চিনের পশ্চিম সিজাং প্রদেশে গতকাল সন্ধ্যায় ঘটে যাওয়া শক্তিশালী ভূমিকম্পের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি ও ইউনিয়ন মিনিস্ট্রি অফ আর্থ সায়েন্সের বরাত অনুযায়ী, এই ভূমিকম্পের এপিসেন্টার ছিল তিব্বতের পশ্চিম সিজাং প্রদেশে। ভূমিকম্পটি স্থানীয় সময় ৬:৩৫ মিনিটে আঘাত হানে এবং রিখটার স্কেলে এর তীব্রতা ছিল ৭.১। প্রথম ভূমিকম্পের পর, একের পর এক আফটার শক অনুভূত হতে থাকে।
প্রসঙ্গত, এখনও পর্যন্ত ৩২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, এবং আহতের সংখ্যা অনেক বেশি। ভূমিকম্পের পরপরই এই এলাকার বেশিরভাগ জায়গায় বাড়ি, দোকান ও অন্যান্য অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এবং অনেক জায়গায় ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়েছে মানুষ। ভূমিকম্পের সঙ্গে সঙ্গে, একাধিক আফটার শকও অনুভূত হয়। স্থানীয়রা জানান, প্রথম ভূমিকম্পের পরই ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয় এবং অনেকেই বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন। এদিনের ভূমিকম্পে কলকাতা ও গোটা ভারতও কেঁপে ওঠে। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে, বিশেষ করে বিহার, দিল্লি, এনসিআর, জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়ি-সহ উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলা ভূমিকম্প অনুভব করেছে। সকাল ৫:৪১ মিনিটে প্রথম ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়। এরপর সকাল ৬:৩৫ মিনিটে ৭.১ ম্যাগনিটিউডের আরও একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর পরপরই ৪টি আফটার শকও অনুভূত হয়।
যুজবেন্দ্র চাহাল এবং ধনশ্রী ভার্মার সম্পর্কের তিক্ততা
এদিকে, বিহারে শেওহর ও মুজফফরপুর সহ বিভিন্ন অঞ্চলেও ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৭.১ ম্যাগনিটিউড। এসব অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং মানুষজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নেপালে ভূমিকম্পটি এতটাই তীব্র ছিল যে, সেখানে বেশ কয়েকটি জায়গায় বাড়ির জানালা ও ফ্যান দুলছিল, এবং বাসনপত্র পড়ে ভেঙে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে নেপালে ভয়াবহ ভূমিকম্পে বহু প্রাণহানি ও ধ্বংসপ্রাপ্তি ঘটেছিল, এবং তৎকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করিয়ে দিয়েছে এই ভূমিকম্পের ভয়াবহতা। এক নেপালি বাসিন্দা জানান, "ভূমিকম্পের সময় ফ্যান দুলছিল, খাটও দুলছিল এবং কাচের বাসনপত্র ভেঙে পড়ছিল। আমি আতঙ্কিত হয়ে বাচ্চাকে কোলে তুলে নিয়ে বাড়ির বাইরে চলে যাই।"
ভূমিকম্পের তীব্রতা অনুযায়ী, রিখটার স্কেলে ৪.৯ মাত্রা পর্যন্ত মৃদু, ৫ থেকে ৬.৯ পর্যন্ত মাঝারি, ৭ থেকে ৭.৯ পর্যন্ত তীব্র, এবং ৮ বা তার বেশি অতি তীব্র ভূমিকম্প বলে গণ্য করা হয়। এর মানে, আজকের ভূমিকম্পটি ছিল একাধিক মানুষের জীবনের জন্য ভয়াবহ। এখন পর্যন্ত চিনের পশ্চিম সিজাং, নেপাল ও ভারতীয় অঞ্চলে বহু মানুষ আহত হয়েছে, এবং এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন এলাকায় উদ্ধার কাজ শুরু করেছে, এবং ভূমিকম্পের আফটার শকগুলির কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। এছাড়া, আন্তর্জাতিক ত্রাণ দলও ভূমিকম্প বিধ্বস্ত অঞ্চলে সহায়তা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভূমিকম্পের পরবর্তীকালে ভূতাত্ত্বিক পদক্ষেপ ও সতর্কতা জারি করা হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে আরও বড় কোনো ভূমিকম্পের জন্য জনগণ প্রস্তুত থাকতে পারে। এমন পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়ে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভূমিকম্পের সতর্কতা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করার জন্য প্রয়াস নেওয়ার সময় এসেছে।