কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতাল, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবার এক নতুন রেকর্ড তৈরি করে সবার মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। গত পাঁচ দিনে ১৭৫ জন রোগীর গলব্লাডার অপারেশন সম্পন্ন করেছে হাসপাতালের চিকিৎসক দল, যার সবক’টিই সফল হয়েছে। এই অসাধ্য সাধন সম্ভব হয়েছে ১৫ জন দক্ষ চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতাল কর্মীদের সমন্বিত প্রচেষ্টায়।
এই সাফল্য শুধু কলকাতার জন্য নয়, গোটা দেশের চিকিৎসা ইতিহাসে একটি নজিরবিহীন ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই উদ্যোগে উচ্ছ্বসিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ, চিকিৎসক, নার্স এবং কর্মীদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "এসএসকেএম হাসপাতাল নতুন রেকর্ড তৈরি করেছে, যা প্রমাণ করে যে সরকারি হাসপাতালও অত্যন্ত সফলভাবে এবং দ্রুততার সাথে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে সক্ষম।"
মহাকুম্ভ যেতে হুড়োহুড়িতে নয়াদিল্লি রেল স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু ১৮ জনের
মুখ্যমন্ত্রী তাঁর এক্স হ্যান্ডলেতে আরও লেখেন, "এটি একটি বিশেষ উদ্যোগ, যা গলব্লাডার রোগীদের দ্রুত চিকিৎসা প্রদান করেছে। একই সঙ্গে প্রমাণিত হয়েছে যে, যদি চিকিৎসকরা একসঙ্গে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেন, তবে অসাধ্য সাধন সম্ভব।" তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, এই পাঁচ দিনে ৩৯০টি বড় অস্ত্রোপচারও সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে, যা এই বিশেষ উদ্যোগের বাইরে। এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, রোগীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সংখ্যক অপারেশন করা সম্ভব হচ্ছিল না। এই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য হাসপাতালের চিকিৎসকরা একত্রিত হয়ে একাধিক অপারেশন করার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁদের সম্মিলিত প্রয়াসের ফলস্বরূপ এই রেকর্ড গড়া সম্ভব হয়েছে।
এছাড়া, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "এ রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থা দেশব্যাপী অনেকটা এগিয়ে। এই সাফল্য আবারও প্রমাণ করল যে সরকারি হাসপাতালগুলিতেও আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা সম্ভব।" সরকারি হাসপাতালের এই অসাধারণ উদ্যোগে রোগী এবং তাঁদের পরিজনরা সন্তুষ্ট। এক রোগীর অভিমত, "এটা সত্যিই প্রশংসনীয়। যাঁরা বলেন সরকারি হাসপাতালে ভাল চিকিৎসা হয় না, তাঁদের এসএসকেএম হাসপাতালে এসে দেখে যেতে বলব। এখানে সরকারি চিকিৎসা পরিষেবা কাকে বলে, তা আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন।" এটি শুধুমাত্র এসএসকেএম হাসপাতালের জন্য নয়, বরং দেশের অন্য সব হাসপাতালের জন্য একটি মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের সব হাসপাতালকে ‘মিশন মোড’ initiative গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “অপেক্ষমাণ রোগীদের দ্রুত চিকিৎসা প্রদানে এই মডেল অনুসরণ করা উচিত।”এই সাফল্য দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার একটি নতুন দিক উন্মোচন করেছে, যেখানে সরকারি হাসপাতালও একের পর এক রেকর্ড গড়ে চিকিৎসা সেবায় আধিপত্য বিস্তার করতে পারে।