পহেলগাঁও হামলার পর কাশ্মীর উপত্যকাজুড়ে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অভিযানে বড়সড় সাফল্য পেল ভারতীয় সেনা। হামলার ৭২ ঘণ্টা না যেতেই বান্দিপোরার বাজিপোরা জঙ্গলে সেনা অভিযানে নিকেশ হল লস্কর-ই-তইবার শীর্ষ কম্যান্ডার আলতাফ লালি। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, কাশ্মীরে লস্করের অন্যতম রিক্রুটার এবং অপারেশনাল কম্যান্ডার ছিল এই লালি। পহেলগাঁও হামলায় তার সরাসরি জড়িত থাকার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলায় একাধিক প্রাণহানি ও আহত হওয়ার ঘটনায় দেশজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই হামলার পর সাফ জানিয়ে দেন, “সন্ত্রাসবাদকে সমূলে উৎখাত করা হবে। যারা দেশের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিয়েছে, তাদের কোনো প্রান্তেই ছাড় দেওয়া হবে না।” তাঁর এই হুঁশিয়ারির পরপরই উপত্যকার একাধিক জেলায় শুরু হয়েছে জোরদার চিরুনি তল্লাশি। শুক্রবার ভোর থেকে বান্দিপোরার বাজিপোরা জঙ্গলে যৌথ অভিযান শুরু করে সেনা ও প্যারা মিলিটারি বাহিনী। গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুরো এলাকা ঘিরে ফেলা হয়। শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। দীর্ঘক্ষণ গুলির লড়াইয়ের পর নিকেশ হয় আলতাফ লালি। সেনা সূত্রে খবর, এলাকায় এখনও তল্লাশি চলছে, আরও জঙ্গি লুকিয়ে থাকার আশঙ্কা রয়েছে। বান্দিপোরার পাশাপাশি বারামুলা, উধমপুর, এবং দক্ষিণ কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালাচ্ছে সেনা। স্থানীয়দের মধ্যেও সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করে চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। এখন পর্যন্ত প্রায় ১,৫০০ জনকে আটক করে তথ্য জোগাড় করছে বাহিনী।শুক্রবার সকালেই পুলওয়ামায় পহেলগাঁও হামলার অন্যতম অভিযুক্ত আসিফ শেখের বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। সেনা যখন তল্লাশি চালিয়ে বেরিয়ে আসছে, তখনই বাড়িতে রাখা বিস্ফোরক ফেটে যায়। পুরো বাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। একইভাবে, হামলাকারীদের রুট দেখানো আদিল ঠোকরের বাড়িও বিস্ফোরণে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
পহেলগাঁও সন্ত্রাসের পর জলসীমান্তে কড়া বার্তা, আরব সাগরে নৌসেনার শক্তি প্রদর্শন
উলেখ্য, পহেলগাঁও হামলার পর কাশ্মীর উপত্যকায় সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে ভারতীয় বাহিনীর কড়া অবস্থান স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। একদিকে যেমন শীর্ষ জঙ্গিদের নিকেশ করা হচ্ছে, তেমনই স্থানীয় স্তরে জঙ্গিদের মদতদাতাদের বিরুদ্ধেও নেওয়া হচ্ছে কড়া পদক্ষেপ। গোটা উপত্যকায় এখন টানটান উত্তেজনা, তবে সেনার সক্রিয়তায় জনসাধারণের মধ্যে তৈরি হয়েছে স্বস্তির আবহ।