অবশেষে রাজ্যে চালু হল এসআইআর, SIR এ কী কী নথি দেখাতেই হবে দেখে নিন
সোমবার বাংলা-সহ মোট ১২টি রাজ্য়ে SIR-এর ঘোষণা করে দিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। এদিন তিনি জানালেন, ‘আন্দামান ও নিকোবর, ছত্তীসগঢ়, গুজরাট, গোয়া, কেরল, লাক্ষাদ্বীপ, মধ্য প্রদেশ, পুদুচেরি, রাজস্থান, তামিলনাড়ু, উত্তর প্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে আগামিকাল থেকে শুরু SIR।’
আগামিকাল থেকে শুরু হবে প্রশিক্ষণের কাজ। যা চলবে ৩রা নভেম্বর পর্যন্ত। এরপর ৪ঠা নভেম্বর থেকে ৪ঠা ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে বাড়ি-বাড়ি এনুমেরাশেন ফর্ম দেওয়ার ও জমার কাজ। ৯ ডিসেম্বর সেই ফর্মের ভিত্তিতে প্রকাশিত হবে খসড়া ভোটার তালিকা। ওই দিন থেকে টানা ৮ই জানুয়ারি, ২০২৬ সাল পর্যন্ত গ্রহণ করা হবে অভিযোগ, আবেদন। এই পর্বেই শুরু হয়ে যাবে বাড়ি-বাড়ি ভেরিফিকেশনের কাজ। যা চলবে ৯ ডিসেম্বর থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। এরপর ৭ই ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হবে চূড়ান্ত তালিকা। শুভেন্দু অধিকারীর অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ প্রত্যাহার
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বললেন “সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, আধার আইন অনুসারেই আধার কার্ড ব্যবহার করতে হবে। আধার আইনের ৯ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, আধার কার্ড নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। এটি পরিচয় প্রমাণের নথি।” তিনি আরও বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট তাদের বেশ কয়েকটি রায়ে বলেছে, আধার জন্ম তারিখের প্রমাণ দেয় না। আজও যদি আপনি একটি নতুন আধার কার্ড ডাউনলোড করেন, তবে দেখতে পারেন কার্ডে উল্লেখ রয়েছে, এটি জন্ম তারিখ কিংবা নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়।”
তবে আধার ও ভোটার কার্ড নিয়ে পুরনো প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। যদি আধার বা ভোটার কার্ড প্রাথমিক পরিচয়পত্র না হয় তবে ভারতের নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র কোনটি? তা কি জন্মের শংসাপত্র? সেক্ষেত্রে একজন নাগরিকের অন্যতম অধিকার ভোটদানে ভোটার কার্ড কীভাবে গ্রহণযোগ্য হয়? বাজার চলতি চেনা ওষুধেই সারবে ফ্যাটি লিভার সহ লিভারের জটিল রোগ
২০০৩-এর সঙ্গে যদি যোগ না পাওয়া যায়, বাবা-মা না থেকে থাকে, তাদের ক্ষেত্রে ইআরও নোটিস জারি করবে। নোটিসের পর শুনানি হবে। সেই শুনানিতে ইআরও প্রশ্ন করতে পারেন, ওই সময় সংশ্লিষ্ট ভোটাররা কোথায় ছিলেন? বা তাঁর বাবা-মা কোথায় ছিলেন?
কমিশন জানিয়েছে, বুথ লেভেল অফিসার তিনবার পর্যন্ত বাড়িতে যাবে। প্রথমবার যদি ভোটার বাড়িতে না থাকেন, তাহলে দ্বিতীয়বার যাবে। তারপরও না পেলে তৃতীয়বার যাবে। এছাড়াও, যদি ভোটারের মৃত্যু হয়, বা স্থায়ীভাবে বাইরে চলে গিয়েছে, বা একাধিক জায়গায় নাম নথিভুক্ত হয়ে গিয়েছে, তারা ফর্ম ফিল আপ করতে পারবেন না। এনুমারেশন ফর্ম পূরণের ক্ষেত্রে আর কোনও বাড়তি নথি দেখাতে হবে না। শুধু ২০০৩-এর ভোটারের সঙ্গে যোগ দেখাতে হবে।
SIR-র আবেদন করা যাবে অনলাইনেই। যারা কোনও কারণে বাড়িতে থাকবেন না বা কর্মসূত্রে অন্য রাজ্যে থাকেন। তাঁরা নিজেদের রাজ্য়ে ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বললেন, ‘SIR-এর সময় আধিকারিকরা সবার প্রথমে Enumeration Form প্রিন্ট করবে। তারপর তা বিএলও-রা ভোটারদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেবেন। সেই Enumeration Form-র ভিত্তিতে ভোটাররা নিজেদের নাম যাচাই করবেন। শেষ এসআইআর ভোটার তালিকায় কোনও ভোটারের নাম বা তাঁর বাবা-মায়ের নাম থাকলে দিতে হবে না কোনও কাগজ।’
SIR এ কী কী নথি দেখাতেই হবে দেখে নিন
১. রাজ্য বা কেন্দ্র সরকারের কর্মচারী বা অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী হলে তার পরিচয়পত্র
২. আপনার নামে ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগের কোনও পরিচয়পত্র/সার্টিফিকেট/ডকুমেন্ট যা ভারত সরকার বা রাজ্য সরকার দিয়েছে। ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, এলআইসির নথিও গ্রাহ্য হবে।
৩. জন্মের শংসাপত্র।
৪. ভারতের পাসপোর্ট।
৫. স্বীকৃত বোর্ড বা স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া শিক্ষা সংক্রান্ত শংসাপত্র। মাধ্যমিকের সার্টিফিকেটও গ্রহণযোগ্য। যেখানে আপনার জন্মের সাল, তারিখ উল্লেখ রয়েছে।
৬. রাজ্যের দেওয়া পার্মানেন্ট রেসিডেন্স সার্টিফিকেট।
৭. বনাঞ্চলে যাঁরা থাকেন, তাঁদের ক্ষেত্রে বন অধিকার শংসাপত্র।
৮. ওবিসি/এসসি/এসটি বা অন্য কোনও কাস্টের হলে কাস্ট সার্টিফিকেট।
৯. জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বা NRC (যেখানে চালু হয়েছে)।
১০. রাজ্য সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের তৈরি ফ্যামিলি রেজিস্টার।
১১. সরকারের দেওয়া জমির নথি, বাড়ির নথি। অর্থাৎ দলিল, পরচা।
২০০২ বা ২০০৩ সালের SIR-এর তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের আলাদা করে নথি দেখাতে হবে না। এমনকী ২০০২, ২০০৩ সালের তালিকায় যাঁদের বাবা, মায়ের নাম রয়েছে, তাঁদেরও অতিরিক্ত নথি দেখাতে হবে না।