রামনবমী উপলক্ষে কলকাতা শহরে এবং রাজ্যের বিভিন্ন জেলা ও পুলিশ কমিশনারেটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দৃঢ়তর করা হয়েছে। বিশেষ করে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় লালবাজার কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে, যাতে কোনো ধরনের অশান্তি বা গোলমাল সৃষ্টি না হয়। পুলিশ কমিশনারেট এবং রাজ্যের দশটি জেলার প্রশাসনকে সতর্ক করা হয়েছে, এবং এই এলাকা গুলিকে সংবেদনশীল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অ্যাসানসোল, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা সহ গুরুত্বপূর্ণ জেলাগুলির পরিস্থিতি গুরুত্ব সহকারে মনিটরিং করা হবে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ১০টি জেলা ও কমিশনারেটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২৯ জন আইপিএস অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা নিশ্চিত করবেন যে, কোনো ধরনের উত্তেজনা বা বিশৃঙ্খলা যাতে না ঘটে।
প্রসঙ্গত, কলকাতায় এই বছর মোট ৫৯টি রামনবমী মিছিল অনুষ্ঠিত হবে, যার মধ্যে পাঁচটি মিছিল বড় আকারের হবে। এই মিছিলগুলি এন্টালি, পিকনিক গার্ডেন, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, হেস্টিংস এবং কাশীপুর এলাকা থেকে শুরু হবে। এসব মিছিলে উপস্থিত থাকবে পর্যাপ্ত পুলিশ বাহিনী। পুলিশ কমিশনারের নির্দেশ অনুযায়ী, মিছিলের নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি পুলিশ কর্মী ও আধিকারিকদের ‘প্রোটেকটিভ গিয়ার’ পরিধান করতে হবে, যাতে কোনো সহিংস হামলার ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিকার করা সম্ভব হয়। এছাড়াও, রামনবমী মিছিলে আকাশপথেও নজরদারি রাখা হবে। ড্রোনের মাধ্যমে মিছিলের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। মিছিলের আগে ও পরে পুলিশের টহলদার গাড়ি চলবে, এবং আশপাশের রাস্তাগুলিতেও নিয়মিত পুলিশী টহল দেওয়া হবে। গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে অতিরিক্ত সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে, যার মাধ্যমে পুলিশ মনিটরিং করবে মিছিলের পরিস্থিতি। এছাড়া, পুলিশের পোশাকে বডি ক্যামেরাও থাকবে, যা ভবিষ্যতে কোনও সমস্যা সৃষ্টি হলে পরিস্থিতি তদন্তের কাজে ব্যবহৃত হবে।
উলেখ্য, পুলিশ কমিশনারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, বাইক নিয়ে মিছিল করা যাবে না এবং মিছিলের জন্য নির্দিষ্ট রুটগুলো ছাড়া অন্য কোথাও মিছিল করলে তা তৎক্ষণাৎ আটকানো হবে। এমনকি, আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, অস্ত্রসহ মিছিলে অংশগ্রহণ করাও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে এবং এই বিষয়ে কড়া নজরদারি চালানো হবে। লালবাজারের অভ্যন্তরীণ সূত্রের খবর অনুযায়ী, পুলিশ কোনও রকম অস্বাভাবিক পরিস্থিতি এড়াতে এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুরোপুরি প্রস্তুত। পুলিশের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার এবং সঠিক নজরদারি ব্যবস্থা দ্বারা রামনবমীর মিছিল নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে এ দিনগুলোতে তৎপর থাকবে প্রশাসন।