Flash news
    No Flash News Today..!!
Monday, May 6, 2024

একদিকে উদ্বোধন হলো “স্ট্যাচু অফ ইকোয়ালিটি” মূর্তি, অন্যদিকে গান্ধী মূর্তি ভাঙচুর ঘিরে বিতর্ক !

banner

#pravati sangbad digital desk:

অবশেষে অপেক্ষার অবসান কাটিয়ে "স্ট্যাচু অফ ইকোয়ালিটি" ২১৬ ফুটের লম্বা স্থাপত্যের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সমতার প্রতীক এই মূর্তির উদ্বোধন হলো হায়দ্রাবাদে। তেলঙ্গনায় হায়দ্রাবাদ নিকটস্থ সামশাবাদে ৪৫ একর জমিতে এই মূর্তি নির্মাণ করে সাম্যের বার্তা বহনকারী সন্ত রামানুচার্যের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি৷
১০১৭ সালে তামিলনাড়ুর শ্রীপেরামবুদুরে জন্মগ্রহণ করেন সন্ত রামানুচার্য। তিনি গোটা ভারত ঘুরে সমাজের সমস্ত শ্রেণীর মানুষদের জীবনযাত্রাকে বোঝার চেষ্টা করেছিলেন। সোনা, রুপো, তামা, পিতল ও জিঙ্কের মিশ্রণে তৈরি হয়েছে মূর্তিটি। ১০১৭ থেকে ১১৩৭ খ্রীস্টাব্দ অর্থাৎ ১২০ বছর বেঁচে ছিলেন রামানুজ আচার্য। কর্মবহুল সেই ১২০ বছরকেও সম্মান জানাতে পৃথক একটি মূর্তি।  গর্ভগৃহের ভিতরে ১২০ কেজি সোনা দিয়ে তৈরি হয়েছে সেই মূর্তি।
৪৫ একর জমির উপর অবস্থিত এই মূর্তির উদ্বোধনে গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকেই শুরু হয়েছে অনুষ্ঠান, চলবে ১৪ ফেব্রুয়ারি অবধি। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, উপ-রাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু, আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত সহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব অংশ নেবেন এই অনুষ্ঠানে।

উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘জগৎগুরু শ্রী রামানুচার্যের এই বিশাল মূর্তির মাধ্যমে ভারত শক্তি এবং অনুপ্রেরণাকে মূর্ত করছে। রামানুচার্যের এই মূর্তিটি তাঁর জ্ঞান, বিচ্ছিন্নতা এবং আদর্শের প্রতীক। এই মূর্তি আমাদের সাম্যের বার্তা দিচ্ছে৷ এই বার্তা নিয়েই আজ ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস, সবকা প্রয়াস’ মন্ত্রে দেশ তার নতুন ভবিষ্যতের ভিত্তি স্থাপন করছে।’’
মোদি আরও বলেন, ‘‘একদিকে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের ‘স্ট্যাচু অফ ইউনিটি’ ঐক্যের শপথের পুনরাবৃত্তি করছে৷ অন্যদিকে রামানুচার্যের ‘স্ট্যাচু অফ ইকুয়ালিটি’ সমতার বার্তা দিচ্ছে।
একাদশ শতাব্দীতে গোটা দেশে পায়ে হেঁটে ঘুরে সাম্যের বার্তা পৌঁছে দিয়েছিলেন সন্ত রামানুচার্য। তিনি ছিলেন একজন ধর্মতাত্ত্বিক ও দার্শনিক। তিনি শ্রী রামানুচার্য, উপাধ্যায়, লক্ষ্মণ মুনি নামেও পরিচিত। সাধারণভাবে হিন্দুরা তাকে হিন্দু দর্শনের বিশিষ্টা দ্বৈত বেদান্তের প্রধান ব্যাখ্যাদানকারী হিসেবে দেখেন। বৈষ্ণব আচার্য রামানুচার্যের শিষ্য রামানন্দ। যার শিষ্য ছিলেন কবি ও সুরদাস। রামানুজ বেদান্ত‌ দর্শনের উপর ভিত্তি করে তাঁর নতুন দর্শন বেদান্ত রচনা করেছিলেন। বেদান্ত‌ ছাড়াও রামানুজাচার্য সপ্তম-দশম শতকের মরমী ও ভক্ত আলওয়ার সাধুদের ভক্তি দর্শনের এবং দক্ষিণের পঞ্চরাত্র ঐতিহ্যের ভিত্তি তৈরি করেছিলেন।
সেই সন্ত রামানুচার্যের সহস্রাব্দী সমারোহ উপলক্ষ্যে টানা ১৪ দিন অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে হায়দরাবাদে। ৩ ফেব্রুয়ারি যজ্ঞের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। ৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মূর্তির উদ্বোধন করেন। আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি রামানুচার্যের ১২০ কেজি সোনার মূর্তির উন্মোচন হবে।
রামানুচার্যের মূর্তি নিয়ে মোদি সরকার যতই সাম্যের কথা বলুক না কেন, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে আদতে হিন্দুত্বের বার্তা দিতে চেয়েছে বিজেপি৷ ঠিক যেমন হায়্দ্রাবাদ পুরনিগমের ভোটে বিজেপির প্রচারে যোগী আদিত্যনাথের মতো কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের নিয়ে আসা হয়েছিল৷ যদিও তখন অনেকেই ভেবে ছিলেন পুরভোটে হায়দ্রাবাদে মুসলিম ভোট ব্যাঙ্ক হারাবে বিজেপি৷ আদতে কিন্ত তা হয়নি, হায়দরাবাদের মতো মুসলিম অধ্যুষিত একাকায় ব্যাপক সংখ্যক ভোটে জিতে বোর্ড গঠন করে বিজেপি৷ তাই, ‘স্ট্যাচু অফ ইকুয়ালিটি’র মাধ্যমে হিন্দুত্ববাদের বার্তা দিলেও মুসলিম ভোট ব্যাঙ্কে সহজেই ফাটল ধরানো যাবে না তা জানেন বিজেপি নেতারা৷
এইদিকে মার্কিন মুলুকে গান্ধী মূর্তি ভয়াবহ ভাঙচুরে উঠলো ব্যাপক ঝড়। নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনে ভাঙচুর চালানো হল মহাত্মা গান্ধীর ব্রোঞ্জের মূর্তিতে। কিছু অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তিরা এসে মূর্তিতে ভাঙচুর চালায়। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন ভারতের কনস্যুলেট জেনারেল। 'ঘৃণ্য' কাজ বলে কটাক্ষ করেন তিনি। ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে ইন্দো-আমেরিকান সম্প্রদায়ের মধ্যে।

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে কথা বলে তাৎক্ষণিক তদন্তের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ঘৃণ্য কাজের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে কনস্যুলেট। মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকে এই বিষয়ে অভিযোগ জমা পড়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। 
গান্ধী মেমোরিয়াল ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন মহত্মা গান্ধীর ১১৭ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ২ অক্টোবর, ১৯৮৬ সালে এই ৮ ফুট উচ্চ মূর্তিটি দান করেছিল। সেই মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনায় হতবাক সকলেই। যদিও মার্কিন মুলুকে গান্ধী মূর্তি ভাঙার ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের একটি পার্কে গান্ধীর আরেকটি মূর্তি ভাঙা হয়েছিল। 
একইভাবে, গত মাসে কিছু দুষ্কৃতীরা এসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার একটি পার্কে গান্ধীর আরও একটি মূর্তি ভেঙে গুড়িয়ে দেয়। গান্ধী-বিরোধী এবং ভারত-বিরোধী সংগঠনগুলির বিক্ষোভের মধ্যে গত চার বছর আগে সিটি কাউন্সিল দ্বারা স্থাপিত মূর্তিটি ভারত সরকার ডেভিস শহরে দান করেছিল।

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Sayantika Biswas

Tags:

Related News