গত তিন বছর ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর, অবশেষে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। মঙ্গলবার সৌদি আরবের জেড্ডায় আমেরিকার বিদেশসচিব মার্কো রুবিওর সঙ্গে বৈঠকের পর ইউক্রেনের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, শীঘ্রই রাশিয়াও এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মতি জানাবে। ট্রাম্প বলেছেন, “আমরা এই যুদ্ধের অবসান চাই। দুই দেশেই বহু মানুষ মারা যাচ্ছে। আশা করি, রাশিয়া এবার শান্তির দিকে এগিয়ে আসবে।”
প্রসঙ্গত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনার পর, আমেরিকা জানায় যে, তারা ইউক্রেনকে ৩০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে এবং ইউক্রেন এই প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। এর পর, ইউক্রেন জানায়, তারা রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি। এতে আশা করা হচ্ছে, ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য দেওয়ার উপর স্থগিতাদেশ উঠে যেতে পারে। এছাড়া, আমেরিকা জানিয়েছে যে, রাশিয়াকে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ পদক্ষেপ রাশিয়ার সঙ্গে উত্তেজনা কমাতে এবং যুদ্ধের অবসান ঘটানোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।
গত ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প এবং জ়েলেনস্কির মধ্যে তীব্র বাক্বিতণ্ডা হয়, যার ফলে ইউক্রেনের সাথে আমেরিকার খনিজ চুক্তি ভেস্তে যায়। এই পরিস্থিতির পর ইউক্রেনের ওপর চাপ তৈরি করতে একের পর এক সামরিক সাহায্য স্থগিত ঘোষণা করেন ট্রাম্প। এরপর ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। তবে, প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কি পরবর্তীতে জানান, পরিস্থিতির জন্য তিনি "অনুতপ্ত"। তিনি আবারো যুদ্ধবিরতি নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত হন, যদিও সেই সময়েও রুশ বাহিনী ইউক্রেনের উপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছিল। সোমবার রাতে কিভে রাশিয়ার বিমান হামলা চলছিল, এবং মঙ্গলবার রাতে পাল্টা ড্রোন হামলা চালায় ইউক্রেন।এতসবের পর, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দাবি, ইউক্রেনের তরফে এটি ছিল সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা, যা গত তিন বছরের যুদ্ধে রাশিয়ার বিরুদ্ধে চালানো হয়েছে। তবে, এ পরিস্থিতির মধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত ইউক্রেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সংকটের সমাধানে রাশিয়ার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মাদের পাশাপাশি অন্য এক দলের সঙ্গে বিদেশ সফরে গৌতম গম্ভীর
উলেখ্য, যুদ্ধবিরতির এই সিদ্ধান্ত দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে সহায়ক হতে পারে, তবে বাস্তব পরিস্থিতি কী হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। বিশ্ব সম্প্রদায় আশা করছে, রাশিয়া এই প্রস্তাবে সম্মত হলে, যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে নতুন একটি যুগের সূচনা হতে পারে। প্রথমবারের মতো, ইউক্রেন যুদ্ধবিরতির জন্য একটি প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক শান্তির পক্ষে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। যদিও রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া এখনও অজানা, তবে এই মুহূর্তে, ইউক্রেনের জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমর্থন এবং আমেরিকার চাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি রাশিয়া এই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়, তবে তা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব শান্তির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হতে পারে।