বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে খেলার স্বপ্ন শেষ হলো টিম ইন্ডিয়ার। গত দু’বছর ধরে ফাইনালে উঠে আসলেও, এবার সেই সুযোগ হাতছাড়া করেছে তারা। ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার বর্ডার গাভাসকর ট্রফির শেষ ম্যাচে ৬ উইকেটে পরাজিত হওয়ার পর তাদের আর কোনো সম্ভাবনা রইল না ডব্লুটিসি ফাইনালে প্রবেশের। এ পরাজয়ের পর, সমর্থকদের আর কোনো অঙ্ক কষতে হবে না, কারণ অস্ট্রেলিয়া এখন দক্ষিণ আফ্রিকার পর দ্বিতীয় দল হিসেবে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ, লাল বলের ক্রিকেটকে আরও জনপ্রিয় করার জন্য আইসিসি চালু করেছে। দুই বছরের সাইকেলের শেষে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে থাকা দুই দল ফাইনাল খেলবে। গত দুটি বছরে ভারত ও নিউ জ়িল্যান্ড, তারপর ভারত ও অস্ট্রেলিয়া ফাইনাল খেললেও, প্রতিবারই পরাজিত হয়েছে টিম ইন্ডিয়া। তবে, এবারও সুযোগ ছিল ভারতের সামনে। বিশেষত, ভারতের সবচেয়ে বড় সাফল্য ছিল চলতি বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়, আর সেই সাফল্যের পর আরও একটা বড় অর্জন আসার আশায় ছিলেন সমর্থকরা। অফিসিয়ালি ২০২৪ সালে ভারতের জন্য ছিল ঘরের মাঠে দুটি টেস্ট সিরিজ়। প্রথমে দুর্বল বাংলাদেশকে হারিয়ে ভারত যখন আশা ছিল, কিউয়িদের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে নিজেদের জয়ধারা বজায় রাখবে, কিন্তু তা হয়নি। কিউয়িদের কাছে ০-৩ এ সিরিজ হার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জয়টাও অপ্রতুল হয়ে দাঁড়ায়। সেই হারের পর, অস্ট্রেলিয়া সিরিজে ৪-১ এ জয় ছাড়া আর কোনো বিকল্প ছিল না ভারতের সামনে, কিন্তু তা সম্ভব হয়নি।
উলেখ্য, ভারতীয় দলের বোলিংয়ে একমাত্র স্থির অস্ত্র হিসেবে ছিলেন জশপ্রীত বুমরা। সিরাজ তার সঙ্গী হলেও, তৃতীয় সিমার হিসেবে একাধিক পরিবর্তন হতে থাকে। সিরাজ ব্যর্থ হওয়ায়, বুমরাই এককভাবে দলের বোলিংয়ের প্রধান দায়িত্ব পালন করেছেন। ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রেও এমনটা ছিল, কখনও যশস্বী জয়সওয়াল, কখনও ঋষভ পন্থ বা নীতীশ রেড্ডি— তবে কোনোটিতেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখা সম্ভব হয়নি। এর ফলে, দলের সামগ্রিক পারফরম্যান্স খুব একটা সন্তোষজনক ছিল না। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়া টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সকল বিভাগে ভারত থেকে অনেক এগিয়ে ছিল। পারথ টেস্টের পাটা উইকেট বাদ দিলে, বাকি চারটি ম্যাচে ভারতকে পুরোপুরি টপকে গিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ভারতীয় দল ধারাবাহিকতা না রাখতে পারায়, সেই সুযোগটি কাজে লাগিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এই পরিস্থিতিতে, ভারতের জন্য আর কোনো পিছুটান রইল না। তাদের পরবর্তী বড় চ্যালেঞ্জ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ২ ম্যাচের সিরিজে হলেও, তা এখন আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে না।