মে-জুলাইয়ের পর ফের রাজ্য সফরে মোদি। শুক্রবার বিকেলে কলকাতায় আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ৩টি নতুন মেট্রোরুটের উদ্বোধন করেন। বিমানবন্দর থেকে সড়কপথেই যশোর রোড মেট্রো স্টেশনে আসেন মোদি। পরে দমদম সেন্ট্রাল জেলের মাঠে প্রশাসনিক সভা করেন। একাধিক সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে বিজেপির জনসভায় অংশ নেন নরেন্দ্র মোদি। ভাষণের পরেই ফের দিল্লি রওনা প্রধানমন্ত্রীর। এক টিকিটেই বিমানবন্দর, এয়ারপোর্ট থেকে শিয়ালদহ-হাওড়ার মেট্রো
শুক্রবার দমদমের সভা থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে ওঠা ভিনরাজ্যে বাংলাভাষীদের হেনস্থার অভিযোগের বিরুদ্ধে একটি বাক্যও খরচ করলেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে ৪১ মিনিটের বক্তৃতায় মোদীর ভাষণে প্রাধান্য পেয়েছে বাংলার অনুপ্রবেশ সমস্যা। অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হলে রাজ্যের মসনদে বিজেপিকেই বসাতে হবে, সেই বার্তাই তুলে ধরেন মোদী।
তৃণমূলকে নিশানা করে মোদী বলেন, ‘অনুপ্রবেশকারীদের কে তাড়াবে? বাংলাকে অনুপ্রবেশকারীদের থেকে কে মুক্ত করতে পারে? আপনার একটি ভোট এই সমস্যার সমাধান করতে পারে। একবার ভোট দিন এরা সবাই পালাবে।’ রাজ্যের নাগরিকদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, নারী নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে অনুপ্রবেশ বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে দাবি মোদীর। তাঁর বক্তব্য, ‘যে সব অনুপ্রবেশকারী আমাদের যুবকদের রোজগার ছিনিয়ে নিচ্ছে, পরিকাঠামোর উপরে চাপ সৃষ্টি করছে, মা বোনদের উপরে অত্যাচার করছে আমরা তাদের থাকতে দেব না। তাই এত বড় অভিযান চালাচ্ছি আমরা।’ মোদি, ‘বন্ধু’ ট্রাম্পের সঙ্গে একান্ত বৈঠকে বরফ গলবে কি?
তিনি বলেন, ‘তৃণমূলের এক মন্ত্রী শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে আজও জেলে রয়েছেন। ঘর থেকে নোটের পাহাড় উদ্ধার হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও ওই মন্ত্রী কুর্সি ছাড়তে রাজি ছিলেন না। তৃণমূলের আরও এক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে গরিব মানুষের রেশন লুট করার অভিযোগ রয়েছে। তাঁরও কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এই মন্ত্রীও জেল যাওয়ার পরে কুর্সি ছাড়তে চাননি। তিনি জনতা এবং সংবিধানের পরোয়া করেননি। এই ধরনের মানুষ, যাঁরা দুর্নীতিগ্রস্ত তাঁদের কি ক্ষমতায় থাকার অধিকার রয়েছে?’ নাম না করে তিনি পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে তোপ দেগেছেন মোদী। ভারত প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর হচ্ছে
বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। রাজ্যে একাধিক দুর্নীতি, নারী সুরক্ষার দুরাবস্থা, কর্মসংস্থানের অভাবের মতো অভিযোগ বার বার সামনে এসেছে — এগুলিকে হাতিয়ার করে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে বিজেপি, এটা জানাই ছিল। এর সঙ্গে যে, অনুপ্রবেশের সমস্যাকেও মানুষের সামনে তুলে ধরা হবে, সে কথা এ দিন নিজের বক্তৃতায় স্পষ্ট করে দেন মোদী। তাঁর গলায় সেই বাংলা ভাষাতেই নতুন স্লোগান শোনা যায় — ‘বাঁচতে চাই, বিজেপি তাই।’
নরেন্দ্র মোদির হাতে তুলে দেওয়া হল খ্যাতনামা চিত্র শিল্পী সমীর আইচের আঁকা সত্যজিৎ রায়ের ছবি। এদিন যশোর রোড স্টেশন থেকে মেট্রো রুটের উদ্বোধন করে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী চলে আসেন বিজেপির রাজনৈতিক মঞ্চে। দমদমে কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের মাঠে আয়োজিত বিজেপির এই সভায় প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত হতেই কর্মী সমর্থকদের উচ্ছ্বাস উপচে পড়ে। তার পরেই রাজ্য বিজেপির সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধিত করেন। তিনি সমীর আইচের আঁকা সত্যজিৎ রায়ের ছবি তুলে দেন প্রধানমন্ত্রীর হাতে।