#Pravati Sangbad Digital Desk:
ঈশ্বরের সর্বোচ্চো সৃষ্টি হল মানুষ। আজ সেই মানুষ যখন মান এবং হুশকে বলি দিয়ে দুর্নীতিগ্রস্থ, মুল্যবোধহীন এক স্বার্থপর কসাইয়ে পরিনত হয় তখন তার বিনাশ অনিবার্য হয়ে পরে। কালের এটাই নিয়ম। এই নিয়মকে সামনে রেখে ঈশ্বর বা মহাকাল যখন সেই কসাইকে বধ করার জন্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। সর্বাগ্রে তার বিচার ও বুদ্ধিকে লোপ পাইয়ে দেয়, জাগিয়ে তোলে তার অহংকার ও দম্ভকে তখন শুরু হয় মহাকালের প্রলয়ের মাঝে এক ভয়ঙ্কর যুদ্ধ। সেই অশুভরূপী কসাই বা দানবের মৃত্যু বা বধের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় শুভ শক্তির জয়গান। যার শেষ পরিনতি হিসেবে রচিত হয় এক চিরস্থায়ী শান্তি। মানুষ্যতের জয়গানের মধ্যে দিয়ে শঙ্খনিনাদে দিক থেকে দিগন্তে ধ্বনিত হয় এই শান্তির বার্তা। এটাই হল জীবনের শ্রেষ্ঠতম সঙ্গীত ভগবদ গীতার মূলকথা।
মহাভারতের রণভূমিতে অর্জুনের উদ্দেশ্যে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের যে কথাগুলি গীত হয়েছিল,তারজন্যই গীতা শ্রীমদভগবদগীতা নামে পরিচিত। ভগবদ গীতা হল জ্ঞানের রত্নভাণ্ডার। সংস্কৃত ভাষায় গীতা শব্দের অর্থ সঙ্গীত। ৭০০টি শ্লোক এবং ১৮টি অধ্যায়ে বিভক্ত করা আছে এই গীতাতে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে প্রতিটি অধ্যায়কে যোগ হিসেবে ধরা হয়। প্রতিটি অধ্যায়েই জ্ঞান, কর্ম এবং ভক্তি এই তিনটি যোগই বর্তমান। যারমধ্যে কর্মযোগকে গীতার সারকথা হিসেবে ধরা হয়। প্রসঙ্গত, সম্পুর্ন গীতা মূলত একটি শ্লোকের উপরে ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। সেই শ্লোকটি হল
'ক্লৈব্যং মাস্ম গমঃ পার্থ নৈতত্বযু্যপপদ্যতে।
ক্ষুদ্রং হৃদয়দৌর্বল্যং ত্যত্বুোত্তিষঠ পরন্তপ'।।'
- এর অর্থ 'হে পার্থ মোহ ত্যাগ করো এবং যুদ্ধে প্রবিত্ত হউ। ফল যা হউক লক্ষ্য স্থির রেখে কর্ম করে যাও, ভীরুতা ও কাপুরুষতার দ্বারা কিছুই লাভ করা যায় না। পিছু হটলে কোনো বিপদ দূর করা যায় না এটি জীবনের আদর্শ। আইনস্টাইন নিজে বলেছেন, 'যখন আমি গীতা পাঠ করি এবং ভাবি, ঈশ্বর কিভাবে এই বিশ্ব সৃষ্টি করেছেন, তখন সবকিছুই ছোট বলে মনে হয়। অপরদিকে ,বীর সন্ন্যাসী বিবেকানন্দ বলেছেন, 'যিনি গীতা লিখেছেন তার মত আশ্চর্য মস্তিষ্ক মনুষ্য জাতি আর কখনো দেখতে পাবে না।পরমাণু বোমার অন্যতম আবিষ্কারক রবার্ট ওপেনহাইমার গীতা সম্পর্কে বলেছেন, 'পৃথিবীতে যেকোনো পরিচিত ভাষায় লেখা সঙ্গীতের মধ্যে গীতা সবথেকে সুন্দরতম দার্শনিক সঙ্গীত। সত্যি, গীতা হিন্দু তথা বিশ্বের সনাতন ধর্মের প্রতীক হিসেবে বর্তমান ছিল আছে থাকবে।