ভারতের রেলপথে নতুন প্রযুক্তির সংযোজন হতে চলেছে, যা দেশের পরিবহন ব্যবস্থায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। ভারতের রেল দপ্তর সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে, চলতি বছরের ৩১ মার্চ থেকে প্রথম হাইড্রোজেন ট্রেন চালু হতে যাচ্ছে। এই ট্রেনটি শুরু হবে হরিয়ানার জিন্দ থেকে সোনিপথ পর্যন্ত, যা রেল যোগাযোগে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে গণ্য হবে।
উলেখ্য, হাইড্রোজেন ট্রেনের সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হলো এটি পরিবেশবান্ধব এবং সম্পূর্ণভাবে কার্বন নিঃসরণমুক্ত। এই ট্রেনটি জল এবং হাইড্রোজেনের শক্তি ব্যবহার করে চলবে, যা পরিবেশের জন্য অত্যন্ত উপকারী। হাইড্রোজেন ট্রেনের প্রযুক্তি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যেখানে তাপ উৎপন্ন করে সেই তাপের মাধ্যমে হাইড্রোজেন তৈরি হবে, এবং সেই শক্তি দিয়েই ট্রেনটি চলবে। এই উদ্ভাবন পরিবেশের প্রতি ভারতের দায়বদ্ধতা ও সদিচ্ছার প্রতীক। এই ট্রেনটি শুধু পরিবেশের জন্যই উপকারী নয়, তা যাত্রীদের জন্যও আরামদায়ক হবে। হাইড্রোজেন ট্রেনটি চলবে একেবারে নিঃশব্দভাবে, ফলে যাত্রীরা অতিরিক্ত শব্দের জন্য বিরক্ত হবেন না। পাশাপাশি, এটি কোনো ধরনের কার্বন নিঃসরণও করবে না, যা পরিবেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মহিলা সমৃদ্ধি যোজনায় দিল্লির ২৫০০ টাকা ভাতা, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের অনুকরণে বিজেপির ঘোষণা
গতি প্রসঙ্গে, হাইড্রোজেন ট্রেনটি ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার বেগে চলতে সক্ষম হবে, যা একে অন্য দূরপাল্লার ট্রেনের সাথে প্রতিযোগিতায় একধাপ এগিয়ে রাখবে। এই ট্রেনে একবারে ২৬৩৮ জন যাত্রী চলতে পারবেন, এবং এতে থাকছে ১২০০ হর্স পাওয়ারের শক্তিশালী ইঞ্জিন, যা ট্রেনটির গতির এবং শক্তির জন্য আদর্শ। ভারতীয় রেল ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের রেল চলাচলকে পুরোপুরি দূষণমুক্ত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, এবং হাইড্রোজেন ট্রেন তারই একটি বড় অংশ। এই পরিকল্পনার আওতায়, আগামী দিনে ডিজেল চালিত ট্রেনগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে এবং পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো হবে। এটি শুধু ভারতের জন্য নয়, বিশ্বের জন্যও একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এর আগে, জার্মানি, চিন এবং ব্রিটেনের মতো দেশগুলোতে এই প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু হয়েছে, আর এখন ভারতও সেই তালিকায় নাম লেখাতে চলেছে। ভারতের রেল বিভাগ একেবারে নতুন এক যুগের সূচনা করতে চলেছে, যা পরিবেশ এবং যাত্রীদের জন্য একটি শুভ সংবাদ। হাইড্রোজেন ট্রেন শুধু একটি পরিবহন মাধ্যমই নয়, বরং এটি দেশের পরিবেশ সংরক্ষণ এবং টেকসই উন্নয়নের দিকে একটি বড় পদক্ষেপ।