বিশ্বের বিমান পরিবহণ ব্যবস্থায় নতুন যুগের সূচনা হতে চলেছে, আর তার অংশ হিসেবে ভারতের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান আইআইটি মাদ্রাজ এবং বৈদ্যুতিক বিমান নির্মাণকারী স্টার্টআপ ইপ্লেন যৌথভাবে চালু করতে যাচ্ছে উল্লম্বভাবে ওঠা নামায় সক্ষম এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা। এই নতুন উদ্যোগের লক্ষ্য হল, এমন একটি বিমান পরিষেবা তৈরি করা যা রানওয়ে ছাড়াই, সরাসরি রাস্তায় ওঠা-নামা করতে সক্ষম।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কে ? প্রকাশ্যে শপথের দিনক্ষণ
উলেখ্য, আইআইটি মাদ্রাজ এবং ইপ্লেনের মধ্যে এক কোটি ডলারের চুক্তি সই হয়েছে। এই উদ্যোগের আওতায় ইপ্লেন সংস্থা ৭৮৮টি উল্লম্বভাবে ওঠা নামায় সক্ষম এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স নির্মাণ করবে। এই বিমানগুলি আইসিএটিটি নামক কোম্পানির কাছে সরবরাহ করা হবে, যা দীর্ঘদিন ধরে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। বিশ্বের কিছু দেশে এমন ধরনের উল্লম্বভাবে ওঠা নামায় সক্ষম এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা চালু রয়েছে, কিন্তু ভারতে এখনও এটি অপরিচিত। তবে, আইআইটি মাদ্রাজ এবং ইপ্লেনের উদ্যোগ সফল হলে, নয়াদিল্লি হবে এমন একটি শহর যেখানে এই প্রযুক্তি চালু হবে। পরবর্তীতে, এই ধরনের বিমানগুলি দেশের প্রতিটি জেলায় মোতায়েন করার পরিকল্পনা রয়েছে। ভারত সরকার সাম্প্রতিক সময়ে উল্লম্বভাবে ওঠা নামায় সক্ষম যানবাহন, বিশেষ করে ড্রোনের ব্যবহার নিয়ে বেশ গুরুত্ব দিয়েছে। বিশেষত, মানববিহীন উড়ুক্কু যানে মালপত্র পরিবহণের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার কাজ করছে, এবং এই উদ্যোগের ফলে পরিবহণ ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ইপ্লেন ছাড়াও ভারতে আর্চার এভিয়েশন এবং সরলা এভিয়েশন মতো স্টার্টআপ সংস্থাগুলি এই ধরনের উল্লম্বভাবে ওঠা নামায় সক্ষম বিমান নির্মাণে কাজ করছে। এছাড়া, অ্যাপ ক্যাব সংস্থা উবরও এ ধরনের পরিষেবায় যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে এবং তারা বিমান ট্যাক্সির একটি প্রোটোটাইপ তৈরি করেছে, যার পরীক্ষামূলক উড়ান চলছে। এই উদ্যোগ সফল হলে, বড় শহরগুলির যানজট উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে। ইপ্লেনের প্রতিষ্ঠাতা সত্য চক্রবর্তী সম্প্রতি রয়টার্সের কাছে এই নতুন প্রযুক্তি নিয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ২০২৬ সালের শেষ ত্রৈমাসিকের মধ্যে উল্লম্বভাবে ওঠা নামায় সক্ষম এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। তাঁর সংস্থা বছরে ১০০টি ইউনিট উৎপাদন করতে সক্ষম হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই, ইপ্লেন লগ্নিকারীদের কাছ থেকে দুই কোটি ডলার সংগ্রহ করতে পেরেছে। তবে, নতুন ধরনের বিমান তৈরি এবং তার জন্য প্রয়োজনীয় সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য আরও ১০ কোটি ডলার তোলার পরিকল্পনা রয়েছে।এটা স্পষ্ট যে, উল্লম্বভাবে ওঠা নামায় সক্ষম এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের মাধ্যমে ভারতের পরিবহণ এবং চিকিৎসা পরিষেবায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। আইআইটি মাদ্রাজ এবং ইপ্লেনের এই যুগান্তকারী উদ্যোগ ভারতের জন্য নতুন প্রযুক্তির সূচনা করবে, যা ভবিষ্যতে দেশের প্রতিটি জেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।