অস্ট্রেলিয়ার তারকা ক্রিকেটার স্টিভ স্মিথ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে দারুণ পারফরম্যান্সের পর একদিনের ক্রিকেট (ODI) থেকে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে, স্মিথ টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে খেলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিক্সে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
স্মিথের এই সিদ্ধান্তটি সবার কাছে কিছুটা অবাক করা হলেও, অনেকেই মনে করছেন যে ৩৫ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার তার কেরিয়ারের শেষভাগে এসে ২০২৮ অলিম্পিক্সে ক্রিকেটের স্বর্ণপদক জয়ের সুযোগটি হাতছাড়া করতে চান না। এতদিন অলিম্পিক্সে ক্রিকেট খেলার সুযোগ না পেলেও, ২০২৮ সালে টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এটি একটি বিরল সুযোগ হতে পারে স্মিথের জন্য। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে স্মিথের পারফরম্যান্স ছিল প্রশংসনীয়। সীমিত পুঁজি নিয়ে দুর্দান্ত অধিনায়কত্ব প্রদর্শন করে তিনি অস্ট্রেলিয়ার হার এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এর পরও, তিনি একদিনের ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে স্মিথ বলেন, "এটাই সরে যাওয়ার সঠিক সময় বলে মনে হয়েছে। এই সফরটা দুর্দান্ত ছিল। আর সেটার প্রতিটা মুহূর্ত উপভোগ করেছি আমি। অস্ট্রেলিয়ার জার্সি গায়ে খেলার সময় অনেক অসাধারণ স্মৃতি তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে ২০১৫ ও ২০২৩ সালে বিশ্বকাপ জয়।" তিনি আরও বলেন, "২০২৭ সালের একদিনের বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতি শুরু করার এটা খুব ভালো সময়। তাই মনে হয়েছে যে আমার সরে যাওয়ার এটা সেরা সময়।"
স্টিভ স্মিথ ১৭০টি একদিনের ম্যাচে অংশ নিয়েছেন এবং ১৫৪টি ইনিংসে ব্যাটিং করেছেন। তার মোট রান ৫,৮০০, যার মধ্যে সর্বোচ্চ রান ১৬৪। গড় রান ৪৩.২৮ এবং স্ট্রাইক রেট ৮৬.৯৬। একদিনের ক্রিকেটে তিনি ১২টি শতরান এবং ৩৫টি অর্ধশতরান করেছেন। এছাড়া, স্মিথ ৬৪টি একদিনের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কত্বও করেছেন, যেখানে তার জয়-শতাংশ ছিল ৫০। তার অধিনায়কত্বে অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ড এবং ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজ জয় পেয়েছিল। ২০১৬ সালে তিনি চ্যাপেল-হ্যাডলি ট্রফি এবং ত্রিদেশীয় সিরিজ (অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ) জিতেছিলেন। স্টিভ স্মিথের টেস্ট ক্রিকেটে আগ্রহের কথা জানিয়েছেন তিনি, এবং ২০২৩ সালের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল, শীতকালীন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ এবং ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। স্মিথ জানিয়েছেন যে, টেস্ট ক্রিকেট এখনও তার কাছে অগ্রাধিকার পাবে এবং অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আরও অবদান রাখার সক্ষমতা তিনি অনুভব করছেন।
খুনের মামলায় জামিন পেলেন সুশীল কুমার
স্টিভ স্মিথের এই সিদ্ধান্ত ক্রীড়াবিশ্বে বেশ আলোচিত। যেখানে একদিকে তিনি একদিনের ক্রিকেট থেকে সরে গেছেন, অন্যদিকে অলিম্পিক্সের কথা মাথায় রেখে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তার ক্যারিয়ার চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিক্সে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত হলে, এই মঞ্চে অংশগ্রহণ করার সুযোগ নিশ্চয়ই স্মিথের জন্য একটি বিশেষ মুহূর্ত হবে। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসে স্মিথের অবদান এক কথায় বিশাল। তার ভবিষ্যত পরিকল্পনাগুলি নিঃসন্দেহে ক্রিকেট দুনিয়াকে আরও উত্তেজনাপূর্ণ করে তুলবে।