কিশমিশ সিনেমা রিভিউ

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

অভিনয়ে – দেব, রুক্মিণী, খরাজ  মুখোপাধ্যায় , অঞ্জনা  বসু , কমলেশ্বর  মুখোপাধ্যায় , জুন  জুন মালিয়া , 
পরিচালনায় –রাহুল মুখোপাধ্যায়
পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে ২৯ এপ্রিল ২০২২ সালে মুক্তি পায় কিশমিশ ছবিটি । এই ছবিতে লিড হিসেবে কাজ করেছেন দেব ও রুক্মিণী। কলেজ ছাত্র-ছাত্রীর প্রেম এবং তাঁদের মা-বাবার কিছু সমস্যা নিয়েই ছবির মূলগল্প। এই মুভিটি মুখে যেমন হাঁসি নিয়ে আসে তার পাশাপাশি চোখের কোণায় জলও নিয়ে আসে। অনেক মানুষের জীবনের সাথে এই সিনেমার গল্পের মিল আছে। এই সিনেমার গল্পের শুরুটা একজনকে দিয়ে শুরু হলেও তা ক্রমে পরিবর্তন হয়ে আরও অনেকের সাথে পরিচয় করায়। এটি রোমান্টিক সিনেমার পাশাপাশি, একটি পারিবারিক সিনেমাও বটে, এটি একটি দায়িত্ববোধের সিনেমা, একটি সম্পর্কের  সিনেমা ,আবার একটি শিক্ষা মূলক সিনেমাও। এই সিনেমার গল্প গুলো খুব চমৎকার ভাবে দর্শকদের সামনে পর্দায় নিয়ে আসা হয়েছে। ঘটনা গুলোকে এনিমেশনের মাধম্যে উপস্থাপন করা হয়েছে। এবার কিসমিসের গল্প নিয়ে বলা যাক, বাবা ডাকে কৃশানু (দেব) মা ডাকে টিনটিন(দেব)। কলকাতার কালীঘাটের ছেলে টিনটিন বাবা গোবলু চট্টোপাধ্যায় (খরাজ মুখোপাধ্যায়) মা উচ্চশিক্ষিতা পুবালী (অঞ্জনা বসু)। পুরানো প্রেমিককে ছেড়ে বিয়ে করেছে কালীঘাটের গোবলু চট্টোপাধ্যায়কে। মোহনবাগান ইস্টবেঙ্গল থেকে শুরু করে চিড়িং-ইলিশ কোনও মিলই নেই তাঁদের। কৃশানুর লেখা পড়ায় একদমই ইচ্ছে নেই।  কৃশানু হতে চায় একজম কার্টুনিস্ট। কিন্তু তার বাবা চায় ছেলে ভবিষ্যতে যেন ভালোকিছু করে। তাই কৃশানু তার মনের ইচ্ছের বিরুদ্ধে পড়ালেখা চালিয়ে যায়। কিন্তু কৃশানু ও তার স্বপ্নে অটল থাকে। অন্যদিকে এস্টেটের বড় অফিসার অসীম (কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়) তার স্ত্রী সেমন্তী (জুন মালিয়া) তাঁদের একমাত্র মেয়ে রোহিনী। দায়িত্ববান, পরিণত, ঝকঝকে রোহিনী। কৃশানু কলেজে গিয়ে প্রেমে পড়ে ক্লাস টপার সুন্দরী বুদ্ধিমতী মেয়ে রোহিনীর। নায়ক নায়িকার দেখা যখন হয়েছে বন্ধুত্ব থেকে প্রেমে পর্যন্ত তো গড়াবেই এতে তেমন কোনও সাসপেন্স নেই। মেয়েটিও তার প্রেমে পড়ে যায়। আচমকা দু’জনে সিদ্ধান্ত নেয় বিয়ে করবে। ওঁদের বাবা-মা দেখা করে ওদের বিয়ে ফাইনাল করতে। তারা যখন পারিবারিক ভাবে দেখা করতে যায় তখন আসে প্রধান সমস্যা। রোহিণীর বাবাকে (কমলেশ) দেখেই এই বিয়েতে রাজি হন না কৃশানুর মা। এরপর কীভাবে শেষমেশ কৃশানুর মায়ের মন জয় করে রোহিনী ও অসীম অর্থাৎ রোহিনীর বাবার মন জয়ে করে কৃশানু ,এই নিয়েই গল্প এগিয়ে চলে। তবে এই গোটা গল্পের মাঝে রয়েছে বিরাট এক টুইস্ট।

কিশমিশ একটা আদ্যোপান্ত নির্যাস প্রেমের ছবি। কিন্তু সেই প্রেম শুধু ছবির নায়ক নায়িকার মধ্যে আবদ্ধ না থেকে ছড়িয়ে আছে ছবির প্রত্যেক চরিত্রের পরতে পরতে। প্রতিটা চরিত্র অতি সুন্দর ভাবে লেখা হয়েছে এবং তাদের মধ্যে যে পারস্পরিক রসায়ন সেটাও চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন পরিচালক। এই সিনেমাটিতে ভালোবাসার পাশাপাশির নিজের নিজের ইচ্ছাকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এই সিনেমাটিতে শুধু একটি প্রেমের গল্পকেই দেখানো হয়নি পাশাপাশি বেশ কয়েকটা প্রেমের গল্পও দেখানো হয়েছে। মুভি অনুসারে কিশমিশ নামটা দেওয়া সার্থক৷ ছবির ভিজুয়াল ক্যামেরা ওয়ার্ক অসাধারণ।যেন কেউ ছবি এঁকে দিয়েছে যত্ন সহকারে,সিনেমাটোগ্রাফার মধুরা পালিত অস্বম্ভব ভালো কাজ করেছেন।টিনটিন রুপে  দেবের অভিনয় ছিল দুর্দান্ত  যেন ।কান্নার সিন হোক বা আনন্দের, ছবিতে  আমরা দেব নয় টিনটিন কেই খুঁজে পেয়েছি এখানেই দেবের সাফল্য। রোহিনী এর চরিত্রে রুক্মিণী আলাদা মাধুর্য নিয়ে এসেছে। যেন চরিত্রটা রুক্মিনীর জন্যই লেখা এতটাই ভালো ফুটিয়ে তুলেছে সে।দেব এর বাবার চরিত্রে ছবিতে খরাজ  মুখোপাধ্যায় অনবদ্য।রুক্মিনীর বাবার চরিত্রে কমলেস্বর মুখোপাধ্যায় এর অভিনয় ও দর্শকের মনে দাগ কেটে যায়। অঞ্জনা বসু ও জুন মালিয়ার  অভিনয়ও অসাধারণ ছিল। ছবির শেষ ১৫ মিনিট এতোটাই ভালো যা হেসে গড়াগড়ি খেতে বাধ্য করে দর্শককে আবার আবেগপ্রবন ও করে তোলে ফ্ল্যাশব্যাক এ নিয়ে গিয়ে। প্রথম ছবি হিসেবে পরিচালক নিশ্চয়ই  দর্শকদের  কাছে  পাশ করে যাবেন। তবে তাঁর পাশ নম্বর পাওয়ার পেছনে দেব-রুক্মিণী জুটির রসায়ণটাই আসল। অত্যন্ত ফুরফুরে মেজাজে দু’জনে অভিনয় করেছেন। কমেডি টাইমিং ও পাঞ্চ ভীষণ ভালো।  

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Susmita Das

Related News