খ্রিস্টধর্মের শীর্ষ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ গোটা বিশ্ব। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সোমবার সকালে ভ্যাটিকানে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। পোপের প্রয়াণে বিশ্বজুড়ে রাষ্ট্রপ্রধান, বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব এবং কোটি কোটি অনুগামী গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। ভারত সরকারও পোপের স্মরণে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে।
প্রসঙ্গত, সোমবার সকালে স্থানীয় সময় ৭টা ৩৫ মিনিটে পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন ভ্যাটিকানের কার্ডিনাল কেভিন ফেরেল। এক বিবৃতিতে জানানো হয়, দীর্ঘদিন ধরেই নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন পোপ। গত ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁকে সংকটজনক অবস্থায় ইটালির একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। যদিও পরে তিনি কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন, চিকিৎসকদের পরামর্শে বিশ্রামে ছিলেন।তবে অসুস্থতার মধ্যেও গুড ফ্রাইডে ও ইস্টারের প্রার্থনায় অনুপস্থিত থাকার পর রবিবার আচমকা সেন্ট পিটার্স স্কোয়্যারে উপস্থিত হন পোপ ফ্রান্সিস। সেখানে ৩৫ হাজারেরও বেশি পুণ্যার্থীর উদ্দেশ্যে বারান্দা থেকে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান তিনি। বলেন, “ভাই এবং বোনেরা, হ্যাপি ইস্টার।” একইসঙ্গে গাজার চলমান সংঘর্ষ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “সব পক্ষের কাছে আবেদন, অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করুন।” দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সেই বার্তা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জীবনযুদ্ধে হার মানেন পোপ।পোপ ফ্রান্সিসের প্রয়াণে শোকবার্তা পাঠিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। টুইটারে তিনি লেখেন, “পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। ছোটবেলা থেকেই তিনি প্রভু খ্রিস্টের আদর্শ বাস্তবায়নে নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। তাঁর সঙ্গে গত বছর জি-৭ সম্মেলনে সাক্ষাতের স্মৃতি আজ আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।”
যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশের দাবিতে উত্তাল এসএসসি ভবন চত্বর
উলেখ্য, পোপের প্রয়াণের পরই ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে এক বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ২২ এবং ২৩ এপ্রিল দেশজুড়ে রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হবে। এছাড়া পোপের শেষকৃত্যের দিনও জাতীয় শোক পালিত হবে। এই সময়ে দেশের সমস্ত সরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে এবং কোনও ধরনের সরকারিভাবে আয়োজিত বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান হবে না।পোপ ফ্রান্সিস ছিলেন খ্রিস্টধর্মের ইতিহাসে প্রথম যিনি দক্ষিণ আমেরিকা থেকে উঠে এসে এই পবিত্র আসনে বসেন। পোপ হিসেবে তাঁর কার্যকাল জুড়ে তিনি শান্তি, মানবতা, দরিদ্রদের অধিকার ও পরিবেশ রক্ষার পক্ষে বারবার সোচ্চার হয়েছেন। তাঁর প্রয়াণ নিঃসন্দেহে বিশ্বজনীন নেতৃত্বের এক অপূরণীয় ক্ষতি।