অপরাজিত : পথের পাঁচালী ছবির আইকনিক কিছু দৃশ্যের শ্যুটিং

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

নন্দনে জায়গা হয়নি ‘অপরাজিত'(Aparajito) ছবির। কিন্তু তাতে সফলতা আটকে রাখা যায়নি। ‘কামাল’ করে দেখিয়েছেন পরিচালক অনীক দত্ত, অভিনেতা জিতু কমল(Jeetu Kamal)।  ২০২২  সালের  ১৩ ই মে মুক্তি  পেয়েছিল  ‘অপরাজিত’ সিনেমাটি। বাংলার গুটিকয়েক সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছিল এই সিনেমা।কিন্তু পরবর্তীকালে ছবির অসাধারণ সাফল্যের পর হল সংখ্যা যেমন বেড়েছিল, ঠিক তেমনি বেশিরভাগ হলে ঝুলছিল হাউসফুল বোর্ড। 'পথের পাঁচালী'  ছবি করতেই তরুণ সত্যজিৎ রায়েক কী কী প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীণ হতে  হয়েছিল সেই নেপথ্য কাহিনীকেই ৬৭ বছর পর বড় পর্দায় তুলে ধরলেন পরিচালক অনীক দত্ত।অ্যাড এজেন্সিতে চাকরি করতে করতেই বিলেতে যাওয়ার সুযোগ এবং সেখানকার সিনেমা হলে দ্যা বাইসাইকেল রাইড ছবিটি দেখে নিজে ছবি বানানোর অনুপ্রেরণা পান অপরাজিত রায়। বাংলার গ্রামের ছবি অপূর্ব ভাবে 'পথের পাঁচালীতে' তুলে ধরেছিলেন সত্যজিৎ রায়। সেই ছবির নির্মাণকাহিনীই 'পরাজিতর'-র প্রাণ। যা দেখতে গিয়ে আমরা জানতে পারি সেই সময় কতটা বেগ পেতে হয়েছিল পরিচালক সত্যজিৎ রায়কে।

ছবিতে সত্যজিৎ রায়ের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় অপরাজিত রায়। এমন কী ‘পথের পাঁচালী’ ছবির নাম বদলে করা হয়েছে 'পথের পদাবলী '।সিনেমা শুরু আকাশবাণীতে অপরাজিত রায়ের সাক্ষাৎকার দিয়ে। আর ফ্ল্যাশব্যাকে এগিয়ে চলে গল্প। যেখানে সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন স্বয়ং সাংবাদিক  শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবিতে অপরাজিত রায়ের মুখ দিয়েই আসছে ফ্ল্যাশব্যাকে ‘পথের পাঁচালী’ ওরফে ‘পথের পদাবলী’ নির্মাণের গল্প। যা কয়েকজন নব্য তরুণের স্বপ্ন-সফলের গল্প। যারা গতানুগতিক ফিল্ম স্টাইলকে ভেঙে নতুন কিছু করতে চেয়েছিল। তাই তারা নিজেরাই কয়েকজন মিলে তৈরি করল ‘কলকাতা ফিল্ম সোসাইটি’। সেখান থেকেই ‘পথের পাঁচালী’র স্বপ্ন দেখা শুরু। বহু ঠোক্কর খেয়ে, প্রতিকূলতা জয় করে শেষমেশ স্বপ্নপূরণ। যে সত্যজিৎকে একদিন হেয় করেছিল টালিগঞ্জ পাড়া সেই সত্যজিৎই বাংলা ছবিকে  পৌঁছে দিল রেড কার্পেট পেরিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে।


এই ছবি যেন একটা নস্ট্যালজিক ট্রিপের মতো। পথের পাঁচালী ছবির আইকনিক কিছু দৃশ্যের শ্যুটিং যেমন বৃষ্টিতে অপু দুর্গার স্নান, দুর্গার মৃত্যু, একসঙ্গে অপু দুর্গার ট্রেন দেখতে যাওয়া দইওয়ালার সঙ্গে অপু দুর্গা ও একটা কুকুরের শট, এমনকী, মৃত ইন্দির ঠাকরুণের শেষ যাত্রার শুটিং নিয়ে হাসি মসকরার এই সব কিছুই নিঁখুত ভাবে বড়পর্দা তুলে ধরেছেন পরিচালক অনীক দত্ত।বিজয়া রায় ছাড়া সত্যজিৎ রায়ের জীবন যে অসম্পূর্ণ এ ছবিতে তা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সায়নী ঘোষ অভিনয় করেছেন সেই গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে। অন্যরকম ফিল্ম বানাতে চাওয়া অপরাজিতকে যখন সবাই ফিরিয়ে দিচ্ছেন বা ছবিতে গান ঢোকানোর পরামর্শ দিচ্ছেন তখন পাশে দাঁড়িয়েছিলেন স্ত্রী। এমন কি বিয়েতে পাওয়া গয়নাও বন্ধক দিতে পিছু পা হননি। তাঁর বিশ্বাস ছিল এ ছবি একদিন সারা বিশ্বকে নাড়িয়ে দেবে। শেষমেশ  তাই হলো । নিউ ইয়র্ক থেকে প্রশংসা এল। তারপর বিখ্যাত কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে দর্শকের মন জয় করল পথের পদাবলী। আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি অপরাজিত রায়কে।

সত্যজিৎ রায় ওরফে অপরাজিত রায়ের ভূমিকায় জিতু কমল দর্শকের মন ছুঁয়ে নেন। ছবিতে তাঁর স্ত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সায়নী ঘোষ। তিনিও অনবদ্য। পথের পাঁচালী (ছবিতে নাম পথের পদাবলী) ছবিকে কেন্দ্র করে সত্যজিৎ রায়ের জীবনছবি এঁকেছেন অনীক দত্ত। হুবুহু সত্যজিৎ রায়ের মতো দেখতে জিতু কমলের উপস্থাপন প্রশংসার দাবি রাখে। বিশ্বসেরা  পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের জীবনকাহিনি পর্দায় তুলে ধরা বাঙালি তথা সিনেপ্রেমীদের আবেগকে চ্যালেঞ্জ ছোঁড়ার সম্মুখীন হওয়ার থেকে কোনও অংশে কম নয়। অনীক দত্ত সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন এবং বলা ভাল, সাফল্যের সঙ্গেই সেই ডকুমেন্টশন তৈরি করেছেন।দেবজ্যোতি মিশ্রের আবহ সঙ্গীত ঠিক যতটা দরকার ততটাই। তবে ছবিতে পণ্ডিত রবি শঙ্করের অংশ ভীষণই কম। ছবিতে সুপ্রতীম ভোলের সিনেমাটোগ্রাফি প্রশংসার দাবি রাখে।

সিনেমার রিভিউ  অপরাজিত 

অভিনয়ে-জিতু কামাল,অঞ্জনা বসু,সায়নী ঘোষ,দেবাশিষ রায়

 পরিচালনায় - অনীক দত্ত 

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Susmita Das

Related News