কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ভারত সেবাশ্রম সংঘের স্বামী প্রণবানন্দকে উল্লেখ করে বলেছেন, “স্বামী প্রণবানন্দ না থাকলে বাংলাদেশে মিশে যেত বাংলা।”
শাহ আরও বলেন, “মমতা দিদি ভোটে জেতার জন্য ত্যাগী, তপস্বী, সন্ন্যাসীদের আক্রমণ বন্ধ করুন। আপনি এমনিও জিতবেন না।“
শাহের এই বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, স্বামী প্রণবানন্দ কিভাবে বাংলাকে বাংলাদেশে মিশে যাওয়া থেকে রক্ষা করেছিলেন?
ইতিহাসবিদদের মতে, ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের সময় বাংলার বিভাজন একটি জটিল ও বিতর্কিত প্রক্রিয়া ছিল। ধর্ম, ভাষা এবং রাজনৈতিক বিশ্বাসের ভিত্তিতে এই বিভাজন করা হয়েছিল।
অনেক বাঙালি হিন্দু ভারতে থাকার পক্ষে ছিলেন, অন্যদিকে অনেক বাঙালি মুসলিম পাকিস্তানে যোগদান করতে চেয়েছিলেন।
এই সময়, স্বামী প্রণবানন্দ বাংলার হিন্দুদের মধ্যে একাত্মতা ও জাতীয়তাবোধ জাগ্রত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
তিনি বারবার বক্তৃতা দিয়ে এবং লেখালেখির মাধ্যমে বাঙালি হিন্দুদের ভারতের সাথে থাকার আহ্বান জানান।
তার এই প্রচেষ্টার ফলে অনেক বাঙালি হিন্দু ভারতে থাকার সিদ্ধান্ত নেন।
অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, যদি স্বামী প্রণবানন্দ না থাকতেন, তাহলে আরও বেশি বাঙালি হিন্দু পাকিস্তানে থাকতেন। এবং বাংলার হিন্দু জনসংখ্যা অনেক কম হয়ে যেত।
তবে, এটাও সত্য যে, স্বামী প্রণবানন্দের ভূমিকা ছাড়াও আরও অনেক কারণ ছিল যার ফলে বাংলার বিভাজন রোধ করা সম্ভব হয়নি।
ধর্মীয় বিভেদ, রাজনৈতিক চাপ এবং আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি এই বিভাজনের জন্য মূলত দায়ী ছিল।
অমিত শাহের বক্তব্য সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত রয়েছে।
কিছু লোক মনে করেন, তিনি সঠিকভাবেই স্বামী প্রণবানন্দের অবদান তুলে ধরেছেন।
অন্যরা মনে করেন, তিনি ধর্মীয় মেরুকরণের জন্য এই বক্তব্য ব্যবহার করছেন।
যাই হোক না কেন, স্বামী প্রণবানন্দ নিঃসন্দেহে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন যিনি বাংলার ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ।