কনকনে ঠান্ডায় কাঁপছে গোটা দেশ। শৈত্যপ্রবাহের জেরে বারংবার কমছে তাপমাত্রার পারদ। সামনেই মকর সংক্রান্তি। হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় গঙ্গায় ডুব দিতে হতে পারে মকরের দিনে, এমনটাই মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। তবে বৃষ্টির সম্ভাবনা সেভাবে নেই বলেই জানাচ্ছেন। বৃহস্পতি-শুক্রবার থেকে তাপমাত্রা পারদ আরও খানিকটা কমার সম্ভাবনা ছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আবহাওয়ার বিশেষ কোনও পরিবর্তন হয়নি। আবহাওয়ার আপডেট দেখে বেড়াতে যাওয়া বা আউটিংয়ের প্ল্যান থাকলে, শান্তিতে সারতে পারবেন। ঘর থেকে বের হওয়ার আগে আবহাওয়া সম্পর্কে সচেতন হওয়া খুবই জরুরি। ছোট বা বড় ট্রিপে যাচ্ছেন, পাহাড়ে বা সমুদ্রে, যেখানে বেড়াতে যাবেন, সেখানকার আবহাওয়া সম্পর্কে সঠিক তথ্য রাখা আপনার জন্য খুবই সহায়ক হতে পারে।
রবিবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, কলকাতার এই তাপমাত্রা পৌঁছে যেতে পারে ১৬-১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘর থেকে কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পৌঁছতে পারে ২৬-২৭ ডিগ্রিতেও। জেলার তাপমাত্রা কলকাতার চেয়ে কম থাকবে, তবে পারদ চড়বে সে তল্লাটেও। অর্থাত্, সাময়িক ভাবে ‘শীতঘুমে’ যাবে শীত। বড়দিনে ‘উষ্ণতা’ ছড়িয়েছিল বঙ্গোপসাগরের বিপরীত ঘূর্ণাবর্ত। বর্ষবরণে কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। সংক্রান্তিতেও কাঁটা সেই পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। একটি নয়, জোড়া। একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ইরান, আফগানিস্তান হয়ে কাশ্মীরে ঢুকছে। এর ঠিক পিছনেই রয়েছে আরও একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। মৌসম ভবনের অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলছেন, ‘‘ঝঞ্ঝা এলে জলীয় বাষ্প ঢুকে উত্তর ভারতে শীতের দাপট কমবে। ফলে উত্তুরে হাওয়ার গতি কমবে। তার প্রভাব পড়বে আমাদের রাজ্যেও। শুধু রাতের নয়, দিনের তাপমাত্রাও বাড়বে। ফলে সাময়িক ভাবে শীতের অনুভূতি কমবে।’’
রথে বৃষ্টি। মকরসংক্রান্তিতে কনকনে ঠান্ডা। এটা বাংলার চেনা লব্জ। কিন্তু গত কয়েক বছরে সংক্রান্তিতে শীতের দাপট বেশ কম। বাইশে ৯ বছরের ‘উষ্ণতম’ সংক্রান্তির সাক্ষী হয়েছিল আলিপুর। তাপমাত্রা পৌঁছে যায় ১৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বস্তুত, শেষ বার সংক্রান্তিতে জাঁকিয়ে শীত ছিল ২০১৭, ২০১৮ সালে। তার পর থেকেই সংক্রান্তি এলেই হাজির হয়ে যায় কোনও না কোনও কাঁটা! দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে রাতের তাপমাত্রা ২-৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে। তবে তারপরের ২ দিন তাপমাত্রার তেমন কোনও পরিবর্তন হবে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস মৌসম ভবনের। আগামী ৩ দিনে ২ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে তাপমাত্রা। পশ্চিমি ঝঞ্ঝার কারণে তাপমাত্রার পারদ ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে বলে জানান আবহবিদরা।