Flash news
    No Flash News Today..!!
Sunday, February 9, 2025

বেথেলহেম থেকে বাংলা সর্বধর্মাবলম্বীদের আন্দদের উৎসব বড়দিন

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

বড়দিন বা ক্রিসমাস একটি বাৎসরিক খ্রিস্টীয় উৎসব। বড়দিন মানে আমরা বুঝি সান্তাক্লস। ২৫ ডিসেম্বর তারিখে যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন উপলক্ষে এই উৎসব পালিত হয়। ঐতিহাসিক রোমান উৎসব অথবা উত্তর গোলার্ধের দক্ষিণ অয়নান্ত দিবসের অনুষঙ্গেই ২৫ ডিসেম্বর তারিখে যিশুর জন্মজয়ন্তী পালনের প্রথাটির সূত্রপাত হয়। আপনারা জানেন কি ? খ্রিস্টমাস (Christmas) কথাটি কোথা থেকে এল? ইংরেজি খ্রিস্টমাস শব্দটি "খ্রিস্টের মাস উৎসব" শব্দবন্ধটির যুগ্ম অর্থ থেকে এসেছে। শব্দটির ব্যুৎপত্তি ঘটে মধ্য ইংরেজি Christemasse ও আদি ইংরেজি Cristes msse শব্দ থেকে। "Cristes" শব্দটি আবার গ্রিক Christos এবং "msse" শব্দটি লাতিন missa পবিত্র উৎসব শব্দ থেকে উদগত। 

পবিত্র ধর্মগ্রন্থ‌ বাইবেল অনুযায়ী, দুই হাজার বছরের কিছু আগে মাতা মেরির গর্ভে জন্মেছিলেন যিশু। মেরি ছিলেন ইসরাইলের নাজারেথবাসী যোসেফের বাগদত্তা। সৎ, ধর্মপ্রাণ ও সাধু এই মানুষটি পেশায় ছিলেন কাঠমিস্ত্রি। একদিন এক স্বর্গদূতের কাছ থেকে মরিয়ম জানতে পারেন, মানুষের মুক্তির পথ দেখাতে তার গর্ভে আসছেন ঈশ্বরের পুত্র। দূত শিশুটির নাম যিশু রাখার নির্দেশ দেন। স্বর্গদূতের এ কথা শুনে দারুণভাবে বিচলিত হন মেরি। তিনি তাকে বলেন, ‘স্বামীর শারীরিক স্পর্শ ছাড়াই তিনি কীভাবে সন্তানের জন্ম দেবেন।’ প্রকৃতিগতভাবে একটি খ্রিষ্টীয় ধর্মানুষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও, একাধিক অ-খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ও মহাসমারোহে বড়দিন উৎসব পালন করে। উপহার প্রদান, সংগীত, বড়দিনের কার্ড বিনিময়, গির্জায় ধর্মোপাসনা, ভোজ, এবং বড়দিনের বৃক্ষ, আলোকসজ্জা, মালা, মিসলটো, যিশুর জন্মদৃশ্য, এবং হলি সমন্বিত এক বিশেষ ধরনের সাজসজ্জার প্রদর্শনী আধুনিককালে বড়দিন উৎসব উদ্‌যাপনের অঙ্গ। 

