আগামী ১৬ মার্চ, দিল্লি সাক্ষী হতে চলেছে এক আন্তর্জাতিক গোপনীয়তা এবং নিরাপত্তা বিষয়ক ঐতিহাসিক কনফারেন্সের, যা গোয়েন্দা সংস্থাগুলির মধ্যে সম্পর্ক এবং কৌশলগত সহযোগিতার এক গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ হতে চলেছে। এ কনফারেন্সে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (NSA) অজিত দোভাল সভাপতিত্ব করবেন। বর্তমানে বিশ্বের নানা অঞ্চলে চলমান উত্তপ্ত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে, এই কনফারেন্সের আয়োজন বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের গোয়েন্দা প্রধানরা এই কনফারেন্সে উপস্থিত থাকবেন, যেখানে আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু হবে সন্ত্রাসবাদ এবং আন্তর্জাতিক অপরাধের মোকাবিলা। বিশেষত, কীভাবে গোয়েন্দা সংস্থাগুলির মধ্যে সহযোগিতা এবং তথ্য বিনিময় আরও কার্যকরভাবে করা যায়, সেই বিষয়টিই প্রধান আলোচনা হবে। কনফারেন্সে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে আমেরিকার ন্যাশনাল ইন্টালিজেন্স ডিরেক্টর তুলসী গাবার্ড, ক্যানাডার স্পাই চিফ ড্যানিয়েল রজার্স, এবং ব্রিটেনের MI6 প্রধান রিচার্ড মুরের। এছাড়া, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, নিউ জিল্যান্ড সহ অন্যান্য দেশের গোয়েন্দা প্রধানরা তাঁদের অভিজ্ঞতা এবং মতামত শেয়ার করবেন।বিশ্বের বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি অনেকটাই জটিল হয়ে উঠেছে, যেখানে একদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব, অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতি এবং চীনের সামরিক আধিপত্যের চ্যালেঞ্জ। বিশেষত, সম্প্রতি চিন, রাশিয়া এবং ইরান নৌবাহিনীর যৌথ মহড়া পরিচালনা করছে, যা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে। এরই মধ্যে, আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সম্প্রদায়ের মধ্যে একে অপরকে সমর্থন এবং সহযোগিতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে। এই কনফারেন্সের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী গোয়েন্দা সংস্থাগুলির মধ্যে সহযোগিতা এবং কৌশলগত তথ্য আদান-প্রদান বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বসন্ত উৎসব: বাংলায় নতুন রঙের উৎসবের সূচনা
এছাড়া, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ফেব্রুয়ারি মাসে আমেরিকা সফরকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং ন্যাশনাল ইন্টালিজেন্স ডিরেক্টর তুলসী গাবার্ডের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ বৈঠকে ভারতের শুল্ক নিয়ে আমেরিকার বিরক্তি এবং পাকিস্তান ও আফগান নাগরিকদের প্রবেশাধিকার বন্ধ করার বিষয়টি উঠে আসতে পারে। সেই সঙ্গে, ক্যানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন মার্ক কার্নে। এর ফলে, ক্যানাডার স্পাই চিফ ড্যানিয়েল রজার্সের দিল্লি সফর দুই দেশের সম্পর্কের নতুন দিক খুলে দিতে পারে। বিশ্বের একাধিক শক্তিধর দেশের গোয়েন্দা প্রধানদের উপস্থিতিতে, এই কনফারেন্স আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলির মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান এবং সহযোগিতা বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। বর্তমানে যখন বিশ্ব নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন, তখন এমন একটি আন্তর্জাতিক কনফারেন্স একে অপরকে সহযোগিতা এবং একটি নিরাপদ ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে চলেছে। দিল্লির এই গ্লোবাল ইন্টালিজেন্স কনফারেন্স শুধু এক মহামান্য অনুষ্ঠান নয়, বরং এটি বিশ্বের সন্ত্রাসবাদ, আন্তর্জাতিক অপরাধ এবং সামরিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ হতে চলেছে। বিশ্বে বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি এক জটিল স্তরে পৌঁছেছে, এবং এই কনফারেন্স একে অপরকে সমর্থন ও সহযোগিতা করার মাধ্যমে সেই চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলায় নতুন দিক নির্দেশ করবে।