ক্যানভাস এ কলকাতা

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

" কলকাতা,তুমিও হেঁটে দেখো.. কলকাতা, তুমিও ভেবে দেখো যাবে কি না যাবে আমার সাথে "।
ভারতে রয়েছে স্বপ্নের শহর, রয়েছে গোলাপী শহর, কালো হীরের শহর, স্বচ্ছ শহর আরো কত কী। আর এই ভিড়ের মাঝে লুকিয়ে রয়েছে কলকাতা,দ্যা সিটি অফ জয়। কলকাতা হলো এমন শহর যা আমাদের আনন্দে মেতে উঠতে শেখায়, যা আমাদের শেখায় কিভাবে পুরাতন কে বাঁচিয়ে রেখেও নতুনের স্বাদ উপভোগ করা যায়, কিভাবে প্রাচ্য প্রশ্চাত্যের মেলবন্ধন ঘটাতে হয়। অন্য সব শহরের থেকে আলাদা মহানগরী। তাই তো কলকাতা তিলোত্তমা।  তিলোত্তমা এর অর্থ হলো সেই সত্তা যার ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশ ও সর্বোচ্চ ও সর্বোত্তম উপাদান দ্বারা গঠিত। বলাবাহুল্য ,মহানগরীর সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম জিনিসগুলিই শহরের অভিনবত্বের পরিচায়ক। এ শহরের প্রতিটা জিনিস শহর কে দিয়েছে আলাদা আলাদা রূপ। কখনো শহর মেতে রয়েছে দুর্গা পূজার আনন্দে। রাত জেগে চলছে প্যান্ডেল হপিং,চলছে মা এর বোধন,অঞ্জলি বা বিসর্জন। কখনো ' ঈদ মুবারাক ' বলে কোলাকুলি করছে কলকাতা বাসী। আবার কখনো বা 'ডিসেম্বর এর কলকাতা '। চারিদিকে ঝলমল করছে আলো, হই-হুল্লোড়, পিকনিক এর সাথে নতুন বছরকে আপন করে নিচ্ছে কলকাতা। কখনো শহর জুড়ে ডাক ব্রিগেড চলো। এ শহরের চা এর দোকানে যখন জমে উঠেছে বয়স্কদের আড্ডা, রাজনীতির বাকবিতণ্ডা যখন তুঙ্গে, তখন আবার অলিগলিতে জোরকদমে চলছে ক্রিকেট খেলা। এই শহরেই ময়দান এ তখন চলছে বন্ধুদের আড্ডা। শহরের নীল আকাশ কখনো ভরে যাচ্ছে রংবেরংয়ের ঘুড়িতে আর ' ভোকাত্তা ' শব্দে আবার কখনো শহর গমগম করছে রঙ, আবীর, পিচকারি, ভাং আর ' হলি হ্যা ' এর উল্লাসে।

কলকাতার অপর নাম স্থাপত্যের শহর। তিনশো বছরের কিছু বেশি পুরনো এই শহরের প্রত্যেক পরিবর্তনের স্বাক্ষী হয়ে রয়ে গেছে যারা, তারা হলো এই শহরের স্থাপত্য, নিদর্শন। উত্তর থেকে দক্ষিণ কিংবা পূর্ব থেকে পশ্চিম, সমগ্র শহর জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য নিদর্শন, যা অনায়াসেই মানুষ কে আকৃষ্ট করে। এই শহরে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সেতু হাওড়া সেতু। রয়েছে ব্রিটিশ শাসনের নিদর্শন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল।পড়াশোনার জন্য রয়েছে নেশনাল লাইব্রেরী, রয়েছে বই এর হাট কলেজ স্ট্রিট। রয়েছে 'কফি হাউসের সেই আড্ডা', শান্তি উপভোগ করার জন্য রয়েছে গঙ্গার ঘাট, এক পশলা বিকেল কাটানোর জন্য আছে গড়ের মাঠ। ইতিহাস জানার জন্য রয়েছে ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম, astrology জানার জন্য আছে বিড়লা তারামন্ডল, রয়েছে বিজ্ঞান জানার জন্য সায়েন্স সিটি, বোটানির জন্য শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন আর জুলোজি এর জন্য চিড়িয়াখানা। রয়েছে সিনেমা প্রেমীদের জন্য নন্দন। রয়েছে দক্ষিণেশ্বর, কালীঘাট মন্দির, নাখোদা মসজিদ কিংবা সেন্ট Paul's cathedral Church। রয়েছে নিকো পার্ক, ইকো পার্ক। এ শহরে প্রেম নিবেদন এর স্বাক্ষী থেকেছে প্রিন্সপ ঘাট। শহরের অনেক সন্দর্জয়ন এর কাজ শুরু হয়েছে। গঙ্গার ধারে ঘাট নির্মাণ চলছে। গঙ্গা বক্ষে আরতি ও শুরু হতে পারে শীঘ্রই। অনেক কমেরসিয়াল বিল্ডিং আর সুউচ্চ ভবন তৈরির কাজ চলছে। এ শহর মানুষ কে নস্টালজিয়াতে ভোগায়। Tram গাড়ি, হলুদ টেক্সী, হাতে টানা রিক্সা, ঘোড়ার গাড়ি বা উত্তর কলকাতার পুরনো দিনের বাড়ি মানুষ কে নস্টালজিক করে তোলে। কলকাতার রসগোল্লা,ফুচকা ,মিষ্টি দইকিংবা ভেটকির পাতুরি মানুষের খুব পছন্দের। সমস্ত ভিন্নতা নিয়ে কি সুন্দর একট্রিত হয়ে দাড়িয়ে রয়েছে কলকাতা। আজ ও এখানে হিন্দুর বিপদে মুসলিম ভাই ছুটে আসে। বাঙালির ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগান নিয়ে যত ক্রেজ ঠিক ততটাই ক্রেজ রয়েছে আর্জেন্টিনা বনাম ব্রাজিলকে নিয়ে। শহরে যেই আতিশয্যে দুর্গাপুজো পালন হয়, সেভাবেই পালন হয় মুম্বাই এর গণেশ পুজো, বিহার এর ছট পুজো কিংবা বিদেশের খ্রিস্টমাস। এখানের মানুষ ফেলুদা বোমকেশকে ভালোবাসে আবার মার্ভেলকে আপন করে নেয়। মানুষ দেবদাস কিংবা পরিণীতা পড়ে যেই আগ্রহে সেভাবেই ওথেলোকেও আত্মসাৎ করে। মহানগরীর মানুষ যেমন সারি পাঞ্জাবি এর সবেকিআনায় সাজতে পারে, তেমন ই ৩১ স্ট নাইট এর পার্টি তে ও মেতে উঠতে পারে। এইভাবেই সুখে দুঃখে ভালো থেকো কলকাতা চলন্তিকা।

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Srimita Sasmal

Tags:

Related News