রাতের আকাশের সৌন্দর্য সবসময়ই আমাদের মুগ্ধ করে, তবে কিছু দৃশ্য এমন হয় যা একদম অনন্য। সম্প্রতি, আকাশে ঘটতে চলেছে এক বিরল মহাজাগতিক ঘটনা , ৬টি গ্রহের একসাথে সারিবদ্ধ হওয়া। এটি যাকে বলা হয় ‘প্ল্যানেটারি অ্যালাইনমেন্ট, যা পৃথিবী থেকে একটি অত্যন্ত রোমাঞ্চকর দৃশ্য সৃষ্টি করবে। এই বিরল ঘটনার ফলে পৃথিবী জুড়ে আকাশে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখার সুযোগ পাওয়া যাবে, যা খুব কম সময়েই ঘটে।
এই মহাজাগতিক অ্যালাইনমেন্টের মধ্যে মোট ৬টি গ্রহ থাকছে। তারা হল: শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, নেপচুন এবং ইউরেনাস। যদিও এই গ্রহগুলির মধ্যে লক্ষ লক্ষ কিলোমিটার দূরত্ব রয়েছে, তবে একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থানে থাকলে তা চোখে পড়বে। বিশেষভাবে, শুক্র এবং শনি গ্রহ খুব কাছাকাছি অবস্থানে আসবে। যদিও এই গ্রহগুলি ঠিকভাবে এক লাইনে অবস্থান করবে না, তবে তারা একদিকে বেশ কাছে আসবে, যা মহাজাগতিক এক অদ্ভুত দৃশ্য সৃষ্টি করবে।
উলেখ্য, এটি একটি খুবই বিরল ঘটনা, যা ঘটে কেবলমাত্র পৃথিবীর কক্ষপথ এবং অন্যান্য গ্রহগুলির অবস্থানের কারণে। নাসা জানিয়েছে, জানুয়ারি মাসে মঙ্গল গ্রহ সূর্যের বিপরীত দিকে অবস্থান করবে, যার ফলে এটি আরও বড় এবং উজ্জ্বলভাবে দেখা যাবে। বিশেষত, যখন মঙ্গল গ্রহ বিপরীত অবস্থানে থাকবে, তখন তার উজ্জ্বলতা অনেকটাই বেড়ে যাবে, যা আকাশে বিশেষভাবে লক্ষণীয় হবে।এই প্ল্যানেটারি অ্যালাইনমেন্ট ২১ জানুয়ারি থেকে দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। সবচেয়ে ভালো সময় হবে সূর্যাস্তের পরবর্তী ৪৫ মিনিট পর্যন্ত। এই সময়টিতে আকাশে গ্রহগুলির অবস্থান সবচেয়ে স্পষ্ট থাকবে এবং প্রায় তিন ঘণ্টা পর্যন্ত এই দৃশ্য দেখা যাবে।
তৃণমূলেই যোগ দিচ্ছেন আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লা
নাসা জানিয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে শুক্র এবং শনি গ্রহকে দেখা যাবে, আর বৃহস্পতি গ্রহ থাকবে মাথার উপরে। পূর্ব দিকে উঁকি দেবে মঙ্গল গ্রহ। তবে, ভারত থেকেও এই মহাজাগতিক দৃশ্য দেখা যাবে যদি আবহাওয়া অনুকূল থাকে। আমাদের দেশের বেশিরভাগ শহরে এই দৃশ্য দেখা যাবে এবং খালি চোখেই শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি এবং শনি গ্রহ দেখতে পাওয়া যাবে। তবে, নেপচুন এবং ইউরেনাসের মতো দূরবর্তী গ্রহগুলিকে দেখতে টেলিস্কোপ ছাড়া কোনভাবেই দেখতে পাবেন না।
প্রসঙ্গত, এই প্ল্যানেটারি অ্যালাইনমেন্ট শুধু একটি সাধারণ আকাশের দৃশ্য নয়, এটি আমাদের মহাবিশ্ব সম্পর্কে নতুন একটি উপলব্ধি প্রদান করে। এর মাধ্যমে গ্রহের কক্ষপথের সম্পর্ক, মহাজাগতিক শক্তি এবং মহাকাশের নিয়মাবলী বোঝা সম্ভব হয়। এমন বিরল দৃশ্য আমাদের ভাবনায় এক নতুন মাত্রা যোগ করে এবং পৃথিবী ও মহাবিশ্বের রহস্যগুলোর প্রতি আমাদের আগ্রহ আরও গভীর করে। মহাজাগতিক এই অভূতপূর্ব দৃশ্যটি শুধু আকাশের সৌন্দর্য নয়, বরং এটি বিজ্ঞান, প্রকৃতি এবং মহাবিশ্বের প্রতি আমাদের অবাক বিস্ময়ের এক মহাকাব্যিক অভিজ্ঞতা।