অপেক্ষার অবসান। অবশেষে কাশ্মীর উপত্যকা দেশের বাকি অংশের সঙ্গে রেলপথে যুক্ত হতে চলেছে। দীর্ঘদিনের এই স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে আগামী ১৯ এপ্রিল, যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কাটরা থেকে শ্রীনগর পর্যন্ত রেলপথের উদ্বোধন করবেন। রেলপথের সূচনা হবে বিশেষ বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মাধ্যমে, যা কাশ্মীরে রেল যোগাযোগের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।
রেল সূত্রে জানা গেছে, কাটরা থেকে শ্রীনগর রেলপথের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে উপস্থিত থাকবেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এবং কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী উমর আবদুল্লা। ওই দিন প্রধানমন্ত্রী কাটরায় একটি জনসভা করবেন এবং বিশ্বের উচ্চতম রেল ও আর্চ সেতু চিনাব ব্রিজের পরিদর্শন করবেন, যা রেলের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এবার কাশ্মীরে রেলপথের বিস্তার শুধু একটি রেল পরিষেবা নয়, এটি ভারতের রেলওয়ে ইতিহাসে একটি মাইলফলক। কাটরা থেকে শ্রীনগর পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারণের জন্য তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ টানেল এবং, সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য, চিনাব ব্রিজ। এই সেতু আইফেল টাওয়ারের থেকেও উচ্চতম, এবং এটি হতে চলেছে বিশ্বের উচ্চতম রেল ও আর্চ সেতু। প্রাথমিকভাবে, পরিকল্পনা ছিল যে কাশ্মীরের এই রেলপথের উদ্বোধন হবে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে, তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভা নির্বাচনের আগে এটি শেষ না হওয়ায় কিছুটা বিলম্ব হয়। তবে শেষমেশ, ২০২৩ সালের শেষ দিকে কাজ সম্পন্ন হয় এবং বর্তমানে উদ্বোধনের জন্য সবকিছু প্রস্তুত।
ভারতে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বৈষম্য ও হয়রানির অভিযোগ: মার্কিন কমিশনের প্রতিবেদন
প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, শ্রীনগর থেকে সরাসরি দিল্লি পর্যন্ত রেল পরিষেবা চালু করার কথা ছিল, তবে মাঝখানে কিছু গোয়েন্দা রিপোর্টের কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়। শোনা যাচ্ছে, দিল্লি থেকে শ্রীনগর রেল পরিষেবা চালু করার বিষয়ে এখনও ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। তবে, কাটরা-শ্রীনগর রেলপথ আগামী এপ্রিলেই চালু হচ্ছে, যা কাশ্মীরের সঙ্গে ভারতের রেল যোগাযোগকে আরও মজবুত করবে। কাশ্মীরের এই রেলপথের বিস্তার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে একটি বিশেষ প্রকল্প, যা ভারতীয় রেলের উন্নতির পাশাপাশি কাশ্মীরের অর্থনৈতিক বিকাশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। রেল যোগাযোগ কাশ্মীরের মানুষের জন্য নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং পর্যটনকে আরও সমৃদ্ধ করবে। কাশ্মীরের জন্য এটি এক নতুন যাত্রা, যেখানে সড়ক পথের পাশাপাশি রেল যোগাযোগও কাশ্মীরকে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে আরও দৃঢ়ভাবে সংযুক্ত করবে। এবং, ১৯ এপ্রিলের রেলপথ উদ্বোধন কেবল কাশ্মীরের জন্যই নয়, ভারতের রেল ইতিহাসেও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হবে।