“আমি দুঃখিত। আমি এই পরাজয়ের দায় স্বীকার করছি।”
ব্রিটেনে সাধারণ নির্বাচনে পরাজয় মেনে নিয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। নির্বাচনের ফলাফলে দেখা যায়, বিরোধী লেবার পার্টি ৬৫০ আসনের হাউস অব কমেন্সে ৪১২টি আসনে জয় নিশ্চিত করেছে। পূর্ণাঙ্গ ফলপ্রকাশের আগেই পরাজয় স্বীকার করে নিলেন ব্রিটেনের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক। “লেবার পার্টি সাধারণ নির্বাচনে জিতেছে। আমি কেয়ার স্টার্মারকে এই জয়ের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছি। আজই শান্তিপূর্ণ ভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হবে।”
২০২২ সালের দীপাবলির সময় ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনক ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদে বসে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন।
লেবার পার্টি ১৪ বছরের টোরি ‘শাসনের’ অবসান ঘটিয়েছেন। ব্রিটেনে সরকার গড়তে চলেছেন কেয়ার স্টার্মার। শ্রমিকের ছেলে কেয়ার স্টার্মার ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন নিশ্চিত করে ফেলেছেন এই বাম ঘেঁষা মধ্যপন্থী নেতা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, চারশো আসনের গণ্ডিও পেরিয়ে যেতে পারে লেবার পার্টি।
লেবার পার্টির প্রথম নেতা কেয়ার হার্ডির নামানুসারেই তাঁর নামকরণ করেছিলেন তাঁর বাবা-মা। লন্ডনের বাইরে এক ছোট শহরে বড় হয়েছেন তিনি। ছোটবেলাটা বেশ অভাবেই কেটেছিল তাঁর।
১৯৬২ সালে লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন এই লেবার নেতা। তাঁর বাবা কারখানার শ্রমিক ছিলেন, মা ছিলেন নার্স। ছোটবেলায় একাধিক জায়গায় সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন স্টার্মার। খুব কম বয়সেই জড়িয়ে পড়েন রাজনীতিতে। মাত্র ১৬ বছর বয়সে যোগ দেন লেবার পার্টির যুব সংগঠনে। রাজনীতির পাশাপাশি সমানতালে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন মেধাবী স্টার্মার। লিডস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সামাজিক আইনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
ব্রিটেনের (Britain) মানবাধিকার আইনজীবী হিসাবে কুইনস কাউন্সিলে নির্বাচিত হন ২০০২ সালে। সরকারি আইনজীবী একাধিক হেভিওয়েট মামলা লড়েছেন। ২০১৫ সালে নামেন নির্বাচনী ময়দানে। লেবার পার্টির গড় হলবোর্ন অ্যান্ড সেন্ট প্যানক্রাস থেকে জিতে হাউস অফ কমন্সে নির্বাচিত হন।
২০২০ সালে লেবার পার্টির প্রধান নির্বাচিত হন। বামপন্থী দল হলেও লেবার পার্টির (Labour Party) সদস্যদের কাছে নিজেকে মধ্যপন্থী নেতা হিসাবে তুলে ধরেন স্টার্মার। দায়িত্ব নেওয়ার পরে প্রথম নির্বাচনেই বাজিমাত। ২০২৪ সাধারণ নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে লেবার পার্টি। ১৪ বছর পরে ব্রিটিশ রাজনীতিতে পালাবদল ঘটিয়েছেন। নিরামিষাশী নেতা হিসাবেও যথেষ্ট জনপ্রিয় এই নেতা। তাঁর সমাজপন্থী আদর্শে ভর করে কি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে ব্রিটেনের বেহাল অর্থনীতি? আমজনতার হাল ফেরাতে পারবেন স্টার্মার?