লন্ডনে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের ওপর হামলার চেষ্টা, যা খালিস্তানপন্থীদের দ্বারা সংঘটিত হয়, একাধিক প্রশ্ন তুলেছে নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকারিতা এবং আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে। এই ঘটনার পর ভারতের বিদেশ মন্ত্রক তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং ব্রিটেন সরকারের কাছে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি তুলেছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৫ সালের ৫ মার্চ, লন্ডনে চ্যাথাম হাউসে এক প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণের পর, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের গাড়ির দিকে হামলা চালানোর চেষ্টা করা হয়। খালিস্তানপন্থী একজন ব্যক্তি জয়শঙ্করের গাড়ির সামনে এসে ভারতের পতাকা ছিঁড়ে ফেলেন। ওই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী, যারা ভারত-বিরোধী স্লোগান দিচ্ছিলেন। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, নিরাপত্তা বাহিনী তৎপরতা দেখিয়ে দ্রুত হামলাকারীকে সরিয়ে নেয়, তবে পুরো ঘটনাটি নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতার উপর প্রশ্ন তুলে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই ঘটনার ফুটেজ দেখে স্পষ্ট যে, বিদেশমন্ত্রীর নিরাপত্তায় গাফিলতি ছিল। মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক বিবৃতিতে বলেন, “আমরা এই ধরনের চরমপন্থী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর কর্মকাণ্ডকে তীব্র নিন্দা জানাই। এই ধরনের আচরণ স্বাধীনতার অপব্যবহারের স্পষ্ট উদাহরণ। আমরা আশা করি ব্রিটেন সরকার কূটনৈতিক বিষয়টি মাথায় রেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।”
বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমরা আশা করি, ব্রিটেন সরকার এই ধরনের গোষ্ঠী এবং তাদের কর্মকাণ্ডকে যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে এবং ভারতীয় কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।” ভারত সরকার খালিস্তানপন্থী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের জন্য ব্রিটেনকে সতর্ক করেছে। এ ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতার উপর সন্দেহও প্রকাশ করা হচ্ছে। যদিও হামলার পর পরই হামলাকারীকে দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হয়, কিন্তু এটি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে যে কীভাবে ওই ব্যক্তিকে এত কাছাকাছি আসতে দেওয়া হলো। বিশেষ করে, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এতটা গাফিলতির শিকার কেন হলো, তা নিয়ে তদন্তের দাবি উঠেছে।
রেলের গ্রুপ সি পদে নিয়োগ বাতিল: অনিয়মের অভিযোগে রেলওয়ে বোর্ডের কঠোর পদক্ষেপ
এই হামলার পরেও, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের ব্রিটেন সফর অব্যাহত রয়েছে। ভারতের ব্রিটেনের সঙ্গে স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ আরও দৃঢ় করার লক্ষ্যেই এই সফর। ৯ মার্চ পর্যন্ত তিনি ব্রিটেনে থাকবেন এবং সেখানে তিনি একাধিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। বুধবার, ৫ মার্চ, তিনি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়র স্টার্মারের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক সেরেছেন, যেখানে দু'দেশের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এই ঘটনার পর, ভারতীয় কূটনৈতিক মহলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হলেও, তা বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সফরের উপর প্রভাব ফেলতে পারেনি। তবে, নিরাপত্তা ব্যবস্থার আরও উন্নতির প্রয়োজন এবং ব্রিটেনের কাছে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি পুনরায় তোলেন ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।