হায়দরাবাদের ঐতিহাসিক চারমিনারের অদূরে রবিবার সকালে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। শহরের পুরনো অংশে অবস্থিত ‘গুলজ়ার হাউস’ নামের একটি বহুতল ভবনে ভয়াবহ আগুন লাগার ফলে এখনও পর্যন্ত দুই শিশু-সহ অন্তত আট জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন।
পুলিশ ও দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, সকালবেলা আগুন লাগার পরপরই খবর দেওয়া হয় দমকল বিভাগকে। বেশ কয়েকটি ইঞ্জিন দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। ঘিঞ্জি এলাকার narrow গলির কারণে আগুন নেভাতে ও উদ্ধারকাজ চালাতে প্রথম দিকে বেশ বেগ পেতে হয়। দমকল কর্মীরা জানিয়েছেন, আগুন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এলেও ভবনের ভিতরে এখনও কয়েকজন আটকে রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আগুন নেভার সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধারকার্য জোরদার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে উদ্ধারকারী দল ও স্থানীয় প্রশাসন। তদারকি করছেন এলাকার বিধায়ক। অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ এখনও জানা না গেলেও প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে, বিদ্যুৎ লাইনে শর্ট সার্কিট থেকেই এই আগুনের সূত্রপাত। এলাকাটি অত্যন্ত ঘিঞ্জি হওয়ায় এবং ভবনে অগ্নিনির্বাপক কোনও আধুনিক ব্যবস্থা না থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি এই ঘটনার খবর পেয়েই দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি উদ্ধারকাজের অগ্রগতি সম্পর্কে মন্ত্রীদের কাছ থেকে খোঁজ নেন এবং মৃতদের পরিবারকে গভীর শোক প্রকাশ করে সমবেদনা জানান। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, উদ্ধারকাজে যেন কোনওরকম গাফিলতি না হয় এবং দ্রুত আহতদের হাসপাতালে পৌঁছে চিকিৎসা শুরু করা হয়। এই ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় ছড়িয়েছে ব্যাপক আতঙ্ক। বহু বাসিন্দা অভিযোগ তুলেছেন, ভবনটিতে আগুন নির্বাপণ ব্যবস্থার ঘাটতি ছিল এবং প্রশাসনের নজরদারিও যথেষ্ট নয়।এক স্থানীয় বাসিন্দার কথায়, "বাড়ির ভিতর থেকে চিৎকার শোনা যাচ্ছিল, কিন্তু ধোঁয়ার কারণে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। আমরা অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে ছিলাম।"
ইসরোর ১০১তম উৎক্ষেপণ মিশনের ব্যর্থতা: যান্ত্রিক ত্রুটিতে থমকে গেল EOS-09 উপগ্রহের যাত্রা
প্রসঙ্গত, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধারকাজ অব্যাহত রয়েছে। দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা ভবনের প্রতিটি তলা খুঁজে দেখছেন আরও কেউ আটকে রয়েছেন কি না। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই দুর্ঘটনা একবার আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল শহরের বহু ঘিঞ্জি ও পুরনো ভবনে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থার কী ভয়াবহ ঘাটতি রয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভবিষ্যতের জন্য প্রশাসন ও নাগরিকদের আরও সচেতন ও প্রস্তুত থাকার প্রয়োজনীয়তা অনেকখানি বাড়ল।