#Pravati Sangbad Digital Desk:
বিজয়া দশমীতে দুই বাংলাতেই মন খারাপের সুর। সেই সুরেই একত্রিত হয়েছেন দুই বাংলার মানুষ। মাঝে বিভাজন বলতে নদীর জলস্রোত। নদীর দুই পাড়ে দাঁড়িয়ে দুই দেশের মানুষ। শুধুমাত্র ওই এলাকার নয়, দুই দেশের বহু মানুষ নদীর পাড়ে হাজির হয়েছেন।
নদীর মাঝ বরাবর চলে গিয়েছে একটি দড়ি। এটি মূলত একটি কাল্পনিক বিভাজন রেখা। দড়ির ওপারে বাংলাদেশের মানুষ জড়ো হয়েছেন, আর দড়ির এপারে জড়ো হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। সবার উদ্দেশ্যে একটাই, প্রতিমা নিরঞ্জন। পরিবেশ মুখরিত হয়ে উঠেছে ঢাক, কাঁসা, শঙ্খ ধ্বনি আর উলু ধ্বনিতে। এই দৃশ্য বসিরহাটের টাকিতে।
বসিরহাটের টাকিতে ইছামতীর তীরে উপচে পড়ছে মানুষের ভিড়। দশমীতে এই দৃশ্য একেবারেই নতুন নয়। দুই দেশের শতাব্দী প্রাচীন রীতি অনুযায়ী, দশমীতে এই নদীতে হয় প্রতিমা বিসর্জন। প্রথমে টাকি পুবের বাড়ির প্রতিমা ইছামতিতে বিসর্জন হওয়ার পর এলাকার অন্যান্য বাড়ি এবং ক্লাব গুলির প্রতিমা বিসর্জন হয়। দশমীর সকাল হতেই সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠে টাকি পূবের বাড়ির মহিলারা। তারপর প্রায় ২৪ জন বেহারার কাঁধে চড়ে প্রতিমা যায় ইছামতীর তীরে। পুবের বাড়ির পর একে একে চলছে অন্যান্য বাড়ি এবং ক্লাবগুলির প্রতিমা নিরঞ্জন।
যে কোনো রকম দুর্ঘটনা কিংবা ঝামেলা এড়াতে ওই এলাকা পুরো নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে দেওয়া হয়েছে। দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যাত্রীবাহী নৌকা ইছামতীর বক্ষে নামতে পারে। তবে নিজ নিজ দেশের জলসীমায় নামতে হবে। তাই ইছামতীর বক্ষে যন্ত্র চালিত নৌকার সাহায্যে দড়ি দিয়ে একটি কাল্পনিক সীমা টেনে দেওয়া হয়েছে। এই কাল্পনিক সীমারেখার দুই দিকে হবে দুই দেশের প্রতিমা নিরঞ্জন।
দশমীতে যাতে কোন সমস্যা না হয়, সেজন্য ইতিমধ্যেই বিএসএফ এবং বিজিবির মধ্যে বৈঠক হয়েছে। এছাড়াও এই দিন তত্পর হয়ে কাজ করছি টাকি পুরসভা এবং বসিরহাট পুলিশের একটি দল। টহল দিচ্ছে রাজ্য পুলিশের বিশেষ বাহিনী। পাশাপশি রয়েছে মেডিক্যাল টিম।
দশমীতে ইছামতীর তীরে এ যেন এক অন্য আবেগ। ভৌগোলিক বিভাজন ভুলে গিয়ে দুই দেশ একই নদীর পাড়ে প্রতিমা নিরঞ্জনে ব্যস্ত। স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ নদীর পাড়ে ভিড় জমাচ্ছেন। দুর্গোত্সব দুই দেশের বাঙালিকে বেঁধে রেখেছে এক সুতোতে।
#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image