প্রয়াত বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার শ্যাম বেনেগাল

উলেখ্য, ১৭ শতকে, ক্যাথলিক বা অ্যাংলিকান চার্চের বিপরীতে, পিউরিটানদের ক্রিসমাস উদযাপন নিষিদ্ধ করার আইন ছিল।  ফরাসি বিপ্লবের সময় নাস্তিকতাবাদী কাল্ট অফ রিজন ক্ষমতা গ্রহণের সাথে সাথে , খ্রিস্টান ক্রিসমাস উপাসনা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল এবং সরকারের ক্লারিকাল বিরোধী নীতির অধীনে জোরপূর্বক থ্রি কিংস কেকের নামকরণ করা হয়েছিল "সমতা কেক"। পরবর্তীতে, বিংশ শতাব্দীতে, সোভিয়েত ইউনিয়নে রাষ্ট্রীয় নাস্তিকতার মতবাদের অধীনে ক্রিসমাস উদযাপন নিষিদ্ধ করা হয় । নাৎসি জার্মানিতে , সামগ্রিকভাবে সংগঠিত ধর্মকে রাষ্ট্রের শত্রু হিসাবে আক্রমণ করা হয়েছিল এবং পার্টির বর্ণবাদী মতাদর্শের সাথে সারিবদ্ধ হওয়ার জন্য ক্রিসমাস উদযাপনকে কলুষিত করা হয়েছিল।  


প্রসঙ্গত, বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় অলিগলি আলোকসজ্জায় সেজে উঠেছে। কেউ পরিবারের সাথে বা কেউ কেউ বন্ধুদের সাথে এই দিনটি উদযাপন করেন। খ্রিষ্টানরা নানাভাবে বড়দিন উদ্‌যাপন করে থাকে। এগুলির মধ্যে বর্তমানে গির্জার উপাসনায় যোগ দেওয়া সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও অন্যতম জনপ্রিয় প্রথা বলে বিবেচিত হয়। অনেক পরিবারেই বড়দিন উপলক্ষে বিশেষ পারিবারিক ভোজসভা আয়োজিত হয়। ভোজসভার খাদ্যতালিকা অবশ্য এক এক দেশে এক এক রকমের হয়। বড়দিনের গাছ ও চিরহরিৎ শাখাপ্রশাখার ব্যবহার দক্ষিণ অয়নান্তকে ঘিরে প্যাগান প্রথা ও অনুষ্ঠানগুলির খ্রিষ্টীয়করণের ফলস্রুতি। ইংরেজি ভাষায় "Christmas tree" শব্দটির প্রথম লিখিত উল্লেখ পাওয়া যায় ১৮৩৫  সালে। শব্দটি গৃহীত হয়েছিল জার্মান ভাষা থেকে। মনে করা হয়, আধুনিক বড়দিনের বৃক্ষের প্রথাটির সূচনা ঘটেছিল অষ্টাদশ শতাব্দীর জার্মানিতে। যদিও অনেকের মতে, এই প্রথাটি ষোড়শ শতাব্দীতে মার্টিন লুথার চালু করেছিলেন।প্রথমে তৃতীয় জর্জের স্ত্রী রানি শার্লোট এবং পরে রানি ভিক্টোরিয়ার রাজত্বকালে আরও সফলভাবে প্রিন্স অ্যালবার্ট জার্মানি থেকে ব্রিটেনে এই প্রথাটির আমদানি করেন। ১৮৪১ সাল নাগাদ বড়দিনের বৃক্ষের প্রথাটি সমগ্র ব্রিটেনে যথেষ্ট প্রসার লাভ করেছিল। ১৮৭০-এর দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনগণও বড়দিনের বৃক্ষের প্রথাটি গ্রহণ করে বড়দিনের বৃক্ষ আলোকসজ্জা ও গহনার দ্বারা সুসজ্জিত করা হয়।

 বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্রেই বড়দিন একটি প্রধান উৎসব তথা সরকারি ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়। এমনকি অখ্রিষ্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ কয়েকটি দেশেও মহাসমারোহে বড়দিন উদযাপিত হতে দেখা যায়। অধিকাংশ দেশে প্রতি বছর বড়দিন পালিত হয় ২৫ ডিসেম্বর তারিখে। তবে রাশিয়া, জর্জিয়া, মিশর, আর্মেনিয়া, ইউক্রেন ও সার্বিয়ার মতো কয়েকটি ইস্টার্ন ন্যাশানাল চার্চ ৭ জানুয়ারি তারিখে বড়দিন পালন করে থাকে।

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Bidisha Karmakar

Related News