ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় বৈসরনের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রে কয়েকজন নিরীহ পর্যটকের মৃত্যুর পর, সারা দেশজুড়ে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন ও রাজনৈতিক মহল। প্রশ্ন উঠেছে—এত সংবেদনশীল একটি স্থানে কেন কোনও নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা ছিল না? এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি দিল্লিতে ডাকা হয় এক সর্বদলীয় বৈঠক। বৈঠকে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। বিরোধীপক্ষের প্রতিনিধিত্ব করেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি, মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং আম আদমি পার্টির সাংসদ সঞ্জয় সিং-সহ একাধিক সিনিয়র নেতা।
প্রসঙ্গত, বৈঠকে বিরোধী নেতারা সোজাসুজি প্রশ্ন তোলেন—কেন বৈসরনের মতো একটি ব্যস্ত পর্যটনকেন্দ্রে নিরাপত্তা বাহিনীর কোনও জওয়ান মোতায়েন করা ছিল না? রাহুল গান্ধি ও মল্লিকার্জুন খাড়গে স্পষ্ট করে বলেন, “যেখানে প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক ভিড় করেন, সেখানে নিরাপত্তা ছাড়াই চলছিল পর্যটন? এটা কীভাবে সম্ভব?” জবাবে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রতিবছর সাধারণত অমরনাথ যাত্রা শুরুর ঠিক আগে, অর্থাৎ জুন মাস নাগাদ ওই অঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়। কিন্তু এই বছর স্থানীয় কিছু ট্যুর অপারেটর প্রশাসন বা পুলিশের কোনও পূর্বানুমতি ছাড়াই ২০ এপ্রিল থেকেই পর্যটকদের বৈসরনে নিয়ে যেতে শুরু করেন। সরকারি বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই আগাম কার্যক্রম সম্পর্কে স্থানীয় প্রশাসন সম্পূর্ণ অন্ধকারে ছিল। ফলে নির্ধারিত সময়ের আগে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা সম্ভব হয়নি। সরকার দাবি করে, এই অনিয়মই দুর্ঘটনার মূল কারণ।
ফের কি অভিনন্দনের পুনরাবৃত্তি? পাকিস্তানের হাতে আটক বাংলার বিএসএফ জওয়ান, উদ্বেগে ভারত
উলেখ্য, বিরোধীপক্ষ অবশ্য এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নয়। তাঁদের মতে, পর্যটন কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই সরকারের দায়িত্ব এবং সেখানে পর্যটকদের আগমন হোক বা না হোক, ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে সতর্কতামূলক নিরাপত্তা থাকা উচিত ছিল। এই ঘটনার পর প্রশাসনিক গাফিলতি, স্থানীয় পর্যায়ে নজরদারির অভাব এবং কেন্দ্র-রাজ্যের মধ্যে সমন্বয়ের ঘাটতি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে, এবং সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।