চিনে ক্রমশই খারাপ হচ্ছে করোনা পরিস্থিতি। চিন কোভিড সংক্রান্ত তথ্য লুকোনোর চেষ্টা করছে বলে বারেবারেই অভিযোগ উঠেছে। চিনের দাবি, গত ৬ দিনে সেখানে করোনায়। চিন, জাপান, আমেরিকা সহ একাধিক দেশে করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত। চিনে তা বাধ ভেঙেছে। চিনের এই ভয়াবহ পরিস্থিতির ছবি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোরাফেরা করছে। সেই ছবি দেখে রীতিমতো শিহরণ জাগে। গত দু’বছরের সেই হাহাকারের ছবি স্মৃতিতে ভেসে আসে। বর্তমানে চিনের এই লাগাম ছাড়া সংক্রমণের জন্য ওমিক্রনের সাব ভ্যারিয়েন্ট বি.এফ৭ কেই দায়ী করা হচ্ছিল। তবে শুধুমাত্র এই একটি সাব ভ্য়ারিয়েন্টের কারণেই চিনের এই অবস্থা নয় বলে জানালেন কেন্দ্রের কোভিড প্যানেলের প্রধান এনকে অরোরা। এর সঙ্গে সঙ্গী রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি ভ্যারিয়েন্টও। তবে নিয়ে এদেশে আতঙ্কের কোনও কারণ নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ৮ জানুয়ারি থেকে এ বিধি আর কার্যকর থাকবে না। বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ২০২০ সাল থেকে ‘শূন্য করোনা নীতির’ আওতায় চীনে করোনার কঠোর বিধিনিষেধ চলছিল। সম্প্রতি ওই বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নামেন দেশটির অনেক শহরের বাসিন্দারা। এরপর চলতি মাসের শুরুর দিকে বেশির ভাগ বিধিনিষেধ তুলে নেয় চীন সরকার। তারপর থেকেই দেশটিতে করোনার সংক্রমণ বাড়তে দেখা গেছে।
চিনে ফের মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে করোনা সংক্রমণ। সেখানকার নাগরিকরা এখনও পর্যন্ত আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। সেই আতঙ্ক গোটা বিশ্বেই ছড়িয়ে পড়েছে। ভারত সংক্রমণ এড়াতে আগে থেকেই তৎপর। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের একাধিক বৈঠক, কোভিড প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে মহড়া করা হয়েছে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালেও। এই আবহে কেন্দ্রের কোভিড প্যানেলের প্রধান এনকে অরোরা বললেন, চিনের কোভিড সংক্রমণ নিয়ে ভারতীয়দের মধ্যে আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। তিনি বলেছেন, চিন থেকে তথ্যের অবাধ প্রবাহের অনুপস্থিতিতে ভারত কেবলমাত্র “সতর্কতামূলক এবং পূর্বপ্রস্তুতিমূলক” প্রস্তুতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, এটা স্পষ্ট যে, কোনও একটি ভ্যারিয়েন্ট নয় ভাইরাসের ককটেলের কারণে চিনে ফের এই সংক্রমণের
প্রাদুর্ভাব দেখা গিয়েছে।
তিনি বলেছেন, চিনে মোট সংক্রমণের মাত্র ১৫ শতাংশ হয়েছে বিএফ.৭ এর কারণে। সংক্রমণের বেশিরভাগের জন্য়ই দায়ী অন্য ভ্যারিয়েন্ট। যেমন ৫০ শতাংশ BN ও BQ সিরিজ়ের কারণে হচ্ছে। আর SVV ভ্য়ারিয়েন্টের কারণে হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ সংক্রমণ। তবে টিকাকরণ, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঢেউয়ের সময়ে সংক্রমণের কারণে ভারতীয়দের মধ্যে অর্জিত প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়ে গিয়েছে। তিনি এনডিটিভিকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন,”চিনে তারা নির্বোধ। তারা আগে ভাইরাসের সংস্পর্শে আসেনি, এবং তারা যে ভ্যাকসিন পেয়েছে তা সম্ভবত কম কার্যকর। আমি আপনাদের বলতে চাই যে তাঁদের বেশিরভাগই তিন থেকে চারটি ডোজ় পেয়েছেন।”
চিকিৎসাকর্মীরা বলেছেন, তাঁরা পরিস্থিতি মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছেন। চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং মানুষের জীবন বাঁচাতে সাধ্যমতো সবকিছু করার জন্য দেশটির কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রকাশ করা বন্ধ করে দিয়েছে চীন। তবে ধারণা করা হয়, দেশটিতে প্রতিদিন হাজারো মানুষ মারা যাচ্ছে। ২০২০ সালের মার্চ থেকে চীনে পৌঁছানো যাত্রীদের সবার জন্য কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করা হয়। এখনো এ বিধি কার্যকর আছে।