প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, চিনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং এবং রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনকে আলোচনার ফাঁকেফাঁকে হাসি-মজা করতে দেখে সারা বিশ্ব হতবাক৷ কোনও ছবিতে তাঁদের আড্ডা দিতে এবং কোথাও আবার ক্যামেরাপার্সনদের অনুরোধে পোজ দিতেও দেখা গেছে৷ একদিকে পুতিন ও অন্যদিকে জিন পিংকে নিয়ে ফটো তুলে বিশ্বের সামনে বড় বার্তা দিচ্ছেন মোদি৷ একজোট হয়ে আমেরিকাকে রোখার কৌশল
চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে। অন্য রাষ্ট্রপ্রধানদের মাঝে ঘনিষ্ঠ আলাপচারিতায় আলাদা করে ব্যস্ত তিন জন। অন্যদিকে, SCO সামিটে পাত্তাই পেলেন না পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ।
আমেরিকার চোখরাঙানিকে পাত্তা না দিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য ও ঘনিষ্ঠতা দুই বজায় রেখেছে ভারত। SCO সামিটে দীর্ঘক্ষণ দু’দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে গভীর মনোযোগের সঙ্গে কিছু আলোচনা করতে দেখা গিয়েছে। অন্য একটি ভিডিয়োতে আবার দেখা যাচ্ছে, এক কোনায় দাঁড়িয়ে পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। আর তাঁর সামনে দিয়েই কথা বলতে বলতে হেঁটে যাচ্ছেন পুতিন ও মোদী। কিন্তু শরিফের দিকে দু’জনের কেউই ঘুরে তাকানোর প্রয়োজন মনে করেননি।
চিনে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (SCO)-এর মঞ্চ থেকেও পহেলগামের জঙ্গি হামলা নিয়ে সরব হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের উপস্থিতিতেই রাষ্ট্রপ্রধানদের সামনে তাঁর প্রশ্ন, ‘কিছু দেশ জঙ্গি সংগঠনগুলিকে যে ভাবে প্রকাশ্যে সমর্থন করছে তা কি বরদাস্ত করা উচিত?’ ইউক্রেন যুদ্ধের স্থায়ী সমাধান কি হবে
রবিবার বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রী সাংবাদিক বৈঠকে স্পষ্টতই জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারত চিন দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে চিনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সঙ্গে কথোপকথনের সময় আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের বিষয়টি উত্থাপন করেন এদিন। সন্ত্রাসবাদের মতো কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বেজিং-কে পাশে পাওয়ার কথাও বলেন তিনি।
বিদেশ সচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জোরের সঙ্গেই সীমান্ত সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণে ভারতের অগ্রাধিকার, এবং ভারত ও চিন দুই দেশের উপরই এই সন্ত্রাসবাদের প্রভাবের কথা উল্লেখ করেছেন এদিনের আলোচনায়।’
এসসিও সম্মেলনে চিন ও ভারতের পারস্পরিক সহযোগিতা ও বন্ধুত্ব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। চিনা সংবাদপত্রেও ভারত ও চীনের সম্পর্কের উন্নতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। চিনা সংবাদপত্রটি লিখেছে, ‘রাষ্ট্রপতি শি পারস্পরিক উপকারী সহযোগিতা সম্প্রসারণের আহ্বান জানিয়েছেন। জোর দিয়ে বলেছেন যে উন্নয়ন হল দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশীদারিত্ব। সীমান্ত ইস্যুতে (ভারত-চিন সীমান্ত) সংবাদপত্রটি লিখেছে, ‘শি একটি বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গির পক্ষে এবং শান্তিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। তিনি দুই দেশের মধ্যে বিরোধকে সম্পর্কের উপর প্রভাব বিস্তার করা থেকে বিরত রাখার বিষয়ে কথা বলেছেন।’
ভারত-রাশিয়া-চিন তিন অক্ষশক্তি, গ্লোবাল সাউথ দেশগুলির স্বার্থে একসঙ্গে লড়বে আমেরিকার বিরুদ্ধে ৷
পুতিন বলেন, "চিনের সাথে আমরা ব্রিকসকে আন্তর্জাতিক কাঠামোর একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভে পরিণত করছি। আমাদের লক্ষ্য হল সদস্য দেশগুলির জন্য অর্থনৈতিক সুযোগ বৃদ্ধি করা এবং কৌশলগত ক্ষেত্রে অংশীদারিত্বের জন্য সাধারণ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা।" তিনি আরও বলেন যে ব্রিকস এখন কেবল একটি সংস্থা নয় বরং 'বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জগুলির সমাধান খুঁজে বের করার প্ল্যাটফর্ম' হয়ে উঠছে, যেখানে সদস্য দেশগুলির নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিষয়ে একই মতামত রয়েছে।