ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষেত্রে আগাম সতর্কতা না থাকার কারণে বহু মানুষের ক্ষতি হতে পারে। তবে প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে বর্তমানে আমরা সহজেই ভূমিকম্পের আগাম সতর্কতা পেতে পারি, যা বিপদ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে। স্মার্টফোনে থাকা একটি ছোট্ট সেন্সর, যাকে একসিলেরোমিটার বলা হয়, এটি ভূমিকম্পের কম্পন অনুভব করতে সক্ষম এবং পুশ নোটিফিকেশনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে। সম্ভাব্য ভূমিকম্পের আগে, একটি সেন্ট্রাল সার্ভার থেকে কম্পনের এলাকার প্রতি সিগনাল পাঠানো হয়। স্মার্টফোনের একসিলেরোমিটার সেসময় কম্পন অনুভব করতে পারে এবং তা সরাসরি ফোনে সতর্কবার্তা আকারে প্রদর্শিত হয়। এর ফলে, ভূমিকম্পের আগেই বাসিন্দারা সতর্ক হয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন।
স্মার্টফোনে ভূমিকম্পের সতর্কতা পেতে কী করবেন?
প্রযুক্তির সাহায্যে আমরা এখন অনেক বেশি নিরাপদ থাকতে পারি, তবে এর জন্য কিছু সেটিংস করতে হবে:
১. অ্যান্ড্রয়েড ফোনে: প্রথমে সেটিংস অ্যাপ খুলুন। তারপর সেফটি অ্যান্ড ইমারজেন্সি বিভাগে গিয়ে আর্থকোয়েক অ্যালার্ট অপশনটি চালু করুন।
২.. আইফোনে: প্রথমে সেটিংস এ যান। এরপর নোটিফিকেশন অপশনে গিয়ে নিচে ইমারজেন্সি এলার্ট চালু করুন। যদি এই অপশনগুলো না থাকে, তবে আপনাকে মাইসেক অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে। এই অ্যাপে আপনার লোকেশন ট্র্যাক করার অনুমতি দিয়ে কম্পন বেশি হলে সতর্কবার্তা পাবেন।
ভূমিকম্পের সতর্কতা পদ্ধতিঃ গুগল থেকে ভূমিকম্প সতর্কবার্তা আসলে দু'টি স্তরের সতর্কতা দেয়:
১. কম্পনের মাত্রা ৩ বা ৪ হলে সাধারণ সতর্কতা জানানো হয়, যাতে আপনি প্রস্তুত থাকতে পারেন।
২. কম্পন যদি ৪.৫ বা তার বেশি হয়, তবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।
এভাবে প্রযুক্তি আমাদের প্রাণ বাঁচানোর এক গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হয়ে উঠছে।
কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গে ভূমিকম্পের প্রভাব
গত মঙ্গলবার, কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, দুই দিনাজপুর এবং শিলিগুড়ির বাসিন্দারা বিশেষভাবে এই ভূমিকম্প অনুভব করেন। ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল নেপাল, যেখানে ৯৩ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে লেবুচে থেকে এটি সৃষ্টি হয়। স্থানীয় সংবাদ অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকালে সাড়ে ছ'টা নাগাদ নেপাল তিব্বত সীমান্তে ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে, এবং তার প্রভাব দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় পড়েছিল। প্রযুক্তির সাহায্যে ভূমিকম্পের আগাম সতর্কতা পেয়ে জীবন রক্ষা করা সম্ভব। স্মার্টফোনে সঠিক সেটিংস ও অ্যাপ ব্যবহার করে আপনি সতর্ক থাকতে পারেন। এর মাধ্যমে, ভূমিকম্পের আগেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারলে অনেক মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে।