#Pravati Sangbad Digital Desk:
আরও বিপাকে পাকিস্তানের অর্থনীতি। একদিনের মধ্যে চিনের একটি বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কে ঋণ পরিশোধ করতে হবে পাকিস্তানের। যদি ইসলামাবাদ 500 মিলিয়ন ডলারের এই ঋণ শোধ করতে না পারে তাহলে দেউলিয়া ঘোষণা করা হতে পারে দেশটিকে। 2021 সাল থেকে এখনও পর্যন্ত পাকিস্তানের বৈদেশিক ঋণ বেড়েছে প্রায় 126 বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে 500 মিলিয়ন ডলার আগামী 48 ঘণ্টার মধ্যে চিনকে দিতে হবে। তা করতে ব্যর্থ হলে 1.512 ট্রিলিয়ন ডলারের পাকিস্তানি অর্থনীতি একটি বড় বিপদের মধ্যে পড়তে পারে। অর্থনীতিবিদদের মতে দেশে কোন অভ্যন্তরীণ সম্পদ তৈরি না করতে পারার কারণেই এই বিপদে পাকিস্তান। হটাৎ এই আর্থিক সঙ্কটের জন্য দায়ী ব্যাঙ্কের বাণিজ্যিক ঋণের পরিশোধ। বস্তুত সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর দুটি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেয় পাকিস্তান। প্রায় 1 বিলিয়ন ডলারের এই লোন শোধ করতে হয় পাকিস্তানকে। এছাড়া জুলাই-ডিসেম্বর 2022 সময়কালে পাকিস্তানের রেমিট্যান্স 14.1 বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় 1.7 বিলিয়ন ডলার কম। রেমিট্যান্স দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার একটি প্রধান উৎস। রেমিট্যান্স হ্রাস পাকিস্তানের অর্থনীতির জন্য একটি বড় ধাক্কা বলা যেতে পারে। দেশের বেশিরভাগ রেমিট্যান্স এখন চোরা পথে আসছে বলে মনে করা পচ্ছে। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তান (SBP) এর বৈদেশিক মুদ্রা সম্পদ সারা বছর জুড়েই ক্রমাগত কমেছে বহিরাগত ঋণ শোধ এবং আমদানির খরচের জন্য।
পাকিস্তানের অপর একটি সমস্যা খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় 31% বৃদ্ধি পেয়েছে। পাকিস্তানের জনসংখ্যার দৈনন্দিন জীবনে এর বড়সর প্রভাব পড়েছে। খাদ্য এবং শক্তি সঙ্কট চরমে উঠেছে পাকিস্তানে। ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফিতি, বৈদেশিক মুদ্রার অভাব এবং শক্তি সংকট সব মিলিয়ে মানুষের সাধারন চাহিদাগুলির ব্যয় বহন করাও কঠিন করে তুলছে। শ্রীলঙ্কার স্মৃতি এখনও তাজা। এরই মধ্যে পাকিস্তানের অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কায় রয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, পাকিস্তান যদি ঋণ শোধ করতে না পারে দেশটি দ্বিতীয় শ্রীলঙ্কা হতে পারে। একটি দেশ ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে, তখন তাকে সার্বভৌম ঋণ শোধে ব্যর্থতা হিসাবে দেখা হয়। এরফলে সংশ্লিষ্ট দেশটিকে একাধিক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। যেমন ভবিষ্যতে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে সুদের হার দিতে হয় বেশি। পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও বিনিয়োগ করতে অস্বীকার করে। অর্থনীতিবিদরা উল্লেখ করেছেন, পাকিস্তানে এই ধরনের অর্থনৈতিক সংকটের একটি প্রধান কারণ হল দেশটির কোনও অভ্যন্তরীণ সম্পদ তৈরি করতে না পারা। পাকিস্তানের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল, তার একটি লেখায় উল্লেখ করেছেন, তাঁদের দেশের ঋণদাতাদের টাকা শোধ করার জন্য কোনও সংস্থান নেই। এমতাবস্থায় অন্য ঋণ পরিশোধের জন্য অপর কোনও পাওনাদারের কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। এখন যদি পাকিস্তান বৈদেশিক ঋণ শোধ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে ভবিষ্যতে অন্য দেশ থেকেও ঋণ পাওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়বে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তান চীন এবং সৌদি আরব সহ অন্যান্য বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলির কাছ থেকে কয়ক বিলিয়ন ডলার আর্থিক সহায়তা পাওয়ার আশা করছে। এটি পাকিস্তানের অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। যার ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল করতে এবং জনগণকে স্বস্তি দিতে অবিলম্বে এবং সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপের প্রয়োজন।
#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image
Journalist Name : Sampriti Gole