আজ থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন, যা চলবে দুই দিনব্যাপী। কলকাতার বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত এই সম্মেলনে বিশ্বের ৪০টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। ২০০ জন প্রতিনিধি সহ মোট ৫ হাজার বিশিষ্ট শিল্পপতি এবং শিল্প বিশেষজ্ঞ উপস্থিত থাকবেন। এর মধ্যে ২০টি দেশকে বিশেষ পার্টনার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই ২০টি দেশের রাষ্ট্রদূতরা কলকাতায় পৌঁছেছেন এবং তারা সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন।
বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের এবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী সেরিন টোবগে সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করবেন। তিনি গত অক্টোবর মাসে মুখ্যমন্ত্রীকে নিশ্চিত করে জানিয়েছিলেন যে তিনি এই সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন। এর পাশাপাশি, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনও সম্মেলনে যোগ দেবেন। তিনি রাজ্যের উন্নয়নে আরও বেশি বিনিয়োগ আনতে আগ্রহী, তবে তার আগে জমিনীতি সুদৃঢ়করণের দিকে মনোনিবেশ করেছেন। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই নিউটাউনে সিলিকন ভ্যালি তৈরি করেছে, যা ভবিষ্যতে আরও বেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে সহায়ক হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবারের সম্মেলনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন, বিশেষত আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে। সম্মেলনে কতটা বিনিয়োগ আসছে এবং কোন কোন শিল্পপতি তাদের বিনিয়োগের ইচ্ছাপ্রকাশ করছেন, তা ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গাজা ভূখণ্ডের দখল নেবে আমেরিকা, দাবি ট্রাম্পে
প্রসঙ্গত, বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন এবারে এক নতুন দৃষ্টিকোণ থেকেও গুরুত্ব পাচ্ছে। মহিলা মন্ত্রীদের বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা সম্মেলনের অতিথি আপ্যায়ন ও অন্যান্য প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন। প্রথম সারির মহিলা মন্ত্রীদের মধ্যে শশী পাঁজা এবং চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য রয়েছেন, এবং দ্বিতীয় সারিতে বীরবাহা হাঁসদা এবং জ্যোৎস্না মান্ডি দায়িত্ব পালন করবেন। যদিও সম্মেলনের প্রতি বিরোধীদের সমালোচনা রয়েছে। রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন মূলত প্রতি বছর একটি উৎসব হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে বিনিয়োগের কথা বলা হলেও বাস্তবে খুবই কম টাকা এসেছে। তিনি উল্লেখ করেন, "এখন পর্যন্ত যে কয়টি বিজিবিএস অনুষ্ঠিত হয়েছে, তাতে কোথাও উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ হয়নি। ২০২১ সালের পর ডাবরের কারখানা, কেশরাম রেয়ন, নৈহাটি এবং ডানকুনির বিস্কুট তৈরির কারখানাগুলি বন্ধ হয়ে গেছে।"
উলেখ্য, এমন একটি পরিস্থিতিতে, এবারের সম্মেলন নিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া থাকলেও, মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ইতিবাচক উদ্যোগের কথা বলা হচ্ছে। এই সম্মেলন কতটা কার্যকর হবে এবং বিনিয়োগের পরিমাণ কি লক্ষ্যে পৌঁছাবে, তা দেখতে আগ্রহী সকলেই। একদিকে যেমন বিনিয়োগের ইচ্ছা প্রকাশ ও উন্নয়নমূলক উদ্যোগের কথা বলা হচ্ছে, অন্যদিকে বিরোধীরা সরকারের কার্যকলাপ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, বিশেষত সম্মেলনকে কেন্দ্র করে অর্থের অপচয়ের অভিযোগ তুলে। ভবিষ্যতে এই ধরনের সম্মেলনের প্রকৃত সুফল কতটা দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে, তা সময়ই বলে দেবে।