জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের আবহে চরম উত্তেজনা। ওই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন, যাঁদের মধ্যে অধিকাংশ ছিলেন নিরীহ পর্যটক। হামলার পেছনে পাকিস্তান মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন টিআরএফ-এর নাম জড়ানোর পর কূটনৈতিক ও প্রতিরক্ষা স্তরে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। এরই মধ্যে ভারতীয় সেনাকে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। একইসঙ্গে মুখ খুলেছেন পাকিস্তানের সম্প্রচারমন্ত্রী আতাউল্লা তাহা—যাঁর ভিডিওবার্তা ঘিরে নতুন করে আলোড়ন শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিওবার্তায় আতাউল্লা তাহা জানান, “বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি যে আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বড় ধরনের সামরিক অভিযান শুরু করতে পারে। পহেলগাঁওয়ের হামলার দায়ভার পাকিস্তানের উপর চাপিয়ে একতরফা হামলার পরিকল্পনা করছে নয়াদিল্লি।”তাহা আরও বলেন, “আমরা সন্ত্রাসবাদের শিকার রাষ্ট্র। তাই এমন হামলার যন্ত্রণা আমরা বুঝি। পাকিস্তান সবসময় সন্ত্রাসের বিরোধিতা করে এসেছে। ভারত যেন এই ঘটনায় নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করায়।” তবে একই সঙ্গে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যদি ভারত কোনওরকম আগ্রাসন চালায়, তবে পাকিস্তানও তার জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে। পাকিস্তান তার সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় আপসহীন।”পাকিস্তানের এই বার্তা যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা। অনেকের মতে, ভারতীয় সেনার স্বাধীনতা ঘোষণার পরই পাকিস্তানের এই কূটনৈতিক বার্তা স্রেফ আতঙ্ক ও চাপের প্রতিচ্ছবি। জানা গিয়েছে, পহেলগাঁও হামলার পর সোমবার রাতে নয়াদিল্লিতে জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। বৈঠকের শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সেনাবাহিনীকে ‘ফ্রি হ্যান্ড’ অর্থাৎ পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হবে জঙ্গি ও তাদের মদতদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।
জগন্নাথধাম উদ্বোধনের আগে মহাযজ্ঞে বসবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী
সূত্রের খবর, পহেলগাঁওয়ে হামলায় অংশগ্রহণকারী চার জঙ্গির মধ্যে দুই জন পাকিস্তানের নাগরিক। হামলার দায় প্রথমে স্বীকার করলেও পরে তা অস্বীকার করে জঙ্গি সংগঠন টিআরএফ। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি মনে করছে, এই হামলার পিছনে সরাসরি পাকিস্তানের মদত রয়েছে, যা নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে জঙ্গি অনুপ্রবেশের নতুন করে ইঙ্গিত দেয়। এই মুহূর্তে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা তুঙ্গে। একদিকে ভারত সরকার জঙ্গি দমন নিয়ে কঠোর অবস্থান নিচ্ছে, অন্যদিকে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক মহলকে বার্তা দিয়ে সংঘর্ষের দায়ভার ভারতের উপর চাপানোর কৌশল নিয়েছে। বিশ্বরাজনীতি পর্যবেক্ষকদের মতে, আগামী কয়েক ঘণ্টা দুই দেশের সম্পর্ক ও দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তার নিরিখে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।