মহাকুম্ভ মেলা চলাকালীন উজ্জয়িনী নদীতে পুণ্যস্নান করতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে আরও দুই পুণ্যার্থীর মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। পশ্চিমবঙ্গের মালদা ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার বাসিন্দা ওই দুই যুবকও, গত বুধবারের ভিড়ের মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন। এর ফলে, মহাকুম্ভ মেলায় এই বিপর্যয়ে নিহত পশ্চিমবঙ্গের পুণ্যার্থীদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল চার।
উলেখ্য, মৃত পুণ্যার্থীদের মধ্যে একজন হলেন ২৮ বছরের অমিয় সাহা, যিনি মালদা জেলার বৈষ্ণবনগরের বাসিন্দা। অন্যজন হলেন ৩৫ বছরের বিনোদ রুইদাস, যিনি পশ্চিম বর্ধমানের জামুরিয়ার বাসিন্দা এবং ৩০ জনের একটি পুণ্যার্থীর দলের সদস্য ছিলেন। দুই যুবকই পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। এটি প্রথম নয়, এর আগেও মহাকুম্ভ মেলায় পদপিষ্ট হয়ে দুই মহিলার মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছিল। ওই মহিলারা হলেন কলকাতার গল্ফগ্রিনের বাসিন্দা বাসন্তী পোদ্দার এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনীর বাসিন্দা উর্মিলা ভুঁইয়া। তাঁরা সকলেই 'মৌনি অমাবস্যা' দিনে পুণ্যস্নান করতে গিয়েছিলেন, কিন্তু ভিড়ে পদপিষ্ট হয়ে তাঁদের মৃত্যু হয়।
শিক্ষাক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের ঘোষণা কেন্দ্রীয় বাজেটে
ইতিমধ্যে, অমিয় সাহার মৃত্যু নিয়ে সম্প্রতি বিতর্ক শুরু হয়েছে। তাঁর বাবা অভিযোগ করেছেন, চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরও সঠিকভাবে চিকিৎসা করা হয়নি এবং তাঁকে হাসপাতালে ফেলে রাখা হয়েছিল। এই অবহেলার কারণেই তার ছেলে মারা গেছে বলে দাবি করেছেন তিনি। এর সঙ্গে, অমিয় সাহার দেহ হাসপাতাল থেকে মুক্তি পাওয়ার পরেও, প্রশাসন কর্তৃক মৃত্যুর শংসাপত্র দেওয়া হয়নি, যার ফলে ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া শুরু করতে দীর্ঘ সময় লেগেছে। একই অভিযোগ করেছেন বিনোদ রুইদাসের পরিবারও, তারা জানায়, মৃতদেহ ফিরিয়ে দেওয়ার সময়ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের যথাযথ ডেথ সার্টিফিকেট সরবরাহ করেনি। এদিকে, পশ্চিমবঙ্গ থেকে মহাকুম্ভ মেলায় যাওয়া আরও ন’জন পুণ্যার্থীর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁদের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, বুধবারের দুর্ঘটনার পর থেকে ওই পুণ্যার্থীদের আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, এ ব্যাপারে আরও এক বার্তা, বিনোদ রুইদাসের ভাই জানান, তাঁর দাদা নদীতে স্নান করতে অপেক্ষা করছিলেন, তখনই ভিড়ের কারণে পদপিষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হন। আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু পরে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। শুক্রবার সকালে বিনোদ রুইদাসের দেহ তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে আনা হয়। মহাকুম্ভ মেলা একটি ঐতিহ্যবাহী তীর্থযাত্রা হলেও, এবছরের বিপর্যয়ে প্রাণহানির ঘটনা মেলার আয়োজকদের জন্য এক কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুণ্যস্নান করতে আসা মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও অধিক সতর্কতা এবং ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে।