তো শেষ পর্যন্ত দলত্যাগ বলছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
কংগ্রেসে যোগ দিয়ে কানহাইয়া বলেন, রাজনীতিতে প্রায় দেড় দশক রয়েছি। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বলেছি একমাত্র ছাত্রনেতা হিসেবে। কেরল বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বলিনি। এখন বামেদের অস্তিত্ব নিয়ে কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু নেতা বদল হয় দলের নীতির উপরেই তার ভবিষ্যত ঠিক হয়। তাই বাম রাজনীতি শেষ হয়ে যায়নি।
এই মাসের শুরুর দিকে, কানহাইয়া কুমার রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন, তাঁর দলে যোগ দেওয়ার বিষয়ে তখন থেকেই জল্পনা তৈরি হয়।