বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
শুক্রবার তাঁকে অভিনন্দন জানালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি জানান, ‘অধ্যাপক মহম্মদ ইউনুস-সহ বাংলাদেশে যাঁরা কার্যভার গ্রহণ করেছেন, তাঁদের প্রতি আমার আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভকামনা। আশা করি, তাঁদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও উন্নত হবে। বাংলাদেশের উন্নতি, শান্তি, প্রগতি ও সর্বস্তরের মানুষের আরও ভালো হোক - এই কামনা করি। ওখানকার ছাত্র, যুব, শ্রমিক, কৃষক, মহিলা থেকে শুরু করে সকলের প্রতি অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো। আশা করি, খুব শীঘ্রই সংকট কেটে যাবে, শান্তি ফিরে আসবে। শান্তি ফিরে আসুক তোমার-আমার এই ভালোবাসার ভুবনে। আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভালো থাকলে, আমরাও ভালো থাকবো।’
পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরইমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হল। সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হলেন শান্তিতে নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনুস। বৃহস্পতিবার ইউনুসের নেতৃত্বে শপথ নিল ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তী সরকার। ১৬ সদস্যের উপদেষ্টা মণ্ডলীতে রয়েছেন দুই সংখ্যালঘু। এর আগে এদিন বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ করা হয় তীব্র হাসিনা বিরোধী বলে পরিচিত মোহম্মদ আসাদুজ্জামানকে। শপথ গ্রহণের পরই এদিন ইউনুসকে অভিনন্দন জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এদিন স্থানীয় সময় দুপুর ২ টো ১০ নাগাদ ইউনুস প্যারিস থেকে ঢাকায় এসে পৌঁছন। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ-জামান। আবেগে বাকরূদ্ধ হয়ে পড়েন ৮৪ বছরের ইউনুস। বললেন, ‘আজ বড় গৌরবের দিন।’ দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই এখন তাঁর প্রধান চ্যালেঞ্জ। সেজন্য তিনি বলেন, ‘আমরা দ্বিতীয় স্বাধীনতা পেয়েছি। এই স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হবে।’ তাঁর ঘোষণা, ‘আইন-শৃঙ্খলা ফেরানোই হবে অগ্রাধিকার।’ তবে গত কয়েকদিনে যে নৈরাজ্য, সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন হয়েছে তাকে ‘ষড়যন্ত্রের অংশ’ বলে সাফাই দিয়েছেন তিনি। সংরক্ষণের বিরোধিতা করে পুলিসের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আবু সইদ। তাঁর কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন ইউনুস।
এরইমধ্যে বৃহস্পতিবারও হিংসা অব্যাহত বাংলাদেশে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে লুঠতরাজ, ডাকাতির খবর পাওয়া গিয়েছে। এই অবস্থায় রাতপাহারা দিতে শুরু করেছেন এলাকাবাসীরাই। পুলিসি নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে মিরপুর, মোহম্মদপুর, বছিলা, কালশী, ইসিবি চত্বর, উত্তরা, বাড্ডা ও ধানমণ্ডি এলাকায় ডাকাতির চেষ্টা হচ্ছে। অনেক জায়গায় মসজিদ থেকে মাইকে এই নিয়ে সতর্ক করা হচ্ছে সকলকে। এই অবস্থায় বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জানিয়েছেন, সবকিছু স্বাভাবিক হতে তিন-চারদিন লাগবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ছাত্র রাজনীতি শুরুর পক্ষে বিভিন্ন মহল থেকে দাবি জানানো হয়েছে। এর তীব্র বিরোধিতা করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সংগঠনের পক্ষে সহ-সমন্বায়ক মহম্মদ মহিউদ্দিন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘প্রতিটি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের রাজনীতি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হলো। আপনারা যারা (ছাত্রদল, বামদল, শিবির) এখনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি চালু করতে চাইছেন তাদের সবাইকে বলতে চাই-আমরা আপনাদের ফায়দা নেওয়ার জন্য এই বিপ্লব করিনি। জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতিটি ক্যাম্পাসে দলীয় রাজনীতির কবর রচিত হয়েছে। তবে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচিত ছাত্র সংসদ থাকবে যার মাধ্যমেই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরি হবে।’