বাংলায় এবারের সরস্বতী পুজো হয়ে উঠেছে এক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, এই ধরনের পুজো বাংলায় এর আগে কখনো ঘটেছিল কি না, বিশেষত কলেজগুলোতে পুলিশ পাহারায় পুজো আয়োজনের বিষয়টি নিয়ে। কোথাও পুলিশি নিরাপত্তা অবলম্বন করা হয়েছে, আবার কোথাও রাজনৈতিক চাপের কারণে, অথবা আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য, পুজো আয়োজন নিয়ে হুমকির ঘটনাও ঘটেছে। এসব ঘটনাগুলোর মধ্যে বেশ তীব্র রাজনৈতিক চাপানউতোরও রয়েছে, যা বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে অব্যাহত।
কলকাতার বিজেপির দাপুটে নেতা ভিক্ষা করছে তারাপীঠ মহাশ্মশানে! ছবি ভাইরাল!
এবার, পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার খেজুরি ২ নম্বর ব্লকে অবস্থিত খেজুরি মক্তব প্রাইমারি স্কুলে সরস্বতী পুজো আয়োজন নিয়ে কথা বলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তার মতে, ১৪০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো এখানে সরস্বতী পুজো হয়েছে। তিনি তৃণমূলের সাব্বির আলি এবং আলিমুদ্দিন মণ্ডলকে ধন্যবাদ জানিয়ে লিখেছেন, "হিন্দুরা অবশেষে জেগে উঠেছেন"। এতে রাজনৈতিক মন্তব্যের পাশাপাশি তিনি এই প্রথম শ্রী শ্রী সরস্বতী পুজো হওয়ার বিষয়টিকে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেছেন। পুজোর শেষে তিনি লিখেছেন, "জাগো হিন্দু, জাগো।" তবে, এমনই পুজো আয়োজনে সমস্যাও এসেছে। নদিয়ার হরিণঘাটায় একটি স্কুলের পুজো আয়োজনের ক্ষেত্রে স্থানীয় তৃণমূল বুথ সভাপতি আলিমুদ্দিন মণ্ডল হুমকি দিয়েছিলেন যে, সেখানে পুজো আয়োজন করা যাবে না। তবে, এলাকার মানুষ একত্রিত হয়ে সেই হুমকি উড়িয়ে দিয়ে নির্বিঘ্নে পুজো সম্পন্ন করেন। শুভেন্দু অধিকারী আবার এই ঘটনা উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন, যেখানে একতাবদ্ধ মানুষের শক্তির জয় হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
উলেখ্য, এদিকে, বিজেপি পক্ষের দাবি, পুলিশ পাহারায় সরস্বতী পুজো আয়োজন লজ্জার বিষয়, এবং এরকম ঘটনা কখনো ঘটেনি। বিজেপি এমপি সৌমিত্র খাঁ সংসদে সরব হয়ে বলেন, "এটা লজ্জার ব্যাপার"। অন্যদিকে, তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের দাবি, এরকম কোনও ঘটনা হয়নি, এবং তিনি এই ঘটনাকে 'রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে উস্কানি' বলেই আখ্যায়িত করেন। এছাড়া সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম বলেছেন, "বাগদেবী কোনো দিন কল্পনাও করেননি যে এসপিজি পাহারায় তাঁর পুজো হবে," এবং তাতেই তিনি মন্তব্য করেছেন যে, আজকাল কলেজগুলির ছাত্র সংসদে রাজনীতি নয়, বরং দখলদারিতেই অধিক রাজনীতি হয়ে থাকে। এবারের সরস্বতী পুজো বাংলার রাজনৈতিক এবং সামাজিক অবস্থাকে আরো তীব্রভাবে তুলে ধরেছে। বিশেষ করে যে স্কুলে আগে কখনো পুজো হয়নি, সেখানে এই পুজো আয়োজনের রাজনৈতিক দিকটি আলোচনায় আসছে, এবং তার সঙ্গে যোগ হয়েছে পুলিশের পাহারা এবং রাজনৈতিক চাপানউতোরের ঘটনা।