রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নিজের হাতে অল্প অল্প করে সাজানো শান্তিনিকেতন সকল মানুষের মন কাড়ে। বোলপুর নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে মেঠো রাস্তা , এক অপূর্ব গ্রাম্য পরিবেশ , সোনাঝুড়ি হাট , বিশ্বভারতী আরো অনেক কিছু। শীতকালে ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ এসে এই জায়গার সৌন্দর্য্য আরো বাড়িয়ে তোলে। শুধু দেশ নয় , বিদেশ থেকেও হাজার হাজার মানুষ আসে পরিদর্শন করতে।
এখানের আরো অন্যতম অনুষ্ঠান বসন্ত উৎসব ও পৌষ মেলা। বসন্ত উৎসবে রঙীন হয়ে ওঠে গোটা শান্তিনিকেতন। ফুলের পাঁপড়ি ওড়ে আকাশে , আবিরের রঙে রাঙা হয়ে যায় সকলে। এ যেনো এক অপূর্ব রঙের খেলা। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাত ধরে চালু হয় এই উৎসব। বর্তমানে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র - ছাত্রীরা আয়োজন করে এই উৎসব।
শীতকালের একটি জনপ্রিয় উৎসব হলো পৌষমেলা। পৌষমেলা দেখতে দেশ - বিদেশ থেকে লোক এসে জমায়েত হয় এখানে। তবে এবারে বিশ্বভারতী শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের এই জনপ্রিয় পৌষমেলা হবে না তা বোঝা গেছিলো আগেই। এর পাশাপাশি পৌষ উৎসবের আয়োজন হবে কি না এই বিষয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ জানন , পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে পৌষ উৎসব আয়োজন করতে কোনো সমস্যা নেই। অবশেষে পৌষ উৎসব নিয়ে অনুষ্ঠানসূচি ঘোষণা করল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
উৎসবের নিয়ম অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাত ৯ টায় গৌড় প্রাঙ্গণে হবে বৈতালিক। শান্তিনিকেতনে রাত সাড়ে ৯ টায় হবে সানাই। ৭ ই পৌষ অর্থাৎ শুক্রবার গৌর প্রাঙ্গণে ভোর সাড়ে ৫ টায় হবে বৈতালিক। শান্তিনিকেতনে সকাল ৬ টায় সানাই। সকাল সাড়ে ৭ টায় ছাতিমতলায় উপাসনা। সন্ধ্যা ৬ টায় উদয়ন বাড়ি ও ছাতিমতলায় আলোকসজ্জা। সন্ধ্যা সাড়ে ছটায় গৌড় প্রাঙ্গণে বসবে লোকসংস্কৃতির আসর।
শনিবার শান্তিনিকেতন গৃহে সকাল ৬ টায় সানাই। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে দুপুর ৩ টেয় রয়েছে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ স্মারক বক্তৃতা। সন্ধ্যা ৬ টায় ছাতিমতলায় আলোকসজ্জা। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় গৌড় প্রাঙ্গণে ভানুসিংহের পদাবলী। ৯ পৌষ অর্থাৎ রবিবার শান্তিনিকেতনে সকাল ৬ টায় সানাই। সকাল আটটায় আম্রকুঞ্জে পরলোকগত আশ্রম বন্ধুদের স্মৃতি বাসর।
পৌষ উৎসব শেষ হওয়ার পর পরই শান্তিনিকেতনে আসতে চলেছে রঙের হাওয়া। সারা আকাশ ঢেকে যাবে বিভিন্ন রঙে। মানুষের জীবনে নতুন করে আসবে রঙের ছোঁয়া। সাথে শান্তিনিকেতনের অপূর্ব গ্রাম্য পরিবেশে।