প্রতি বছর কার্তিক পূর্ণিমা তিথিতে পালন করা হয় রাধা কৃষ্ণের প্রেমের উত্সব রাস পূর্ণিমা । আজ ১৫ই নভেম্বর, তথা ২৯ কার্তিক, শুক্রবার শ্রীকৃষ্ণের প্রেমের উৎসব রাসযাত্রা । মূলত এটি বৈষ্ণবদের উৎসব। জয়দেবের ‘গীতগবিন্দম্, চণ্ডীদাসের ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’, মালাধর বসুর ‘শ্রীকৃষ্ণবিজয়’ কাব্যে রাসের কথা বলা হয়েছে। বৈষ্ণব ভাবনায় শ্রীকৃষ্ণপ্রেম এবং রাধা সাধনাই হল রাস।
রাসের তাৎপর্য কী ?
'রাস' শব্দটি এসেছে 'রস' থেকে। আনন্দ আস্বাদনই রাসের মুল কথা। বৃন্দাবনদাসের ‘শ্রীশ্রীচৈতন্যভাগবত’ এবং কৃষ্ণদাস কবিরাজের ‘শ্রীশ্রীচৈতন্যচরিতামৃত’-কাব্যে বিস্তৃত আলোচনা করা হয়েছে রস বা লীলা সম্পর্কে। রাস মানেই মিলন। কৃষ্ণ হলেন জগতের পুরুষ, বাকি মানবসামজ প্রকৃতিতুল্য। তাই সকল গোপিনী এবং নরনারী রাধাভাব বা মঞ্জরী ভাবনায় ভাবিত হন। এই পরম জ্ঞানের কথা জানানোর জন্যই কৃষ্ণের বৃহৎ লীলা বা রাসের প্রকাশ। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের রাস বাংলা, মথুরা, বৃন্দাবন, ওড়িশা, অসম, মণিপুর, পূর্ববঙ্গের আরও বেশ কিছু জায়গায় দেখা যায়। তবে মূল আরাধ্য রাধাকৃষ্ণ হলেও অঞ্চল ভেদে বিভিন্ন দেবদেবীর পুজো করতে দেখা যায়। যেমন-কোচবিহারের মদনমোহন মন্দিরে রাস হয় এবং এক মাস মেলা বসে এখানে। এই মেলা বিরাট বিখ্যাত। এখানে রাসে দুর্গাপুজো, কালীপুজোও করতে দেখা যায়। আবার নবদ্বীপ, শান্তিপুর, ফুলিয়া, বর্ধমানের বেশ কিছু বৈষ্ণবপাট বাড়ি, সমাজবাড়ি এবং আখড়ায় মাটির মূর্তিতে রাধাকৃষ্ণের পুজো হয়। গৌর-নিতাই, পঞ্চতত্ত্বের নামে চলে নাম-সংকীর্তন এবং নগর পরিক্রমা। শ্রীচৈতন্যের স্মৃতি বিজড়িত জায়াগায় পালন হয় বিশেষ পুজো। কীর্তন, পদাবলী, পালাগান এবং রাসের সখীদের অষ্টকলা প্রদর্শন মূল আকর্ষণ থাকে।
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা অনুসারে –
পূর্ণিমা তিথি শুরু–
বাংলা– ২৯ কার্তিক, শুক্রবার।
ইংরেজি– ১৫ নভেম্বর, শুক্রবার।
সময়– সকাল ৬টা ২১ মিনিট।
পূর্ণিমা তিথি শেষ –
বাংলা– ২৯ কার্তিক, শুক্রবার।
ইংরেজি– ১৫ নভেম্বর, শুক্রবার।
সময়– রাত ২টো ৫৯ মিনিট।
পূর্ণিমা ব্রতপবাস।