ডায়াবিটিস রোগটি এখন ঘরে ঘরে। অসংখ্য মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। আর আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে এই রোগের আশঙ্কা হল সবথেকে বেশি। কারণ এই দেশের মানুষের জিনের মধ্যে প্রবেশ করে গিয়েছে সুগার। বংশপরম্পরায় বেড়ে চলেছে এই রোগ।
আসলে আমাদের শরীরে ইনসুলিন নামক একটি হরমোন রয়েছে। এই হরমোন শরীরে সুগারকে নিয়ন্ত্রণ করে। এবার এই হরমোন কম বেরলে, কাজ না করতে পারলে বা একবারেই না বেরলে শরীরে সুগার বাড়ে। আর এই সমস্যার নামই হল ডায়াবিটিস (Diabetes)। এক্ষেত্রে একদম শরীরে ইনসুলিন তৈরি না হলে বলা হয় টাইপ ১ ডায়াবিটিস। এটা ছোট বয়সে হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে ইনসুলিন কাজ করে না বা কাজ করলেও তা পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈরি হয় না। এর নাম হল টাইপ ২ ডায়াবিটিস। এই অসুখ বেশি বয়সে হয়। ভারতে সাধারণত টাইপ ২ ডায়াবিটিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ উপকারি একটি উপাদান নিমপাতা।
অত্যন্ত সহজলভ্য এই উপাদানটি রক্তের শর্করা কমাতে দারুণ কার্যকরী। নিম এমন একটি উপাদান যার ফুল-ফল-পাতা-বীজ-কাণ্ড সবই কাজে আসে। ত্বকের রোগ, জ্বালা, জ্বর, সংক্রমণ সব রোগেই কিন্তু নিমের উপকার দারুণ।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে নিম
নিম পাতাকে ডায়াবেটিসের ওষুধ বলা হয়। NCBI-এ প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে, এটি আয়ুর্বেদেও সেরা ওষুধ হিসাবে বিবেচিত হয়। নিম পাতার অ্যান্টি-হাইপারগ্লাইসেমিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
আমাদের দেহে ইনসুলিন ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণেও কাজ করে নিম। গবেষণা থেকে জানা গেছে নিম পাতা ইনসুলিন উত্পাদনকারী কোষকে সুস্থ করে তুলতে সাহায্য করে।
নিমে মূলত কী কী যৌগ থাকে?
নিমের মধ্যে বিবিধ প্রকার সক্রিয় যৌগ বর্তমান, যেমন- আজাডিরেকটিন, নিমবিন, নিমবিডল, নিমবোলিনিন, জেডুনিন, কিউরেকটিন ইত্যাদি। এই সমস্ত উপাদানগুলি মিলেমিশে নিমকে দারুণ কার্যকরী এক খাবারে পরিণত করে দেয়। তাই প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই এই বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।
কীভাবে খাবেন নিম পাতা?
ডায়াবেটিস রোগীরা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে রোজ নিম পাতা খেতে পারেন। ৩-৪টি তাজা পাতা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এরপর দাঁতের মাঝে রেখে ভালো করে চিবিয়ে খান। চাইলে পাটায় বেটে রস বের করেও খেতে পারেন। প্রতিদিন খালি পেটে কাজটি করতে হবে।
কতটা খাবেন, কতদিন অন্তর?
চূর্ণ অবস্থায় খেলে ১ চামচ পরিমাণ সেব্য। পাতার রস ২- ৩ চামচ পরিমাণ নেওয়া যেতে পারে। রোগভেদে সেবনের দিনকাল চিকিৎসক দ্বারা নির্ধারিত হয়ে থাকে। তবে দিন দশেকের বেশি না খাওয়াটাই শ্রেয়। বরং এক্ষেত্রে চিকিৎসকের মতামত নিয়ে নিতে পারেন। তবেই শরীর ভালো থাকতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীদের নিম পাতা খাওয়ার সময় একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। আপনি যদি ডায়াবেটিস ওষুধ খান তবে খাওয়ার আগে আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ বা ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে তবেই খাবেন।