Flash news
    No Flash News Today..!!
Wednesday, March 19, 2025

পরিবারের জোর করে বিয়ে দেওয়া থেকে পালিয়ে নিজেকে রক্ষা করল কিশোরী

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk :

মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার পর একাদশ শ্রেণিতে কলা বিভাগে ভর্তি হয়েছিল ১৭ বছরের কিশোরী। তার স্বপ্ন ছিল উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে একটি ভালো চাকরি পাওয়া। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে বিয়ের প্রস্তাব আসতেই বিপত্তি শুরু। প্রথমে আপত্তি করলেও, শেষ পর্যন্ত বাড়ির লোকেরা তার মতামত উপেক্ষা করে একরকম জোর করে বিয়ে ঠিক করে ফেলেন। 

উলেখ্য,  এ অবস্থায় কিশোরী আর নিজের মতামত তুলে ধরতে পারেননি। তবুও, তার সাহস ও অদম্য ইচ্ছাশক্তি তাকে বাধা অতিক্রম করতে সাহায্য করেছে। একদিন রাতে, শীতের মধ্যে অন্ধকারে বাড়ি থেকে পালিয়ে ১৫ কিলোমিটার দূরে এক বন্ধুর বাড়িতে পৌঁছায় সে। একান্ত নিজের সিদ্ধান্তেই পালিয়ে গিয়ে, প্রশাসনের সাহায্য চায় কিশোরী। পরে, চাইল্ড লাইন প্রোটেকশনের হস্তক্ষেপে তাকে উদ্ধার করে সরকারি হোমে পাঠানো হয়। এই ঘটনা ঘটেছে জলপাইগুড়ি জেলার ক্রান্তি এলাকার একটি স্থানীয় বিদ্যালয়ের ছাত্রী হিসেবে। ১১ শ্রেণির পড়াশোনা করছিল কিশোরী, কিন্তু তার পড়াশোনার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় পরিবারের চাপ। তার বাবা-মা একটি ছেলের সাথে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং কিশোরীকে বাধ্য করেন সেখানে উপস্থিত থাকতে। সে জানত যে, এটি তার ভবিষ্যতের জন্য বিপদজনক। তার একমাত্র লক্ষ্য ছিল পড়াশোনা করা এবং একদিন নিজের পায়ে দাঁড়ানো।

আফগান ক্রিকেটে নয়া আসা মেল জোন্স

তবে, একদিন পরিবারের চাপ সহ্য না করে কিশোরী সিদ্ধান্ত নিল যে তাকে বিয়ে হতে দেবেনা। সে টিফিনের টাকা নিয়ে শীতের রাতে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। ১৫ কিলোমিটার দূরে ময়নাগুড়িতে গিয়ে তার বন্ধুকে জানায় পুরো ঘটনা। তার বন্ধুর সহায়তায় চাইল্ড লাইন প্রোটেকশনকে ফোন করে কিশোরী প্রশাসনের সাহায্য প্রার্থনা করে। এরপর, স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং সিডব্লুসির সাহায্যে তাকে উদ্ধার করা হয়।  কিশোরী জানায়, তার বয়স ১৭ বছর। বিয়ের বয়স এখনও হয়নি, কিন্তু পরিবারের চাপের কারণে তাকে বিয়ে দিতে চাচ্ছিল। তার মতে, এটি আইনবিরুদ্ধ এবং তার স্বপ্ন পূরণে বাঁধা। কিশোরীর এই সাহসিকতার জন্য তাকে 'বীরাঙ্গনা' পুরস্কারের জন্য সুপারিশ করা হচ্ছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। 


প্রসঙ্গত,  জেলা চাইল্ড প্রোটেকশন অফিসার সুদীপ ভদ্র জানান, কিশোরীর ফোন পাওয়ার পর তারা দ্রুত উদ্ধার অভিযানে নামেন এবং তাকে নিরাপদ স্থানে পাঠান। তিনি বলেন, “এই ধরনের ঘটনা চিহ্নিত করতে আমাদের স্কুলে বিভিন্ন ক্যাম্প আয়োজন করা হয়, যেখানে শিশুদের আইনি অধিকার ও চাইল্ড ম্যারেজ প্রতিরোধ নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা হয়।”এই ঘটনায়, কিশোরী কেবল নিজের ভবিষ্যৎ রক্ষা করেননি, বরং সমাজের সামনে একটি শক্তিশালী বার্তা দিয়েছেন—এমনকি বিপদের মুখে পড়ে, সাহসিকতার মাধ্যমে নিজের অধিকার রক্ষা করা সম্ভব। জেলা প্রশাসন ও চাইল্ড লাইন প্রোটেকশনের এই উদ্যোগের মাধ্যমে সমাজে শিশুবিয়ে প্রতিরোধে এক বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এমনকি কিশোরীর বাবা, এলাকার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি, তবে তার পরিবার যদি সঠিকভাবে কিশোরীর ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতো, তাহলে হয়তো একটি ভিন্ন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারত। কিশোরীর এই সাহসিকতা সমাজের অন্যান্য মেয়েদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে, যারা নিজেদের জীবন এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে স্বপ্ন দেখে এবং তা বাস্তবায়নে প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে দ্বিধা করে না।

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Bidisha Karmakar

Tags: