বৃহস্পতিবার ভোররাতে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল অসমের বিস্তীর্ণ এলাকা এবং বাংলাদেশের শিলেট অঞ্চল। অসমের মরিগাঁও জেলা, গুয়াহাটি-সহ রাজ্যের বিভিন্ন অংশে এই কম্পন অনুভূত হয়। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি (NCS) জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫। ভূমিকম্পটি স্থানীয় সময় রাত ২টা ২৫ মিনিটে ভূপৃষ্ঠের ১৬ কিলোমিটার গভীরে আঘাত হানে। উৎপত্তিস্থল ছিল মরিগাঁও থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে।
প্রসঙ্গত, এই ভূমিকম্পের কম্পন বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলেও অনুভূত হয়। ভূমিকম্পটি কেবল অসম ও বাংলাদেশেই নয়, ভুটান এবং চিনের বিভিন্ন অংশেও এর প্রভাব পড়েছে। তবে, সেসময়ে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে ভূমিকম্পের ঝাঁকুনির কারণে অনেকেরই গভীর রাতে ঘুম ভেঙে যায় এবং আতঙ্কিত হয়ে কিছু মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল শিলং-এর ডাউকি ফল্টের কাছে হওয়ায়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় এই এলাকায় একাধিক আফটারশক হতে পারে। উল্লেখ্য, অসম ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত। রাজ্যটি সিসমিক জোন ৫-এর আওতায় পড়ায় এখানে প্রায়ই ভূমিকম্প হয়। এর আগে ১৯৫০ সালে অসম এবং তিব্বতে ৮.৬ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল এবং ১৮৯৭ সালে শিলংয়ে ৮.১ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল, যা এখনো পর্যন্ত অসমের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প বলে বিবেচিত।
এদিকে, সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে একটি ভূমিকম্পের জেরে কলকাতা, ভুবনেশ্বরসহ পূর্ব ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকা কেঁপে উঠেছিল। ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সালের এই ভূমিকম্পটি রিখটার স্কেলে ৫.১ মাত্রার ছিল এবং এর উৎপত্তিস্থল ছিল কলকাতা থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে, হলদিয়া থেকে ২৮৬ কিলোমিটার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের ৯১ কিলোমিটার গভীরে। এর প্রভাব বাংলাদেশেও পশ্চিমাঞ্চলের কিছু উপকূলীয় অঞ্চলে অনুভূত হয়েছিল। কলকাতা সিসমিক জোন ৪-এর আওতায় পড়লেও পূর্ব ভারত ভূমিকম্পের জন্য কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবেই পরিচিত। এছাড়াও, গত সপ্তাহে দিল্লি এবং তার আশেপাশের অঞ্চলেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৪, এবং এর কেন্দ্রস্থল ছিল দিল্লির ধৌলাকুঁয়া এলাকায়, যা মাটি থেকে পাঁচ কিলোমিটার গভীরে ছিল।
রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই আজ তৃণমূল কংগ্রেসের ‘বিশেষ’ অধিবেশন
উলেখ্য, অসমের ভূমিকম্প প্রাসঙ্গিক পরিস্থিতি এবং অঞ্চলের সিসমিক কার্যক্রমের কারণে একটি নিয়মিত ঘটনা হলেও, জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। যেহেতু এই অঞ্চলে ভূমিকম্পের ঝুঁকি সবসময় বিদ্যমান, তাই মানুষকে সতর্ক ও প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিশেষত শিলংয়ের ডাউকি ফল্ট এলাকায় আফটারশক-এর সম্ভাবনা থাকায় সংশ্লিষ্ট এলাকায় আরও মনোযোগী থাকতে হবে।