প্রতিদিনের মতো রেলপথে চলছিল হায়দরাবাদ থেকে হাওড়া আসা ফলকনুমা এক্সপ্রেস। কিন্তু এক অঘটন ঘটল মঙ্গলবার সকাল ৭টা নাগাদ। অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম জেলার সুম্মাদেবীর কাছে ট্রেনটির দুটি বগি আলাদা হয়ে যায়। একদিকে যেমন যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়, অন্যদিকে রেল সুরক্ষার ব্যাপারে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
প্রসঙ্গত, এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল শ্রীকাকুলামের পালাসার গ্রামের কাছে, যখন ট্রেনটি ট্র্যাকের ওপর দিয়ে চলছিল। প্রথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ট্রেনের দুটি এসি কামরার মাঝে কাপলিং (coupling) ভেঙে যাওয়ার কারণে দুই কামরা আলাদা হয়ে যায়। এর ফলস্বরূপ, ট্রেনটি দু'ভাগ হয়ে যায়। একাংশ সামনের দিকে এগিয়ে যায়, অন্য অংশ পিছনের দিকে সরে যায়। দুর্ঘটনার সময় ট্রেনের ভিতরে শতাধিক যাত্রী ছিলেন। হঠাৎ এক তীব্র ঝাঁকুনি অনুভব করেন যাত্রীরা, এবং পরক্ষণেই তারা দেখতে পান ট্রেনটি থেমে গেছে। এক যাত্রী জানালেন, “হঠাৎ একটা ঝাঁকুনি অনুভব করি, তারপর দেখি ট্রেনের গতি কমে এসেছে এবং দাঁড়িয়ে গেছে। ট্রেন থেকে নামতেই চমকে উঠি, কারণ পুরো ট্রেন দু'ভাগ হয়ে গিয়েছিল।”এই পরিস্থিতি দেখেই চালক দ্রুত ট্রেন থামিয়ে দেন এবং যাত্রীদের নিরাপদে বের করার ব্যবস্থা করেন। যাত্রীরা যখন নিরাপদে নামেন, তখন তারা দেখতে পান পুরো ট্রেনটি বিভক্ত হয়ে গেছে। তবে সৌভাগ্যবশত, এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
তাপপ্রবাহ ও গরমে সুরক্ষা: আইএমডি এর সতর্কতা ও পরামর্শ
উলেখ্য, এই ঘটনা জানার পর রেলের ইঞ্জিনিয়ার ও অন্যান্য আধিকারিকরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তারা মেরামতির কাজ শুরু করেন এবং কিছু সময়ের মধ্যে ট্রেনটি পুনরায় চালু করা হয়। তবে এর ফলে ওই লাইনে প্রায় দু’ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে, এবং ব্রহ্মপুর-বিশাখাপত্তনম লাইনে কয়েক ঘণ্টা ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। এ ঘটনায় আবারও রেলের যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রায় এক সপ্তাহ আগেই, কটকের কাছে বেঙ্গালুরু-কামাখ্যা এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়ে একটি বড় দুর্ঘটনা ঘটে, যেখানে প্রাণ হারিয়েছিলেন শুভঙ্কর রায় নামে এক যাত্রী। এর পরবর্তী ঘটনার পর, রেলের সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার দাবি উঠেছে। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই ঘটনায় কোনো প্রাণহানি বা গুরুতর আহতের ঘটনা ঘটেনি এবং তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত শুরু করেছে। তবে, এই ঘটনা ফের একবার প্রমাণ করে, রেলপথে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে। রেলওয়ের পক্ষে এ ধরনের ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক, বিশেষ করে যাত্রীদের জীবনের সুরক্ষার ক্ষেত্রে। ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা রোধ করার জন্য প্রয়োজন আরও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং নজরদারির ব্যবস্থা। তবুও, যাত্রীদের প্রতি রেলের সুরক্ষা দায়িত্ব পালন করা এখন সময়ের দাবি।