সংঘর্ষ বিরতি চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর গাজার আকাশে ফের মৃত্যুর মিছিল। রবিবার রাতেই দক্ষিণ গাজায় ইজরায়েলি সেনারা বিমান হামলা চালিয়েছে, যাতে ৫১ জন নিহত হয়েছেন। এই হামলার লক্ষ্য ছিল গাজার খান ইউনুস শহরের নাসির হাসপাতাল, যেখানে হামাসের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা ইসমাইল বারহুম চিকিৎসাধীন ছিলেন। হামলায় তিনি নিহত হন।
প্রসঙ্গত, ইজরায়েলি সেনাবাহিনী তাদের তরফ থেকে দাবি করেছে যে, হাসপাতালটি হামাসের জঙ্গিরা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার করছিল। তাদের দাবি, এই হামলায় হামাসের এক শীর্ষ কমান্ডারসহ বহু জঙ্গি নিহত হয়েছে। ইজরায়েলি সেনাবাহিনীর বরাতে জানা যাচ্ছে যে, ২০২৩ সাল থেকে চলতে থাকা যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ গাজায় নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে একাধিক নারী ও শিশু রয়েছে। ২০১৯ সালের পর থেকে হামাসের সঙ্গে ইজরায়েলের সংঘর্ষ তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে, গত কয়েক মাসে সংঘর্ষ বিরতি চুক্তি করেও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। দুই মাসের চুক্তির শেষে ফের হামলা এবং বিপর্যয়ের নতুন অধ্যায় শুরু হয়। ইজরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিক্রিয়া আসতে থাকে গাজার বিভিন্ন অঞ্চলে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে চুক্তির মাধ্যমে গাজার পণবন্দির মুক্তির জন্য এক সংঘর্ষ বিরতি চুক্তি সই হয়েছিল। তবে, এর মেয়াদ শেষ হতে না হতে গাজায় নতুন করে বিমান হামলা চালানো হয়, যেখানে হাজারো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও, ইজরায়েলি সেনারা লেবাননে হেজবোল্লার ঘাঁটিতেও হামলা চালিয়েছে। লেবানন দাবি করেছে, তাদের পক্ষ থেকে কোনও রকেট হামলা করা হয়নি, কিন্তু ইজরায়েল দাবি করে, তারা প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়েছে। ওই হামলায় অন্তত ৮ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
মেহুল চোকসির পলাতক থাকার পর বেলজিয়ামে অবস্থান এবং ভারত সরকারের উদ্যোগ
উলেখ্য, ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ইজরায়েলি সেনার এই হামলার উদ্দেশ্য পরিষ্কার করে জানিয়েছেন। তাঁর ভাষায়, "আমাদের লক্ষ্য হল হামাসকে গাজার মাটি থেকে পুরোপুরি নির্মূল করা। যতক্ষণ পর্যন্ত ইজরায়েলি পণবন্দিরা গাজায় বন্দী থাকবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা কোনো দয়া দেখাব না।" বর্তমানে, গাজার পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং সংকটময় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক সমাজের তরফে যুদ্ধবিরতির আহ্বান থাকলেও, ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে। একদিকে ইজরায়েলের দাবি, তারা হামাসের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে গাজার মানুষ এই যুদ্ধে নির্দয়ভাবে আক্রান্ত হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ৬০ জনেরও বেশি ইজরায়েলি পণবন্দি গাজার মধ্যে আটকে আছেন, এবং ইজরায়েলি সরকার তাদের মুক্তির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলেও পরিস্থিতি যে আরও সংকটময় হতে পারে, তা স্পষ্ট।