ব্যোমকেশ গোত্র

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

অভিনয় - আবির চট্টোপাধ্যায়, সোহিনী সরকার, অর্জুন চক্রবর্তী, অঞ্জন দত্ত, প্রিয়াঙ্কা সরকার
পরিচালনায় - অরিন্দম শীল 
ব্যোমকেশ বক্সী, বাংলা সাহিত্য এবং সিনেমা জগতে বিখ্যাত একটি গোয়েন্দা চরিত্র। আদ্যোপান্ত বাঙালীয়ানায় মোড়া একটি দুর্দান্ত চরিত্র। যদিও ব্যোমকেশ কিন্তু নিজেকে গোয়েন্দা বলা একদমই পছন্দ করেন না। তিনি সত্যান্বেষী, অর্থাৎ সত্যের খোঁজে তার সমস্ত কাহিনী। তার গল্পগুলো শুধুই রহস্য বা অ্যাডভেঞ্চারের কাহিনী না, তার গল্পগুলো সময়ের কথা বলে। ২০১৮ সালে  ব্যোমকেশ টিমকে নিয়ে মাঠে নামেন পরিচালক অরিন্দম শীল, ছবির নাম  "ব্যোমকেশ গোত্র" । সত্যবতী, সত্যান্বেষী, সত্যকাম, ' এই ' ট্রায়াঙ্গেল'-এই নিয়েই ঘুরেছে ছবির গল্প। গল্পের প্রেক্ষাপট ১৯৫২ সালের। তৎকালীন মুসৌরির এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে এগিয়েছে এই গল্পটি। বছর পঁচিশের সত্যকাম কলকাতায় আসেন শুধুমাত্র ব্যোমকেশের সঙ্গে দেখা করে তাঁর মৃত্যুর পরের রহস্য উন্মোচনের তদন্তভার দিতে। একদিকে সে মহিলা মহলে জনপ্রিয়, আবার শারীরিকভাবেও যথেষ্ট সক্ষম। কোনও মহিলার ব্যাপারে আসক্ত হওয়ার পর তার বাবা কিংবা ভাড়া করা গুণ্ডা পেটাতে এলে সেও ভালোই পাল্টা দিতে পারে। এমনকী  ব্যোমকেশের বাড়িতে আসা মাত্রই চোখ পড়ে সত্যবতীর ওপর। ব্যোমকেশের বাড়িতে কথা বলতে এসে চায়ের প্লেটের তলা দিয়ে সত্যবতীর আঙুলও ছুঁয়ে ফেলে। তা নজর এড়ায়নি ব্যোমকেশের। কৌতুহল দমনে ব্যোমকেশ, সত্যবতী ও অজিতের মুসৌরী গমন। রানাঘাট কুপার্স ক্যাম্প থেকে গল্পে এসেছে দুটো মেয়ে। একজন কুমিল্লার ভাষাতেই কথা বলে যাওয়া চুমকি (সৌরসেনী)। অন্য জন এমিলি (প্রিয়াঙ্কা) যে চার্চের আশ্রয়ে অনেকটাই মেমসাহেব এবং জীবনধারণের জন্য ক্যাবারে নাচে। তারা দুজনেই সত্যকামকে ভালোবাসে।  এমিলির বড়লোক হওয়ার অ্যাম্বিশন। কাউকেই দোষ দেওয়া যায় না বোধহয়। যেমন সৌরসেনী, তেমন প্রিয়াঙ্কা, লুক দেখে কাউকেই এক নজরে  চিনতে পারা সম্ভব নয়। অসাধারণ। পুলিশকর্তা পুরন্দর পান্ডে এবং তাঁর কন্যার রোলও ছবির দ্বারা সৃষ্ট। মেয়ে মীরার (বিবৃতি) সঙ্গে সত্যকামের সম্পর্ক নিয়েও রেগে আগুন পুরন্দর। সীতাংশু, পুরন্দর-সহ বেশ কিছু জোরালো শত্রু এমনিতেই বর্তমান সত্যকামের। সেখানে প্রশ্নের জট খোলার মাঝেই খুন সত্যকাম।সত্য কামকে খুন করল কে? অবশেষে সত্যান্বেষীর রহস্যের পর্দা ফাঁস করা। এই নিয়েই ‘ব্যোমকেশ গোত্র’।

ছান্দোগ্য উপনিষদে সত্যকামের উল্লেখ আছে। সে তার মায়ের কাছে পিতৃপরিচয় জানতে চেয়েছিল। উত্তর পায়নি। আর, এই সিনেমায় ব্যোমকেশের মক্কেল সত্যকামও মায়ের কাছে এই প্রশ্ন রাখতে বাধ্য হয়।সৌভাগ্য বলুন বা বেচারার দুর্ভাগ্য- উত্তরটা কলির সত্যকাম পেয়ে যায়। জগতের কিছু কিছু সত্য হয়তো বা পদ্মপাতায় জলের মতো ফ্লেক্সিবল হয়েই থাকা উচিত। চাইলেই যা গড়িয়ে দেওয়া যাবে। তাতে সুখ বা স্বস্তি না থাক, স্থিতাবস্থা বজায় থাকে। যাইহোক এবার আসি অভিনয় ,আবির চট্টোপাধ্যায়ের ব্যোমকেশ হিসাবে নিজের অভিনয় দক্ষতা আরও খুঁড়ে বার করেছেন। সংলাপ থেকে চাউনি সমস্ত কিছু যেন এই মুহূর্তে আবির ছাড়া ব্যোমকেশ হিসাবে তিনি আর কারোর কথা ভাবতেই দিচ্ছেন না দর্শককে। অভিনয়ে  ভুলের একচুল জায়গা ছাড়েননি সত্যবতী অর্থাৎ সোহিনী সরকার, নিখুঁতভাবে অভিনয় করেছেন ছবিতে। এ ছবিতে আলাদা করে বলতেই হয় অর্জুনের কথা। নিঃসন্দেহে অর্জুন চক্রবর্তী এই 'ব্যোমকেশ গোত্র'-এর অন্যতম সম্পদ। রাহুল সেই দিক থেকে সেভাবে নজর কাড়তে পারেননি। ঊষাপতির চরিত্রটি অঞ্জন দত্ত ছাড়া আর কারও পক্ষে সম্ভব নয় বলে মনে হয়েছে । ছবির প্রথমার্ধের যে টানটান উত্তেজনা পরিচালক অরিন্দম শীল তৈরি করেছিলেন, তা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে ব্যর্থ  হননি পরিচালক  অরিন্দম  শীল ।

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Susmita Das

Related News